শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও!

শনিবার বনানীতে বেসরকারি দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা আমাদের অনেক প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। দেশের অর্ধশতাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও এগুলোর শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস সবসময়ই প্রশংসা কুড়িয়েছে।


বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সাংঘর্ষিক সম্পর্কের কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়ই অশান্ত হয়ে উঠলেও অপেক্ষাকৃত শান্ত থেকেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এখন দেখা যাচ্ছে, নেতিবাচক সংস্কৃতিতে সেখানকার শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে নেই। এতদিন মনে করা হতো, ছাত্ররাজনীতিই বোধহয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের নিয়ামক। কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবার এবং এর আগে আরও কয়েকবারের সংঘর্ষ প্রমাণ করছে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ কেবল রাজনীতি করা না-করার ওপর নির্ভর করে না। বরং এখন সেই সমালোচনার পালে হাওয়া লাগবে যে, প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক তৎপরতা না থাকায়, সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধারণা অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে। শনিবারের সংঘর্ষের ঘটনার পর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখবে আশা করা যায়। ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি যাতে কেবল কারা সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, কার কতখানি দায়, সেখানেই সীমাবদ্ধ না থাকে। এর শিকড় সন্ধান করতেই হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এসব ব্যবস্থার ডামাডোলে যাতে সংঘর্ষের ফৌজদারি অপরাধগুলো ছাড় না পায় সেদিকে পুলিশ ও প্রশাসনকে নজর দিতে বলব আমরা। ক্যাম্পাসের সংঘর্ষের জের ধরে যেভাবে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে, তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষার্থীদের 'তুচ্ছ' ঘটনা আশপাশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, দফতর, পথচারী ও যাত্রীদের জন্য বিরাট বিড়ম্বনা হয়ে ওঠার পেছনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভৌত অবস্থানও বহুলাংশে দায়ী। সহযোগী একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, বনানীর ওই এলাকায় আধা কিলোমিটারের মধ্যে ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। শনিবারের অঘটনের পুনরাবৃত্তি এড়াতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের বিকল্প নেই। গত কয়েক বছরে মাত্র ১১টি বিশ্ববিদ্যালয় এমন যোগ্যতা অর্জন করতে পেরেছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না সবগুলো নিজস্ব ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম না চালাবে, সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঝুঁকি থেকেই যাবে।

No comments

Powered by Blogger.