আশরাফুলের সেঞ্চুরি, রংপুরের প্রথম জয়

রানের জন্য হন্যে হয়ে ওঠা মোহাম্মদ আশরাফুল আজ সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে নামছেন ১১৬ রানের আত্মবিশ্বাস নিয়ে। জাতীয় লিগের পঞ্চম ম্যাচে এসে এ তারকার সেঞ্চুরির দিনে গতকাল ইতিহাস গড়েছে রংপুর। নবাগতদের প্রথম জয় তো তাদের রেকর্ড হয়েই থাকবে! জাতীয় লিগে রংপুরের প্রথম জয়টা খুলনাকে ৫ উইকেটে হারিয়ে। আজ অভাবিত কিছু না ঘটলে নিষ্পত্তি হয়ে যাবে জাতীয় লিগের এ পর্বের বাকি দুটি ম্যাচও, কারণ রাজশাহী


এবং সিলেট ম্যাচের ভাগ্য ঝুলে আছে ৫ উইকেট কিংবা ৫৬ রানের মাঝে। প্রতিপক্ষের ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জের পেছনে ছুটতে নামা ঢাকা আজ ২০৮ রান করে ফেলবে, নাকি এর আগেই ম্যাচের শেষ ৮ উইকেট তুলে নিয়ে জয়োৎসব করবে স্বাগতিক বরিশাল, এটাই দেখার বিষয়।
মিডল অর্ডারে রান পাচ্ছিলেন না। তাই ঢাকা মেট্রোর অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়ে ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন ঘটিয়েও চট্টগ্রামের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ব্যর্থ হন আশরাফুল। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে চেনারূপে জাতীয় দলের সাবেক এ অধিনায়ক। ২০০ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ৩ ছক্কায় এবারের আসরে করা প্রথম সেঞ্চুরিকে আরো টেনে নিতে আজ আবারও নামছেন আশরাফুল। তাতে এরই মধ্যে চট্টগ্রামের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ৩৬৪ রানের বোঝা আরো 'ভারী' করার সুযোগও পাচ্ছে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৭৫ রান তুলে ফেলা ঢাকা মেট্রো। এর আগে ৯ উইকেটে ৩০৪ রানে 'ঘোষণা' করা চট্টগ্রামের প্রথম ইনিংসের আলোকিত নৈপুণ্য আরাফাত সানির। মেট্রোর এ বাঁহাতি স্পিনার ৫ উইকেট নিয়েছেন ৭৬ রান খরচে।
এদিকে যশোর স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনে চা-বিরতির আগেই ম্যাচ জিতে নেয় রংপুর। জয়ের জন্য ২২৩ রানের লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে নেমে দ্বিতীয় দিনে বিনা উইকেটে ১৩ রান করার পর কাল বাকি রান তুলে ফেলে ৫৭ ওভারে। রবিউল ইসলাম এবং অধিনায়ক তারিক আহমেদের ফিফটিতে সহজ হয়ে পড়া কাজটা শেষ করেন খুলনার দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া অলরাউন্ডার মাহমুদুল হাসান (৩২*)। অন্যদিকে ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েও বিজিত দলে মুরাদ খান (৭+৪)। সান্ত্বনা হিসেবে অবশ্য জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ভরাডুবির পর দ্বিতীয় দফায় শাকের আহমেদ এবং তাপস বৈশ্যর ফিফটিতে চড়ে ২৯৮ রান তুলেও হারের আশঙ্কা থেকে মুক্তি মেলেনি সিলেটের। প্রথম ইনিংসে ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ 'লিড' সিলেটের এ ঘুরে দাঁড়ানো সত্ত্বেও রাজশাহীর সামনে জয়ের টার্গেট করে দেয় ২২৪ রানের। মাত্র ৫৭ রানে ৪ উইকেট খুইয়ে ফেললেও হামিদুল ইসলাম এবং অধিনায়ক আনিসুর রহমানের দৃঢ়তায় ৫ উইকেটে ১৬৮ রান করা রাজশাহীর দিকেই এখন ম্যাচের পাল্লা ঝুঁকে। ফিফটি করে অধিনায়ক আনিসুর রহমান চলে গেলে জয়ের জন্য দরকার বাকি ৫৫ রান তোলার আস্থা আছে হামিদুল ইসলাম এবং জুবায়ের আহমেদের ব্যাটে।
বরিশালের ম্যাচটি যেন পুরোপুরি বোলারদের। শুধু যে উইকেটই নিচ্ছেন তা নয়, রান করার দায়িত্বও যেন তাঁদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন ব্যাটসম্যানরা! যেমন ঢাকার প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বেশি অবদান বাঁহাতি স্পিনার মোশারফ হোসেন রুবেলের। তেমনি প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে পড়া বরিশাল যে এখন জয়ের স্বপ্ন দেখতে পারছে, সেটিও সৈয়দ রাসেলের ব্যাটিংয়ে। মাত্র ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন মূলত বাঁহাতি এ পেসার। তবে দ্বিতীয় দফায় ২৯৮ রান করে ঢাকা বিভাগকে ২৬৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে বরিশাল। দিনের শেষভাগে দুই ওপেনারকে হারিয়ে সে চ্যালেঞ্জকে আরো উপভোগ্য করে তুলেছে ঢাকা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর-খুলনা : খুলনা ১৩৯ ও ২য় ইনিংস ৬৭.৫ ওভারে ২১৪/১০ (মাহমুদুল ৫/৭৫)। রংপুর ১৩১ ও ২য় ইনিংস ৫৯.৩ ওভারে ২২৩/৫ (রবিউল ৬১, তারিক ৬৫, মাহমুদুল ৩২, মুরাদ ৪/১০০)। ফল : রংপুর ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মুরাদ খান।
ঢাকা মেট্রো-চট্টগ্রাম : ঢাকা মেট্রো ৩৯৩ ও ২য় ইনিংস ৬৮ ওভারে ২৭৫/৪ (আশরাফুল ব্যাটিং ১১৬, শরিফুল্লাহ ব্যাটিং ৪৬)। চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস ৮১.১ ওভারে ৩০৪/৯ ডিক্লে. (নাজিমউদ্দিন ৫২, ইয়াসিন ৫১, আরাফাত সানি ৫/৭৬)।
রাজশাহী-সিলেট : সিলেট ১০০/৯ ডিক্লে. ও ২য় ইনিংস ১২৩ ওভারে ২৯৮/১০ (শাকের ৬২, তাপস বৈশ্য ৫৯, মুক্তার ৪/১১৪)। রাজশাহী ১৭৫ ও ২য় ইনিংস ৪৫ ওভারে ১৬৮/৫ (হামিদুল ব্যাটিং ৪০, জুবায়ের ব্যাটিং ১২, শাকের ২/২৬)।

No comments

Powered by Blogger.