দীর্ঘশ্বাসে ভারী যেখানে বাতাস

বেদনাসিক্ত দীর্ঘশ্বাসে ভারী এখন জাপানের বাতাস। কয়েক দিন আগেও যারা পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিজ নিজ বাড়িতে সুখশান্তিতে বাস করছিল, এখন তাদের অনেকের নাম-নিশানাও নেই। সর্বনাশা সুনামিতে ভেসে গেছে কারও বাবা, কারও মা, কারও বা পরিবারের সবাই। যারা বেঁচে আছে তাদের চোখ থেকে মৃত্যুর ছায়া এখনো কাটেনি। খাবার, পানি ও ওষুধের জন্য কাতরাচ্ছে তারা।
উল্টে থাকা ফ্রিজ খুলে কোনোমতে হয়তো বের করা গেছে কিছু ‘ফ্রোজেন নুডুলস’। তাও গরম করার ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। যারা আহত হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে, তাদের অবস্থা আরও ভয়াবহ।
রেডক্রসের হাসপাতালে এক চিলতে জায়গাও ফাঁকা নেই। কাঁদায় মাখামাখি ওষুধের প্যাকেট। হাতে নগদ টাকাকড়ি থাকলেও মিলছে না ওষুধ কিংবা খাবার পানি। বুকের ওপর চেপে থাকা স্বজন হারানোর শোক সরিয়ে দিতে প্রাণভরে যে একটু কাঁদবে, অনেকের সেই সুযোগটুকুও জুটছে না।
নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে আসা ইয়ুমি তাকানোর বাড়ি সেন্দাই প্রদেশের আগাহারা শহরে। তাকানো বললেন, ‘ভূমিকম্পে বাড়িটা এমনভাবে ঝাঁকাচ্ছিল যে, ভেবেছিলাম বাড়িটা ভেঙেই পড়বে। ঝাঁকানো থামতেই আমি প্রতিবেশীকে নিয়ে লাফিয়ে গাড়িতে উঠলাম। সুনামি হতে পারে—এ আশঙ্কায় ১৫ মিনিটের মধ্যে আমরা শহর থেকে বেরিয়ে এলাম। যারা সেখান থেকে আসতে দেরি করেছে, প্রায় সবাই ভেসে গেছে।

No comments

Powered by Blogger.