আলোচনায় বসতে রাজি বাগবো

আইভরি কোস্টে বিতর্কিত নির্বাচনের পর উদ্ভূত রাজনৈতিক সংকট ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লঅন্ত বাগবো। আফ্রিকার নেতারা গত মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী বলে ঘোষিত আলাসেন ওয়েতাহার সদর দপ্তরে গত মঙ্গলবার খুব সকালে অভিযান চালিয়েছেন বাগবোর সমর্থক সেনারা। এতে একজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছে। আটক করা হয়েছে ১৩০ জনকে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংস্থা ইসিওডব্লিউএএসের চেয়ারম্যান জেমস ভিক্টর বেহো জানান, আলাসান ওয়েতাহার অস্থায়ী কার্যালয়ের চার পাশ থেকে শিগগিরই অবরোধ তুলে নিতে রাজি হয়েছেন বাগবো। তবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত এখনো দেননি বাগবো।
নাইজেরিয়ার আবুজায় ইসিওডব্লিউএএসের সদস্যদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকের পর বেহো বলেন, ‘সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন বাগবো। একই সঙ্গে ওয়েতাহার অস্থায়ী কার্যালয় হোটেল দ্য গলফের চার পাশ থেকে অবরোধ দ্রুত তুলে নেওয়ার অঙ্গীকারও করেছেন।’
ইসিওডব্লিউএএসের চেয়ারম্যান জানান, আইভরি কোস্টের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ও জাতিসংঘ স্বীকৃত নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিলে বাগবোর সম্মানজনক অপসারণে ওয়েতাহা রাজি হতে পারেন বলে আভাস দিয়েছেন।
ইসিওডব্লিউএএসের পক্ষ থেকে সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট আর্নেস্ট করোমা, বেনিনের প্রেসিডেন্ট বোনি ইউয়েয়ি, কেপ ভার্দের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো পিরেজ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের (এইউ) প্রতিনিধি হিসেবে কেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাইলা ওদিঙ্গা গত সোমবার আইভরি কোস্টে যান। সেখানে তাঁরা প্রেসিডেন্ট বাগবো ও ওয়েতাহার সঙ্গে বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে ফিরে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা নিজ নিজ সংস্থার প্রধানকে বৈঠকের ফলাফল অবহিত করেন।
কেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওদিঙ্গা বলেন, ক্ষমতা ভাগাভাগির কোনো সুযোগ নেই, সরে দাঁড়ানোর জন্যই বাগবোকে আলোচনায় আসতে হবে। একই সঙ্গে তিনি জানান, কোনো কিছুতে কাজ না হলে সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে বাগবোর সামরিক অভিযানের সম্ভাবনাও নাকচ করা যায় না।
মঙ্গলবার সকালে আইভরি কোস্ট ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিসিআই) সদর দপ্তরে সেনাবাহিনীর অভিযানে একজন নিহত হয়। সেখানে গোপনে অস্ত্র মজুদ করা হয়েছে—এই অভিযোগে অভিযান চালান বাগবোর সমর্থক সেনারা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওয়েতাহাকে সমর্থন দেওয়া আরএইচডিপি জোটের শরিক পিডিসিআই।
গত ২৮ নভেম্বরের নির্বাচনের পর বাগবো ও ওয়েতাহা দুজনই আলাদাভাবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন। এরপর সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। আবিদজানের একটি হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন ওয়েতাহা। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর একটি ছোট দল তাঁর নিরাপত্তা দিচ্ছে। আফ্রিকান ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ওয়েতাহাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার জন্য বাগবোকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.