ফ্রান্সে পেনশন সংস্কার বিল রদের দাবিতে ধর্মঘটিদের সমাবেশ

সদ্য পাস হওয়া পেনশন সংস্কার বিল রদের দাবিতে ফ্রান্সে ধর্মঘট পালনকারী কয়েক হাজার শ্রমিক-কর্মচারী গতকাল বৃহস্পতিবার সমাবেশ করেছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ২৭০টি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া আন্দোলনকারী কর্মী ও শিক্ষার্থীরা গতকাল নবমবারের মতো এক দিনের গণবিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন।
প্রেসিডেন্ট সারকোজি সরকারের নেওয়া পেনশন সংস্কার কার্যক্রমে সরকারি কর্মীদের অবসর নেওয়ার বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬২ বছর এবং পূর্ণ অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার বয়সসীমা ৬৫ থেকে বাড়িয়ে ৬৭ বছর করা হয়েছে। গত বুধবার সে দেশের পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত বিলটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে দুই সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ, সমাবেশ, ধর্মঘটসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে আসছে ফ্রান্সের বিভিন্ন শ্রমিক সংঘ। তাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও ব্যাপক সমর্থন জানিয়েছেন।
সাম্প্রতিক বেশির ভাগ বিক্ষোভ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে। তবে বিভিন্ন শহরে তরুণ শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন অংশের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। কর্তৃপক্ষ খুবই সতর্ক রয়েছে।
গতকাল দিনের শুরুতে ফ্রান্সের অর্থ ও অর্থনীতি মন্ত্রণালয়ের কার্যালয়ে এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশে ধর্মঘটি কর্মীদের জড়ো হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মূল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয় রাজধানী প্যারিসে। গতকাল দুপুরে ওই সমাবেশ শুরু হয়। ধর্মঘটের কারণে প্যারিসের ওরলি বিমানবন্দরের অর্ধেক এবং দ্য গল বিমানবন্দরের এক-তৃতীয়াংশ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। রেল পরিবহন সেবাও বিঘ্নিত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের হিসাবে ধর্মঘটি কর্মীদের সংখ্যা আগের তুলনায় কমেছে।
ফরাসি পত্রিকা লে প্যারিঁতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক জনমত জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, শ্রমিক-কর্মচারীদের এই ধর্মঘট-বিক্ষোভ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে ৬৫ শতাংশ ফরাসি। কিন্তু যেহেতু বিলটি পার্লামেন্টে অনুমোদন পেয়ে গেছে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অর্ধবার্ষিক ছুটি চলছে, তাই গণবিক্ষোভ কর্মসূচিতে আগের দিনগুলোর মতো গণজমায়েতের আশা করছেন না বিভিন্ন শ্রমিক সংঘের নেতারা। শ্রমিক সংঘ ফোর্স ওভরিয়েরের নেতা জ্যঁ-ক্লদ মেইলি বলেন, ‘আমরা জানি, কিছুটা ক্লান্তি এসে গেছে এবং বিদ্যালয়গুলোতেও ছুটি চলছে। আমরা কোনো রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করছি না। তবে আমরা সরকারকে চাপে রাখতে চাইছি।’ আগামী ৬ নভেম্বরও বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা রয়েছে।
এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্টের সহযোগীরা জানিয়েছেন, ১৫ নভেম্বর আইনে স্বাক্ষর করতে পারেন সারকোজি। এই আইন পাসের কারণে সারকোজির জনপ্রিয়তাও মাত্র ২৯ শতাংশে নেমে এসেছে বলে বিভিন্ন জরিপসূত্রে জানা গেছে। ক্ষমতায় আসার পর সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে তাঁর জনপ্রিয়তা। এএফপি।
বিশেষ আয়োজন ‘ফ্রান্স টালমাটাল’ পড়ুন চলতি বিশ্বে

No comments

Powered by Blogger.