স্বপ্ন ধারণ করার যন্ত্র তৈরি করা সম্ভব

গবেষকেরা দাবি করেছেন, তাঁরা এমন একটি ব্যবস্থা উদ্ভাবন করেছেন, যার মাধ্যমে মস্তিষ্কের উচ্চপর্যায়ের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ধারণ করা সম্ভব। গত বুধবার বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার-এ গবেষকদের এই উদ্ভাবনের কথা প্রকাশিত হয়। এই গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী গবেষক মোরান কারফ জানিয়েছেন, তিনি যান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্বপ্ন ধারণ এবং এর ব্যাখ্যা করার পরিকল্পনা করছেন।
অতীতকাল থেকেই স্বপ্ন ও এর ব্যাখ্যা নিয়ে মানুষের নানা ধরনের কল্পনা বা ধারণা প্রচলিত রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাচীন মিসরে স্বপ্নকে ঈশ্বরের বাণী মনে করা হতো। সাম্প্রতিক সময়ে মনোবিজ্ঞানীরা মানুষের মনের অবচেতন অংশ সম্পর্কে জানার ক্ষেত্রে স্বপ্ন ব্যাখ্যা করাকে অন্যতম পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করেন। এ ক্ষেত্রে স্বপ্নের বর্ণনা জানার জন্য তাঁদের একমাত্র পথ হচ্ছে যিনি স্বপ্ন দেখেছেন তার কাছ থেকে যতটুকু সম্ভব তথ্য বের করে আনা।
মোরান কারফের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো, এমন একটি ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা, যার মাধ্যমে মনোবিজ্ঞানীরা স্বপ্ন দেখা ব্যক্তির মস্তিষ্কের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া যান্ত্রিকভাবে ধারণ করার মাধ্যমে তার স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পারবেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের স্বপ্ন বিশ্লেষণ করতে আগ্রহী। মানুষ কেন স্বপ্ন দেখে, তার কোনো স্পষ্ট উত্তর নেই। তবে একটি প্রশ্নের উত্তর জানাতে চাই আমরা, সেটি হচ্ছে আমরা কখন স্বপ্নটি তৈরি করি?’
প্রাথমিক গবেষণার ফলের ভিত্তিতে গবেষক মোরান কারফ এই স্বপ্নধারক যন্ত্র উদ্ভাবনের সাহস করছেন। গবেষণায় তিনি দেখতে পেয়েছেন, ব্যক্তির মস্তিষ্কের কোষের বা নিউরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সুনির্দিষ্ট বস্তু বা ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যখন কোনো ব্যক্তি মেরিলিন মনরো সম্পর্কে ভাবেন, তখন একটি নির্দিষ্ট নিউরন সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই গবেষণায় স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের ওপর গবেষণা করে কারফ ও তাঁর সহকর্মীরা অনেকগুলো ধারণা ও বস্তুর ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট সংবেদনশীল নিউরন শনাক্ত করতে পেরেছেন।
মোরান কারফ অবশ্য স্বীকার করেছেন, তাঁদের এই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণকে একটি যন্ত্রের মাধ্যমে রূপান্তর করে স্বপ্ন ধারণ করার একটি ব্যবস্থা উদ্ভাবন করার জন্য দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.