পাঞ্জাব-সিন্ধুতেও বন্যার ছোবল

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বন্যা এবার মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ধাবিত হচ্ছে। পাঞ্জাব প্রদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন পানির নিচে। বন্যায় নতুন করে এখানে ৪৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সিন্ধু প্রদেশে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কায় নদী-তীরবর্তী পাঁচ হাজার লোককে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আকস্মিক বন্যায় সংরক্ষিত খাদ্যের ৮০ শতাংশ নষ্ট হওয়ায় এবং জমির উঠতি ফসল তলিয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানে বড় ধরনের খাদ্যসংকটের আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে আরও সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বন্যার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছে জাতিসংঘ।
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দেড় হাজার লোকের প্রাণহানি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বন্যা শুরু হয়েছে দেশটির মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে। পাঞ্জাবের কোট আদ্দু এলাকায় ভারী বর্ষণের কারণে বন্যার পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।
সিন্ধু প্রদেশেও বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা করছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। উর্বর ভূমিসমৃদ্ধ এ অঞ্চলে আগামী শনি ও রোববার নাগাদ এ বন্যা শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। বন্যার আশঙ্কায় ইতিমধ্যে নিচু ও নদী-তীরবর্তী এলাকার পাঁচ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩২ লাখ পাকিস্তানিকে কীভাবে সাহায্য করা যায়, তা খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন গতকাল একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল পাকিস্তানে পাঠিয়েছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, পাকিস্তানের বন্যায় যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত সাড়া দেবে। গত বুধবার পররাষ্ট্র দফতরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, পাকিস্তানের লাখ লাখ লোকের এখন জরুরি ভিত্তিতে সাহায্য দরকার। তাঁরা সামনের দিনগুলোতে পাকিস্তানিদের সাহায্য করে যাবেন। পাকিস্তানের এ দুর্দিনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান হিলারি।
এদিকে পাকিস্তানের দুর্গত এলাকায় খাদ্যের জন্য রীতিমতো হাহাকার চলছে। দেখা দিয়েছে ওষুধের সংকট।
করাচিতে সহিংসতায় নিহত ১৭: পাকিস্তানের বাণিজ্যিক রাজধানী ও সবচেয়ে বড় শহর করাচিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সহিংসতায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত তিন দিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৮০ জনে। এতে বহু লোক আহত হয়েছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গত সোমবার স্থানীয় এমকিউএম দলের নেতা রেজা হায়দার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে সহিংসতা শুরু হয়। সিন্ধু রাজ্যসভার সদস্য রেজা হায়দার সিটি সেন্টারের কাছে একটি মসজিদে অজু করার সময় চার বন্দুকধারী গুলি চালালে তিনি নিহত হন। এতে তাঁর দেহরক্ষীও নিহত হন

No comments

Powered by Blogger.