ম্যারাডোনার পাশে স্পষ্টবাদী তেভেজ

লিওনেল মেসি, সার্জিও আগুয়েরো কিংবা অধিনায়ক হাভিয়ের মাচেরানো বলছেন, ডিয়েগো ম্যারাডোনা থাকলে ভালো হতো। কিন্তু ফেডারেশনের সঙ্গে ম্যারাডোনার মতানৈক্য নিয়ে সবাই কূটনৈতিক। কে আর ফেডারেশনকে চটাতে চায়!
একজন আছেন—কার্লোস তেভেজ। হ্যাঁ, তেভেজ কোনো কূটনীতির ধার ধারেননি। একেবারে ম্যারাডোনার ভঙ্গিতেই বলেছেন, প্রতারণা করা হয়েছে তাঁদের কোচের সঙ্গে। ‘প্রতারণা’ শব্দটা উল্লেখ না করলেও সোজাসাপ্টা বলেছেন, আর্জেন্টাইন ফুটবল ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট হুলিও গ্রন্দোনা ম্যারাডোনার সঙ্গে মিথ্যাচার করেছেন। কথাটা শুধু বলার জন্য বলা নয়, তেভেজ বলেছেন, সাক্ষাৎ পাওয়ামাত্র গ্রন্দোনার মুখের ওপর এই কথা বলে দেবেন।
বিশ্বকাপে জার্মানির বিপক্ষে হারের পর গ্রন্দোনা বলেছিলেন, ম্যারাডোনার ভবিষ্যৎ তাঁর হাতে। কারণ আর্জেন্টিনায় একমাত্র ম্যারাডোনার ‘যা ইচ্ছা তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে।’ ‘এল অ্যাপাচি’ নামের স্পষ্টবক্তা এই ফরোয়ার্ড বলছেন, এই গ্রন্দোনাই জার্মানি ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে ঢুকে বলেছিলেন, ম্যারাডোনা কোচ হিসেবে যেন থেকে যান।
গ্রন্দোনার মতো অমিতক্ষমতাধর সংগঠকের বিরুদ্ধে কথা না রাখার অভিযোগ এনেও নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটুও উদ্বিগ্ন নন তেভেজ, ‘মিস্টার গ্রন্দোনাই বলেছিলেন, ম্যারাডোনার যা ইচ্ছে করতে পারেন। ড্রেসিংরুমে ঢুকে এই ডন হুলিওই ডিয়েগোকে বলেছিলেন, তিনি যেন কোচ হিসেবে থেকে যান। আমি ওনার (গ্রন্দোনার) সাক্ষাৎ পেলে মুখের ওপর এসব কথা বলতাম। দেখুন, এএফএ কথা রাখেনি। আমি যা মনে করি, তাই বলছি। পরের ম্যাচেই আমি থাকব কি না, তা নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না।’
এসব বলায় তেভেজের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটা সময় বলবে। তবে সম্ভবত, গত কালকের ম্যাচে মাঠে নামেননি তিনি। এই লেখা পড়ার সময় জেনে যাওয়ার কথা গতকাল ডাবলিনে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ম্যাচের ফল। পত্রিকার খবর ছিল, গলাব্যথার কথা বলে এই ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন ‘কার্তিলোজ’।
গতকালকের ম্যাচে খেলার সম্ভাবনা কম ছিল সার্জিও আগুয়েরোরও। তবে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ সার্জিও বাতিস্তার সৌভাগ্য, লিওনেল মেসিকে তিনি পেয়েছেন। বার্সেলোনার হয়ে এশিয়া সফর শেষ করেই ফিফার বর্তমান বর্ষসেরা খেলোয়াড় দ্রুত স্পেন থেকে আয়ারল্যান্ডে পৌঁছে গেছেন।
ম্যাচে কী করেছেন, সেটা পরের কথা। তবে মেসিকে দেখেই খুব খুশি বাতিস্তা, ‘আমি খুব খুশি, ও ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে এখানে পৌঁছেছে। বেইজিং থেকে বার্সেলোনা হয়ে পুরো পৃথিবী অর্ধেক চক্কর দিয়ে এখানে এসেছে, কিন্তু মুখে দুর্দান্ত একটা হাসি বুলিয়ে রেখেছে। এরপর ওর পক্ষেই শুধু বলা সম্ভব, ‘‘এ আর এমন কী!’’ এতেও লিওনেলের চরিত্রটা বোঝা যায়।’
লিওনেল নিয়ে বাতিস্তা যতই প্রশংসা করুন, ম্যারাডোনা প্রসঙ্গে টুঁ শব্দটি করেননি। ’৮৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সতীর্থ ম্যারাডোনার ছেড়ে যাওয়া চেয়ারে বসে আর পেছন ফিরতে চান না বাতিস্তা, ‘আমি পেছনে ফিরতে চাই না। আমার দৃষ্টি সামনে। আমরা একেবারেই নতুন একটা যুগ শুরু করতে যাচ্ছি। এখন ছেলেদের ওপর নির্ভর করে ওরা আমার জন্য কাজটা কতটা সহজ করে দেবে।’
কিন্তু ‘ছেলেরা’ যে তাদের ‘পুরোনো অভিভাবক’কে ভুলতেই পারছে না!

No comments

Powered by Blogger.