বাঘের গ্রামে ঢোকা ঠেকানোর এখনই সময় by খসরু চৌধুরী

দীর্ঘদিন সুন্দরবনের বাঘের পিছু লেগে একটি বিষয় লক্ষ করেছি, গ্রীষ্মের এই প্রচণ্ড দাবদাহের কালে সুন্দরবনের বাঘ জঙ্গল ছেড়ে গ্রামে ঢুকে গরু, মহিষ, কুকুর মারে; নিজেরাও গ্রামবাসীর পিটুনিতে মারা যায়।
সুন্দরবন, বিশেষ করে চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মণি থেকে নাংলী পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকা একেবারে বনসংলগ্ন। এলাকার খালগুলো শুকনো। গ্রামবাসী গরু-মহিষ জঙ্গলে ঢোকায়। কিছু শূকর ছাড়া বাঘের স্বাভাবিক খাদ্য নেই বললেই চলে। জঙ্গলের ভেতরে বড় গাছ কম, কিন্তু জঙ্গল বলা, কেয়াকাঁটা, আসামিলতা, হরগেজা, লতাসুন্দরী, কুটুমলতায় আকীর্ণ। বাতাসহীন তীব্র দাবদাহে তলার জঙ্গলের আবহাওয়া অসহনীয় গরম।
এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে স্থানিক বাঘ বিকেলের দিকে একটু ঠান্ডা হাওয়ার আশায় জঙ্গলের সীমানার ফাঁকা এলাকায় চলে আসে। এই বাঘ গ্রামবাসী, বিশেষ করে গরুর রাখালদের চোখে প্রায়ই পড়ে। বাঘ জঙ্গলের সীমানায় হাঁটাচলা করার সময় লোকালয়ের গরু-মহিষের খাটাল দেখে খাদ্যের খোঁজে হামলা চালায়।
এ অবস্থায় করণীয় হচ্ছে, বাঘ বনের ধারে দিনের বেলা দেখা গেলেই গ্রামবাসীর উচিত বন বিভাগের কর্মীদের সহায়তায় ঢোল, পটকা ব্যবহার করে হইহুল্লোড় করে বাঘকে গভীর জঙ্গলে ঢুকিয়ে দেওয়া। গ্রামের তরুণদের দিয়ে পাহারার ব্যবস্থা করা। গরু-মহিষের খাটালগুলো শক্ত করে তৈরি করা। বাঘ একবার গ্রামে ঢুকে গরু-মহিষ মারতে পারলে তাকে ঠেকানো প্রায় অসম্ভব। এ অবস্থায় পৌঁছানোর আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তাতে মানুষ ও বাঘ—দুয়েরই উপকার হবে
খসরু চৌধুরী: বন বিশেষজ্ঞ।

No comments

Powered by Blogger.