পাকিস্তানের ভয়ের কিছু নেই ভারতের কাছ থেকে -সাক্ষাৎকারে মনমোহন সিং

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে যত সমস্যা রয়েছে, তা নিরসনে ভারত প্রস্তুত। তবে এ ক্ষেত্রে একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন তিনি। শর্তটি হলো, ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না।
রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মনমোহন সিং এসব কথা বলেন।
সাক্ষাত্কারে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাচ্ছি। ওই সব প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিরা মুম্বাই হামলার মতো জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করছে।’
মনমোহন সিং বলেন, ‘ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান সব সমস্যার সমাধানে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে আমাদের একমাত্র শর্ত হলো, ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য নিজেদের ভূমি ব্যবহার করতে দেবে না পাকিস্তান।’
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তান যদি সত্যিকার অর্থে এই অঙ্গীকারের প্রতি সম্মান দেখায়, তাহলে আমাদের মধ্যকার বিরাজমান সব সমস্যার সমাধানের জন্য আমরা আলোচনায় ফিরে যাব।’
মনমোহন সিং বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে ভারত পাকিস্তানের সমর্থনপুষ্ট সন্ত্রাসবাদের শিকার। তিনি আরও বলেন, ভারত চায় পাকিস্তানকে এই পথ থেকে বিরত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র তার প্রভাব কাজে লাগাবে।
মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করার জন্য পাকিস্তানের নেওয়া উদ্যোগ সম্পর্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ব্যাপারে পাকিস্তান যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি।
পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে মনমোহন সিং বলেন, পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি এলাকায় সন্ত্রাসীদের প্রভাব বেড়েছে, যা ভারতের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ।
আফগানিস্তান সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে গরমিলের ব্যাপারটি উল্লেখ করে মনমোহন সিং বলেন, পাকিস্তান আসলে আফগানিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। সেখানে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাকিস্তান সর্বাত্মক সমর্থন দিচ্ছে না।
মনমোহন বলেন, আফগানিস্তানে তালেবানের জয় বিশ্বের জন্য ‘ভয়াবহ পরিণতি’ বয়ে আনবে। আল-কায়েদা ও তালেবানকে মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলে অভিহিত করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.