যুক্তরাষ্ট্রে এক বিমানের রহস্যময় অবতরণনিয়ে এখন যা হচ্ছে

যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্ট এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট নির্দিষ্ট নিয়মে অবতরণ না করায় বিমান ছিনতাই চেষ্টার সন্দেহ দানা বেঁধেছে। ঘটনাটির তদন্তে মার্কিন বিমান পরিচালনা কর্তৃপক্ষ এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই মাঠে নেমেছে। তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে, বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা হচ্ছিল অথবা বৈমানিকেরা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলেন।
মার্কিন পরিবহন নিরাপত্তা বোর্ড বলেছে, গত বুধবার বিমানটি ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো থেকে মিনেসোটার মিনিয়াপোলিসে যাচ্ছিল। বিকেলের দিকে বিমানটির সঙ্গে হঠাত্ বেতার-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় ৭৮ মিনিট ধরে এ অবস্থা চলে। পরেও বিমানটি নিয়মমাফিক অবতরণ করেনি। ফলে কর্তৃপক্ষ মহলে বিমানটির দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার অথবা ছিনতাই হওয়ার মতো সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
মিনিয়াপোলিসের এফবিআইয়ের মুখপাত্র বলেছেন, তাঁরা বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন। কিন্তু তিনি এর বেশি কিছু বলতে রাজি হননি। বিমানটির ক্রুরা দাবি করেছেন, তাঁরা আকাশে থাকাকালে বিমান পরিচালনানীতি নিয়ে উত্তপ্ত বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। এ কারণেই বিমানবন্দরের সঙ্গে বেতার-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি তাঁদের খেয়ালে ছিল না।
কর্মকর্তারা জানান, তদন্তের স্বার্থে বিমানটির ককপিট ভয়েস রেকর্ডার ওয়াশিংটনে পাঠানো হয়েছে। মার্কিন বিমান পরিচালনা প্রশাসনের মুখপাত্র টনি মোলিনারি বলেন, ‘এভাবে একটি বেসরকারি বিমানের সঙ্গে বেতার-যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়। বিমানটি আমরা রাডারে দেখেছি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি আমরা।’
মিনিয়াপোলিসের স্টার ট্রিউবিন পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যুদ্ধবিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। পুনরায় যোগাযোগ স্থাপনের আগে বিমানটি ৩৭ হাজার ফুট উঁচুতে ছিল।’
বিমান দুর্ঘটনা তদন্তকারী স াবেক মার্কিন কর্মকর্তা বিল ভস বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে একটি বিশেষউচ্চতায় থাকা অবস্থায় সাধারণত যেকোনো বিমান অবতরণের প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। কিন্তু ওই বিমানটি সে উচ্চতার অনেক নিচে নামার পরও অবতরণের প্রস্তুতি নেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ক্রুরা তাঁদের পক্ষে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তাতে অনেকে সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ক্রুরা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়াতেই এমনটা ঘটেছে। তবে নর্থ ওয়েস্ট এয়ারলাইনসের ত্রুদ্ধ রিচার্ড কোল এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তাঁদের কেউই তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েননি।
তবে আকাশে থাকাকালে এত কাণ্ড যে ঘটেছে, বিমানের কোনো যাত্রীই তা টের পাননি। অবতরণের পর পুলিশ বিমানটিতে উঠে তল্লাশি শুরু করলে যাত্রীরা বিষয়টি জানতে পারেন।

No comments

Powered by Blogger.