চালকের দক্ষতা বৃদ্ধি ও ট্রাফিক-ব্যবস্থার ত্রুটি দূর করতে হবে

দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। গত তিন দিনে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ২১ জনের। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফেনীতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস খাদে পড়ে গেলে ১৪ জন, শুক্রবার কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মাইক্রোবাস-বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে চারজন এবং শনিবার দাউদকান্দিতে বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাই। তিনটি দুর্ঘটনাই ঘটেছে দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে। এর আগেও এই মহাসড়কে অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু দুর্ঘটনা কমাতে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের কোনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আমাদের চোখে পড়েনি।
বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। বুয়েটের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের হিসাবমতে, প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে প্রায় চার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। উদ্বেগজনক এ সংখ্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
চালকদের মধ্যে ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা খুবই বেশি। অনেক চালক দক্ষতা অর্জন করার আগেই ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে নিয়মিত গাড়ি চালাচ্ছেন, কিন্তু তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বললেই চলে। প্রশিক্ষণবিহীন অদক্ষ চালক যেকোনো সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আরও সতর্কতা প্রয়োজন।
সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ট্রাফিক-ব্যবস্থার গলদগুলো দূর করা জরুরি। ট্রাফিক পুলিশদের নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। হাইওয়ে পুলিশ নামমাত্র থাকলেও তাদের তত্পরতা চোখে পড়ে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে হাইওয়ে পুলিশের তত্পরতা ও দক্ষতা বাড়ানো জরুরি। হাইওয়ে পুলিশের মাধ্যমে বিভিন্ন মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো দরকার। আমরা আশা করব, যোগাযোগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করবে।
বাড়তি জনসংখ্যার কারণে ক্রমাগতভাবে সড়কপথের ওপর চাপ বাড়ছে। বাড়ছে দুর্ঘটনা ও যানজট। সড়কপথের চাপ কমাতে রেল যোগাযোগকে শক্তিশালী করার দিকেও সরকারকে মনোযোগী হতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.