শঙ্কা আর উদ্বেগের মধ্যে আজ ভোট দিচ্ছেন আফগানরা

নানা শঙ্কা আর জঙ্গিদের হুমকির মধ্যেই আফগানিস্তানে আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এর আগে ২০০৪ সালে নানা সহিংসতার মধ্যে প্রথমবারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দেশের এবারের পরিস্থিতি আরও খারাপ। নির্বাচনের আগের দিন গতকাল রাজধানী কাবুলের একটি ব্যাংকে জঙ্গি হামলার খবর মিলেছে। ওই হামলায় পুলিশের তিনজন সদস্য নিহত হয়েছেন। পুলিশের পাল্টা হামলায় নিহত হয়েছে তিনজন তালেবান জঙ্গি। এ পরিস্থিতির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানকে বিশ্লেষকেরা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন।
আজ সকাল থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত। একই সঙ্গে দেশের প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচনের জন্যও ভোট নেওয়া হবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা।
এবারের নির্বাচনে নিবন্ধিত ভোটারের সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৭০ লাখ। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা প্রায় সাত হাজার। তবে সহিংসতার আশঙ্কা ও তালেবান হুমকির মুখে ১২ শতাংশের মতো ভোটকেন্দ্র খোলা সম্ভব হবে না বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ।
জাতিসংঘের মহাসচিব গতকাল এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে সব যোগ্য ভোটারকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোটারদের পাশাপাশি সব প্রার্থী ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের তিনি একসঙ্গে কাজ করতে বলেছেন।
স্থানীয় সরকারি সূত্র বার্তা সংস্থাকে জানিয়েছে, রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের দক্ষিণে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। চার ঘণ্টা ধরে ওই গোলাগুলি চলে। ওই সময় তিন পুলিশ ও তিন জঙ্গি নিহত হয়। তালেবানরা এক বিবৃতিতে ব্যাংকে হামলার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
মূল প্রতিদ্বন্দ্বীরা: প্রেসিডেন্ট পদে ব্যালটে নাম থাকছে মোট ৪১ জনের। তাঁদের মধ্যে ১১ জন আগেই রণে ভঙ্গ দিয়েছেন। লড়াইয়ের মাঠে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন পশ্চিমা সমর্থিত বর্তমান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। তবে সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আবদুল্লাহও তাঁর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারেন। এ ছাড়া অপর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে আছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আশরাফ গনি আহমদজাই, স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান বাশারদস্ত, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল জাবার সাবিত, পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের স্পিকার মিরওয়ায়েস ইয়াসিনি, সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব.) শাহনওয়াজ তনাই এবং দুই নারী প্রার্থী ফ্রোজান ফানা ও সাহলা আত্তা।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি ৩৪টি প্রদেশে ৪২০ জন প্রাদেশিক কাউন্সিলরও নির্বাচন করবেন ভোটাররা। প্রাদেশিক কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন হাজার ১৯৬ জন প্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ৩২৮ জন নারী।
নির্বাচন পর্যবেক্ষক: দেশি-বিদেশি মিলিয়ে প্রায় আড়াই লাখ পর্যবেক্ষক এবারের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বারা মনোনীত বিপুলসংখ্যক পর্যবেক্ষকের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ‘ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন ফাউন্ডেশন অব আফগানিস্তান’-এর সভানেত্রী নাদের নাদেরি। জঙ্গি হুমকির কারণে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করা পর্যবেক্ষকদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করছে অনেকে।

No comments

Powered by Blogger.