‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন’ আয়োজনে বেশি বাধা দেন সাবেক দুই মন্ত্রী -জিল্লুর রহমান
জিল্লুর রহমান বলেন, সাবেক সরকারের আমলে তাদের আয়োজন স্থানীয় স্পন্সর ও ব্যবসায়ীদের গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ফোন করে এমন আচরণ করেছেন যে ব্যবসায়ীদের মধ্যে যাদের সঙ্গে জিল্লুর রহমানের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল তারা আর কথা বলতে চাইতেন না, দেখাও করতে চাইতেন না। পরে দ্বিতীয়বারের আয়োজন কোনো অংশীদার পাননি। দুই মন্ত্রীর বাধার কারণে অনেকে চেকে টাকা দিতে চাননি। ভয়ভীতির কারণে রাস্তায় থাকা অবস্থায় নগদ টাকা দিয়েছেন।
প্রথমবার ২০২২ সালের আয়োজনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমকে আয়োজনের খবর প্রকাশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। দেশের ৫-৭টি পত্রিকা ছাড়া কেউ কোনো খবর ছাপেনি। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো দেশীয় অতিথিদের ফোন করে নিষেধ করতো। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন অর রশীদ অনুষ্ঠানস্থলের পাশে দলবল নিয়ে এসে বসে থাকতেন। ২০২২ সালের আয়োজনের জন্য ছয় মাস আগে একটি হোটেলে বুকিং দেয়া হয়। কিন্তু সরকার চায় না বলে তারা আয়োজনের ১৫ দিন আগে বাতিল করে দেয়। সে বছর সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক আধা ঘণ্টা বসে থেকে বক্তব্য না দিয়ে চলে যান। কারণ হাছান মাহমুদ তাকে ফোন করে চলে যেতে বলেন। আরেকজন সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম গেট থেকেই ফিরে যান। দ্বিতীয়বারের আয়োজনে শুধু সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অংশ নেন।
জিল্লুর রহমান বলেন, এ ধরনের আয়োজনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই সরকারের সমর্থন থাকে। তারা সরকারের কাছ থেকে অন্য কোনো সহায়তা চান না। সরকার যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। এ ধরনের আয়োজনের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে কোনো বাধা পাননি জানিয়ে তিনি বলেন, এবার পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকারের সঙ্গে কাজ করার এখন পর্যন্ত অভিজ্ঞতা সুখকর না। তাই সরকারের বাইরে থেকেই সিজিএস কাজ করতে চায়। সরকারের সঙ্গে থেকে কোনো আর্থিক সম্পর্কে সিজিএস জড়াবে না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া তিন দিনব্যাপী এই সংলাপে বিশ্বের ৮০টি দেশের লেখক, গবেষক, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, আমলা, শিক্ষাবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ভূরাজনীতি, অপতথ্য, মানবাধিকারসহ পাঁচটি বিষয়ে সংলাপ হবে। এতে বিভিন্ন দেশের ২০০ জন বক্তা, ৩০০ জন প্রতিনিধি এবং ৮০০ জন জন অতিথি থাকবেন। এই আয়োজনে শুধু নিবন্ধিত অতিথিরাই অংশ নিতে পারবেন। এবারের আলোচনার বিষয়গুলো হচ্ছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও অপতথ্য, জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য, ভূ-রাজনীতি এবং মানবাধিকার। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৭৭টি সেশন চলবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিজিএসের চেয়ারম্যান মুনিরা খান, চিফ অব স্টাফ দিপাঞ্জলি রায় এবং প্রোগ্রাম ডিরেক্টর সুবীর দাস।
No comments