ইমরানের কোনো চুক্তির প্রস্তাবেই রাজি না পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী
গার্ডিয়ানের প্রশ্নের জবাবে ইমরান বলেন, জনগণের স্বার্থেই সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। এখানে তার ব্যক্তিগত কোনো অভিলাষ নেই। পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ন করে এমন কোনো চুক্তি করতে চান না ইমরান খান। জীবনের শেষ দিন পর্যন্তও যদি তাকে কারাবন্দি থাকতে হয় তবুও তিনি নীতির সঙ্গে কোনো ধরনের আপস করবেন না। গার্ডিয়ান বলছে ইমরান খান ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীর সমর্থনেই পাকিস্তানের রাষ্ট্র ক্ষমতায় এসেছিলেন। এরপর ইমরানের রাষ্ট্র পরিচালনার নীতি সন্তুষ্ট করতে পারেনি সামরিক কর্মকর্তাদের। যার জেরেই তাকে ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। ইমরান সরকারের পতন এবং তাকে কারাবন্দি করার পিছনে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জড়িত বলে অভিযোগ করে আসছে তেহরিকে ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) নেতারা। এরপর থেকেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বেশ সরব হয়ে উঠেন ইমরান খান। তাদের বিরুদ্ধে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন তিনি।
বর্তমানে শতাধিক মামলার জেরে কারাবন্দি রয়েছেন ইমরান খান। দিন দিন তার বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সামরিক বাহিনী এবং পাকিস্তানের সরকার। রুজু হচ্ছে নতুন নতুন মামলা। এই পরিস্থিতিতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে আলোচনার এই প্রস্তাবকে ইমরানের নতুন কৌশল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে সামরিক বাহিনী তাতে রাজি নয় বলে একাধিক সূত্র গার্ডিয়ানকে নিশ্চিত করেছে। এ বছরের জুনে ‘শর্তসাপেক্ষে’ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রকাশ্য আলাপের প্রস্তাব দেন ইমরান। তবে এক্ষেত্রে ইমরানের দাবি হচ্ছে সেনাবাহিনীকে ‘স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ’ নির্বাচন দিতে হবে। কেননা তিনি এবং তার দল তেহরিকে ইনসাফ পার্টি (পিটিআই) মনে করে যে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন অগণতান্ত্রিক উপায়ে করা হয়েছিল যেখানে জনগণ তাদের পছন্দ মতো প্রার্থী বাছাইয়ের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে পপুলার ভোটে পিটিআই প্রার্থীরাই জয়ী হয়েছে বলে দাবি তাদের।
তবে সূত্র বলছে ভিন্ন কথা। ইমরানের এই প্রস্তাবের আড়ালে রয়েছে নিজের মুক্তির অভিলাষ। সূত্রের দাবি সামরিক বাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘নিঃশর্ত’ আলোচনার যে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ইমরান খান, তার মূল লক্ষ্য হচ্ছে এর মাধ্যমে তিনি তাদের সঙ্গে নিজের মুক্তির বিষয়ে সমঝোতা করবেন। কিন্তু তাতে সামরিক কোনো কর্মকর্তাই সায় দেয়নি। তারা এ বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে ইমরান খানকে অবশ্যই আদালতে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। সামরিক এক কর্মকর্তা বলেছেন, খান চান সকলেই আইনের শাসন মেনে চলবে কিন্তু তার নিজের বেলায় তিনি সেটা চান না, এমনটি হবে না।
No comments