শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিরাট জয় পেলো অনুরার বামপন্থি জোট

শ্রীলঙ্কার আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছে দেশটির বামপন্থি  জোট। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিশানায়েকের ন্যাশনাল পিপলস পাওয়ার (এনপিপি) জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। পার্লামেন্টের মোট আসনের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটই পেয়েছে অনুরার নেতৃত্বাধীন এই জোট। ২২৫ আসনের মধ্যে ১৫৯ আসনে জয় পেয়েছে এনপিপি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়,  সেপ্টেম্বরে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন অনুরা। কিন্তু তখন পার্লামেন্টে তার নির্বাচনী জোট এনপিপি’র আসন ছিল মাত্র তিনটি। পার্লামেন্টে নিজ জোটের আসন সংখ্যা বাড়াতে তিনি আগাম নির্বাচন দেন। যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলো তার জোট। বিবিসি বলছে, দ্বীপ রাষ্ট্রটির দুর্দশাগ্রস্ত অর্থনীতি এবং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করে সার্বিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া অনুরার জন্য বেশ জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যা তিনি আগাম নির্বাচনের মাধ্যমে নিশ্চিত করলেন। ভোটারদের জীবনযাপনের উচ্চ ব্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করাই এখন অনুরার জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে এনপিপি জোট বেশ ভালো অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে তা আগাম অনুমান করেছিলেন বিশ্লেষকরা। তবে তাদের সংশয় ছিল এনপিপি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কিনা। তবে সে সংশয়ও দূর করলেন অনুরা। বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কায় আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়। পার্লামেন্টের আসন সংখ্যা ২২৫। এর মধ্যে ১৯৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। বাকি ২৯টি জাতীয়ভিত্তিক আসন। এগুলো রাজনৈতিক দলগুলো পাবে ১৯৬ আসনে প্রাপ্ত ভোটের হিস্যা অনুযায়ী। এনপিপি জোটের নেতৃত্বে রয়েছে অনুরা কুমারা দিশানায়েকের জনতা বিমুক্তি পেরামুনা (জেভিপি) পার্টি। বৃহস্পতিবার ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের ৫৫ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কার এই নেতা বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন এই নির্বাচন শ্রীলঙ্কার জন্য গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। জনগণ তাদেরকেই ম্যান্ডেট দেবে বলেও আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

বিরোধীদের জোট নেতা সজিথ প্রেমাদাসাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজিত করেন দিশানায়েকে। উল্লেখ্য, সাবেক প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সীমাহীন দুর্নীতির ফলে চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে দ্বীপরাষ্ট্রটি। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বহুগুণ বেড়ে যায়। প্রতিবাদে ফেটে পড়ে দেশটির জনগণ। যার তোপে ২০২২ সালে দেশ থেকে পালিয়ে যান রাজাপাকসে। এর প্রায় দুই বছর পর সেপ্টেম্বরে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। এতে জয়ী হন বামপন্থি রাজনীতিক অনুরা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। ১৪ই নভেম্বর আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। যাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করলো তার জোট এনপিপি। চীনপন্থি সমাজতান্ত্রিক নেতা হিসেবে পরিচিত অনুরা কুমারা দিশানায়েকে।

mzamin


No comments

Powered by Blogger.