হোয়াটসঅ্যাপ কীভাবে অর্থ উপার্জন করে?

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রিয়জনের খোঁজ নেওয়া অথবা দাপ্তরিক কাজে বার্তা আদান-প্রদানের জন্য আমরা বিভিন্ন ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে থাকি। তার মধ্যে অন্যতম ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, স্ন্যাপচ্যাট, টেলিগ্রাম, সিগন্যাল ইত্যাদি। এসব পরিষেবা অধিকাংশই বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন ব্যবহারকারীরা।

বর্তমানে প্রায় তিন বিলিয়ন মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করছে। কিন্তু বিনামূল্যে গ্রাহকদের পরিষেবা দিয়ে ঠিক কীভাবে অর্থ উপার্জন করে হোয়াটসঅ্যাপ তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের মনেই।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে আসে ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলোর অর্থ উপার্জনের একটি চিত্র। সেখানে বলা হয়, মূলত করপোরেট কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অর্থ উপার্জন করে হোয়াটসঅ্যাপ। কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য বা পরিষেবার প্রচার করতে ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করতে চায়।

হোয়াটসঅ্যাপের প্রিমিয়াম সংস্করণ কিনলে অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকদের সাথে চ্যাট করা যায়। সেটি হতে পারে কোনো কিছু সম্বন্ধে সাধারণ কথোপকথন বা আর্থিক লেনদেন। বিশ্বের অনেক জায়গায় এই ফিচারটি এখনো প্রায় শুরুর দিকে আছে। কিন্তু, উদারণস্বরূপ, ভারতের বেঙ্গালুরুতে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাসের টিকেট কেনা এবং আসন বেছে নেওয়া যায়।

মেটা’র বিজনেস মেসেজিং-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিকিলা শ্রীনিবাসন জানান, তাদের লক্ষ্য, ব্যবসায়িক কোম্পানি ও গ্রাহকরা যেন চ্যাট থ্রেডে সবকিছু ঠিকভাবে করতে পারে। এছাড়া ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো কোনও লিংকের জন্য হোয়াটসঅ্যাপকে অর্থ দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কোনও ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারকারী যদি বিজ্ঞাপন হিসাবে থাকা লিংকে প্রবেশ করে, তাহলে তার হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টে একটি নতুন চ্যাট খুলে যায়। শুধু এই একটি ফিচারটি থেকেই কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় হয়।

মেটার ব্যবসার মূল লক্ষ্য হল হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করা। তবে অন্যান্য যেসব মেসেজিং অ্যাপ আছে, সেগুলো ভিন্ন উপায় অনুসরণ করে। মেসেজের নিরাপত্তার জন্য আরেকটি সুপরিচিত প্ল্যাটফর্ম হলো ‘সিগন্যাল’ অ্যাপ। এটি একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। তারা বিনিয়োগকারীদের থেকে অর্থ নেওয়ার পরিবর্তে, অনুদানের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে হোয়াটসঅ্যাপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ব্রিয়ান অ্যাকটনের থেকে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নগদ অনুদান গ্রহণ করে সিগন্যাল।

জনপ্রিয় ম্যাসেজিং প্ল্যাটফর্ম স্ন্যাপচ্যাটেও বিভিন্ন ধরনের মডেল আছে। এই অ্যাপে বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। এর পাশাপাশি ‘স্ন্যাপচ্যাট স্পেকট্যাকল’ নামক অগমেন্টেড রিয়েলিটি চশমাও বিক্রি করে তারা। ফোর্বস ওয়েবসাইটের মতে, এর উপার্জনের আরও একটি পথ রয়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২৩, এই সময়ের মাঝে শুধু সুদ থেকেই তারা ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করেছে।

ছবি : সংগৃহীত

No comments

Powered by Blogger.