সিলেটের ৭ নম্বর কূপে দিনে মিলছে ৮ মিলিয়ন গ্যাস by ওয়েছ খছরু

সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপে ধীরে ধীরে গ্যাসের চাপ কমে এসেছিলো। লাইনে গ্যাসের চেয়ে পানির মাত্রা ছিল বেশি। এ কারণে এই কূপকে পুনঃখননের উদ্যোগ নিয়েছিল সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ। পুনঃখনন কাজ শুরুর তিন মাসের মাথায় এসে মিলেছে ফলাফল। এ কূপ থেকে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে এ কূপ থেকে উত্তোলিত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে বলে জানিয়েছে কূপ কর্তৃপক্ষ। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ৭ নম্বর কূপটি অনেক পুরাতন। ১৯৮৬ সালে তেল উৎপাদনের মধ্যদিয়ে এ কূপের যাত্রা শুরু হয়। দেশের অন্যতম উৎপাদিত তেল ক্ষেত্র হিসেবে এ কূপটি পরিচিত। পরবর্তীতে ২০০৫ সাল থেকে এ কূপে আনুষ্ঠানিক গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে- গত বছর থেকে এ কূপে উত্তোলিত গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। চলতি বছরের শুরুতে দেখা যায় গ্যাসের চেয়ে পানির মাত্রা বেশি আসে। তবে; জরিপ বলছিলো ভিন্ন কথা। এ গ্যাস কূপে পর্যাপ্ত গ্যাস মজুত থাকার বিষয়টি জানা গিয়েছিল। এ কারণে সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ একই গ্যাস কূপে আরেকটি জোনে কূপ পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। গত জুলাই মাস থেকে তারা কূপ খনন শুরু করে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের এমডি মো. মিজানুর রহমান গতকাল বিকালে মানবজমিনকে জানিয়েছেন- পরীক্ষামূলক খননের একপর্যায়ে ১০ই অক্টোবর এক হাজার মিটার গভীরে এ কূপ থেকে ৬ দশমিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। এরপর গতকাল সকালে ১২০০ মিটার গভীরে গেলে এই কূপ থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। তিনি জানিয়েছেন- এখন পরীক্ষামূলক উত্তোলন করা হচ্ছে। এবং উত্তোলিত গ্যাস ফ্লো-আউট করা হচ্ছে।

এভাবে এক সপ্তাহ পরীক্ষামূলক উত্তোলন করার পর কমপ্রেসারের কাজ করা হবে। আগামী ২১ দিনের মধ্যে এই কূপ থেকে উত্তোলিত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি। জানান- এই গ্যাস কূপে পরীক্ষা করলে জানা যাবে কী পরিমাণ গ্যাস মজুত রয়েছে তা গ্যাস পরীক্ষা করতে আরও তিন-চারদিন সময় লাগতে পারে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে সিলেটে আনার প্রস্তুতি চলছে। তিনি এলে আনুষ্ঠানিকভাবে সবকিছু বলা যাবে। এ বছরের ২৪শে মে খননকাজ শেষে সিলেটের কৈলাশটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের ৮নং কূপে দৈনিক ২১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার যায়। এর আগে গত ২৭শে জানুয়ারি সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন রশিদপুরের ২নং কূপে গ্যাসের নতুন স্তরের সন্ধান মেলে। যার পরিমাণ প্রায় ১৫৭ বিলিয়ন ঘনফুট। সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ১০ নম্বর কূপটি উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত। ইতিমধ্যে গ্যাস উত্তোলনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এখন চলছে গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের কাজ। এ কূপ থেকে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের উৎপাদনে থাকা কূপগুলো থেকে এখন প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে প্রায় ১০০ মিলিয়নের বেশি ঘনফুট গ্যাস। চলতি বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি প্রকল্পের কাজ শেষ করে তারা সেই উৎপাদনকে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে নিয়ে যেতে চায়। আর সরকারের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী ২০২৫ সালের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে পারলে শুধু এই কোম্পানি থেকেই প্রতিদিন জাতীয় গ্রিডে ২৫০ মিলিয়ন গ্যাস যুক্ত করা সম্ভব হবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। সেজন্য গ্যাস উত্তোলন, ওয়ার্কওভারের পাশাপাশি গ্যাস অনুসন্ধানও চলছে।

mzamin

No comments

Powered by Blogger.