পাকুন্দিয়ায় জনপ্রিয় হচ্ছে ‘ছাদ বাগান’ by সাখাওয়াত হোসেন হৃদয়

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাদ বাগান। পৌরশহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাসাবাড়ির ছাদ এমনকি স্কুলের ছাদেও শোভা পাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ফলজ, ভেষজসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির বাগান। এসব বাগানে উৎপাদিত ফল ও সবজি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভেষজ গাছ ভূমিকা রাখছে রোগ নিরাময়ে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ছাদ বাগান স্থাপনে শৌখিন মানুষদের আগ্রহ দিন দিন বেড়ে চলছে। যা এখন শহর থেকে পল্লী গ্রামেও বিস্তার লাভ করছে। শৌখিন মানুষেরা সাধারণত দামি, ব্যতিক্রমী, অফ সিজনেও উৎপাদন করা যায় এমন ফলের চারা ছাদ বাগানে স্থাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। পড়ন্ত বিকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছাদ বাগানের একটু যত্ন, পরিচর্যা মানুষের জন্য বিনোদন হিসেবেও কাজ করে। পাশাপাশি এর মাধ্যমে পরিবারের পুষ্টি চাহিদাটাও পূরণ করতে পারছে।
তবে বারোমাসি ও বিদেশি দামি ফল ছাদ বাগানের একটি বড় অংশ দখল করে আছে। পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌরসভা, আংগিয়াদী, মির্জাপুর, দরগা বাজারসহ বেশ কিছু গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে প্রায় ৫০-৬০টি ছাদ বাগান রয়েছে। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ছাদ বাগানের সংখ্যা। সম্প্রতি শিশুদের মধ্যে সাড়া জাগানোর লক্ষ্যে উপজেলার আদিত্যপাশা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. আতিকুর রহমান ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বেবুলা আদিত্যপাশা স্কুলের ছাদে বাগান করেছেন। যা দেখে শিশুদের মাঝেও বাগান স্থাপন বা বৃক্ষরোপণে আগ্রহ বাড়ছে। তার এই উদ্যোগটি হতে পারে সারা দেশের সকল স্কুলের জন্য একটি মডেল। অবসরপ্রাপ্ত এ শিক্ষক বলেন, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগের পরামর্শে প্রথমে মাচা করে সবজি, পরে বিভিন্ন সুদৃশ্য ফুল, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ফলের চারা রোপণ করি। এর মধ্যে ড্রাগন ফলও রয়েছে। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এ বাগান দেখে তাদের মধ্যেও বাগান স্থাপন ও বৃক্ষরোপণে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পৌরশহরের ডাকবাংলো সংলগ্ন ভবনের ছাদে বাগান করছেন সাইম। তিনি জানান, ছাদে বাগান করব সে নেশা থেকে ছাদে স্থায়ীভাবে চেম্বার তৈরি করে নিয়েছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে উন্নত জাতের চারা সংগ্রহ করে এখানে রোপণ করেছি। তবে ছাদ বাগানে প্রাপ্তির চাইতে তৃপ্তিটাই বেশি। তবে প্রাপ্তিও মিলে। বর্তমানে তার ছাদে প্রায় ৩৫ প্রকার ফলের চারা রয়েছে। এছাড়াও তিনি আরও বেশ কিছু চারা লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আংগিয়াদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক সোহাগ মানবজমিনকে বলেন, পল্লী অঞ্চলে ও যাদের ছাদ বাগান করার সুযোগ আছে তাদের পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে ছাদ বাগান স্থাপনে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রোগ নিরাময়েও ভেষজ উদ্ভিদ কাজে লাগবে। মানুষের আগ্রহ সৃষ্টির জন্য আমি নিজেও উপজেলা পরিষদ কোয়ার্টারের ছাদে বাগান করেছি। যেখানে এখন বিভিন্ন ধরনের ফল ধরেছে। যা দেখে আশেপাশের লোকজনেরও আগ্রহও বাড়ছে।

No comments

Powered by Blogger.