খুলনা সিটি নির্বাচন: ফ্যাক্টর কোন্দল by রোকনুজ্জামান পিয়াস ও রাশেদুল ইসলাম

দিন যত গড়াচ্ছে, ততই উত্তাপ ছড়াচ্ছে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনী মাঠে। দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ছুটে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণাও এখন তুঙ্গে। ভোট নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন তৃণমূলের ভোটাররা। এসব সাধারণ ভোটারদেরই জয়-পরাজয়ের মাপকাঠি ধরা হয়। তবে এবারের নির্বাচনে আরো একটি ফ্যাক্টর দৃশ্যমান তা হলো দীর্ঘদিনের জিইয়ে থাকা কোন্দল। এই কোন্দল কে কতটা সামাল দিতে পারবে, তার ওপরও জয়-পরাজয় নির্ভর করবে বলে মনে করছেন ভোটাররা। এদিকে নির্বাচনকে সামনে নিয়ে একদিকে যেমন দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে ঐকমত্যেও পৌঁছেছে উভয় দল। তবে রাজনৈতিক মহল বলছে, আসলেই তারা ঐক্যমতে পৌঁছতে পেরেছেন কিনা, তা নির্বাচনের পর জানা যাবে। ভোটের ফলাফলই সব হিসাবনিকাশ বলে দেবে। উভয় দলের মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাসমান বা তৃণমূল ভোটাররা প্রার্থীর যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা বিবেচনা করেই ভোট দেবে। সেক্ষেত্রে প্রচারণায় যে যত ভোটারদের আকৃষ্ট করতে পারবে তাদের রায়ও তার পক্ষেই যাবে। কিন্তু দলীয় কোন্দল দলীয়ভাবে নির্মূল করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রচারণার তেমন কোনো ভূমিকা নেই বলে তারা মনে করেন।
বিভিন্ন সূত্রের দাবি, গত নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী মনিরুজ্জামান মণির কাছে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের পরাজয়ের মূল কারণ ছিলো দলীয় কোন্দল ও হেফাজত ইস্যুতে জাতীয়ভাবে আওয়ামী লীগের প্রতি অনাস্থা। তবে এবার হেফাজত ইস্যু না থাকলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিদ্যমান। সূত্র জানায়, খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজানের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বর্তমানেও সেটা বিদ্যমান। মহানগর কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিক থেকে খুলনা-২ আসনের এমপি মিজানই এগিয়ে। সম্প্রতি আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ, জমি দখল ও মাদক ব্যবসার পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগে দুদক এমপি মিজানকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মিজানের অনুসারীদের দাবি- এই ঘটনায় তালুকদার আবদুল খালেকের হাত রয়েছে। সেক্ষেত্রে মিজান অনুসারীরা খালেকের নির্বাচনী বৈতরণী পার করতে কতটুকু ভূমিকা রাখবেন, সে প্রশ্ন রয়ে গেছে। নগরীর ৩১ ওয়ার্ডেই আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের নেতাকর্মী-সমর্থকরা দ্বিধাবিভক্ত। কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়নে দু’গ্রুপের মধ্যে শুরু থেকেই ঠাণ্ডা লড়াই বিদ্যমান। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরও স্থানীয় গ্রুপিংয়ের কারণে পরবর্তীতে কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থী পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র মনোনীত প্রার্থীরা বেঁকে বসেছেন। এক্ষেত্রে আলোচনার শীর্ষে রয়েছে সিটির ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেয়ার আগেরদিন তাকে বাদ দিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয় মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের অনুসারী ফায়জুল ইসলাম টিটুকে। তবে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে এখনো মাঠে রয়েছেন বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি মহানগর পূজা উদ্‌যাপন কমিটি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদেরও নেতা। সেক্ষেত্রে সংখ্যালঘু ভোটারদেরও একটি বড় অংশ দলের প্রতি ক্ষুব্ধ। এতে মেয়র প্রার্থীর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। একইভাবে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র ঘোষিত প্রার্থী ছিলেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান জোয়ার্দ্দার। তাকেও রাতারাতি পরিবর্তন করে স্থানীয়ভাবে শেখ মোশাররফ হোসেনকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। একই এলাকার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কেন্দ্র মনোনীত প্রার্থী ছিলেন তাসলিমা আক্তার লিমা। পরবর্তীতে তাকে বঞ্ছিত করে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদের স্ত্রী মেমোরী সুফিয়ান শুনুকে। এনিয়েও দলীয় কোন্দল তুঙ্গে। ২১, ২২ এবং ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র ঘোষিত সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন হালিমা ইসলাম। পরে কেন্দ্র মনোনয়ন উপেক্ষা করে স্থানীয়ভাবে কনিকা সাহাকে দলীয় প্রার্থী করা হয়। তবে দলীয় সূত্র বলছে, বিগত নির্বাচনের মতো দলীয় কোন্দল কিছুটা সামাল দিতে পেরেছে আওয়ামী লীগ। তাদের দাবি, অধিকাংশ নেতাকর্মী মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবেন। সব কিছুর ঊর্ধ্বে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নেয়া শেষ মুহূর্তের পদক্ষেপের প্রতি তাকিয়ে রয়েছে দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। দলীয় কোন্দলের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের নির্বাচনী সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এসএম কামাল বলেন, এখন আওয়ামী লীগে কোনো কোন্দল নেই। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ। বিভিন্ন ওয়ার্ডে একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ম্যাক্সিমাম জায়গায় একক প্রার্থী। তবে যেখানে এখনো একাধিক প্রার্থী রয়েছে সেখানে আমরা ঐক্যমতে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
অন্যদিকে বিএনপির কোন্দল প্রকাশ্যে না হলেও বর্তমান নির্বাচিত বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরই নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। সূত্র বলছে, এই তালিকায় রয়েছেন, ১৬নং ওয়ার্ডে টানা তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র-১ আনিচুর রহমান বিশ্বাস। দলীয় মেয়র প্রার্থী মঞ্জুর সঙ্গে আগে থেকেই দ্বন্দ্ব নগর বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক এই সম্পাদকের। এ কারণে বর্তমান তার সকল পদ স্থগিত রয়েছে। আনিচুর রহমান সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর লবির অনুসারী। ১৭নং ওয়ার্ড থেকে টানা ৬ বার নির্বাচিত কাউন্সিলর প্যানেল মেয়র-২ শেখ হাফিজুর রহমানও লবির অনুসারী। তিনি দলীয় মনোনয়ন পেয়েও গত ৩ তারিখে সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের নির্বাচনী এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। শুধু তাই নয়, তিনি সেখানে তার পক্ষে প্রকাশ্যে বক্তব্যও রাখেন। এই অভিযোগে গত ৫ তারিখে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ৩০নং ওয়ার্ডের টানা তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর প্রার্থী আমান উল্লাহ আমানও লবির অনুসারী। এই ওয়ার্ডে বিএনপির অপর প্রার্থী ছিলেন চৌধুরী মিরাজ। তিনি নজরুল ইসলাম মঞ্জুর কাছের লোক হিসেবে পরিচিত। প্রথমদিকে এ ওয়ার্ডে বিএনপি সরাসরি কাউকে দলীয় সমর্থন না দিয়ে উন্মুক্ত রেখেছিল। কিন্তু প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন চৌধুরী মিরাজকে প্রত্যাহার করিয়ে আমানকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেয়। এ নিয়েও উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। ১২নং ওয়ার্ডের তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মণি। তাকে বাদ দিয়ে ওয়ার্ড সভাপতি আবু সালেককে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এদিকে মনিও ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন। বর্তমান এই অবস্থাতেই রয়েছে। শেষ পর্যন্ত উভয় প্রার্থীর সমঝোতায় আনতে না পারায় দলীয়ভাবে সমর্থন উন্মুক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ভোটাররা দ্বিধাবিভক্ত। খুলনা মহানগরীর খালিশপুর অঞ্চলের একটি অংশের নেতৃত্ব দেন নগর বিএনপির কোষাধ্যক্ষ ও খালিশপুর থানার সাধারণ সম্পাদক আরিফুর রহমান মিঠু। তার সঙ্গে মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরোধ পুরনো। এ নির্বাচনে সেটার প্রভাব পড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির হস্তক্ষেপে অবশেষে মিঠু প্রচারণায় নেমেছেন। মেয়র প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েও জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সঙ্গে মঞ্জুর বিরোধ ছিলো ওপেন সিক্রেট। এ বিরোধের জের ধরে গত দেড় বছর ধরে জেলা বিএনপি ও নগর বিএনপি পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছিল। তবে এই নির্বাচনে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কার্যক্রম পরিচালিত করছে। এমনকি মনা দলীয় মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
দলীয় কোন্দলের ব্যাপারে বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর নির্বাচনী সমন্বয়ক খুলনা জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম মনা বলেন, আগে কোন্দল থাকলেও এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো কোন্দল নেই। তিনি বলেন, যেহেতু দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া জেলে রয়েছেন সেহেতু এই নির্বাচনটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। মিথ্যা মামলায় জেলে রাখার প্রতিবাদও। মনা বলেন, সকল প্রকার গ্রুপিং ও মতের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই ধানের শীষের জন্য কাজ করছেন।
খালেকের প্রচারণা: বিএনপি’র মন ভুলানো মিষ্টি কথায় কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে নগরবাসী আজ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। খুলনা মহানগরীতে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। তিনি মাদকমুক্ত, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ আধুনিক খুলনা মহানগরী গড়তে নগরবাসীর প্রতি নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। মেয়র প্রার্থী তালুকদার খালেক গতকাল নগরীর ২৩ ও ২৪নং ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও একাধিক পথসভায় এ কথা বলেন।
তিনি ২৩নং ওয়ার্ডের সামছুর রহমান রোড থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। এরপর বাইতিপাড়া, শান্তিধাম মোড় হয়ে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল এলাকা, ২৪নং ওয়ার্ডে গল্লামারী মোড়, নিরালা তাবলিগ মসজিদ, ব্যাংক স্টাফ কলোনী, বুড়ো মৌলভীর দরগাহ, কাশেমনগর, হাজী মুজিবর রহমান সড়ক, শের-এ বাংলা রোডে ব্যাপক গণসংযোগ করেন। এসময় এলাকার শত শত সাধারণ মানুষ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেককে স্বাগত জানান। পরবর্তীকালে তিনি তাবলিগ মসজিদ মোড় ও কাঁচাবাজার এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল কেসিসি নির্বাচনে খুলনা মহানগরীর সুষম উন্নয়নের স্বার্থে তালুকদার আব্দুল খালেকের মতো একজন সৎ কর্মঠ ও নির্লোভ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষকে সমর্থন দেয়ায় সচেতন সাংবাদিক সমাজকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একই সঙ্গে সাংবাদিক নেতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্মৃতি বিজড়িত খুলনার সামগ্রিক উন্নয়নে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি বেলা ১১টায় নগরীতে সচেতন সাংবাদিক সমাজের প্রচারাভিযানে অংশ নিয়ে ভোটারদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন।
সিইসি’র কাছে ১৬ দফা সুপারিশ মঞ্জুর: আগামী ১৫ই মে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদাকে ১৬ দফা সুপারিশ দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। নগরীর বয়রা মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে প্রার্থীদের সঙ্গে সিইসি’র মতবিনিময় সভা শেষে তিনি এ দাবিগুলো লিখিতভাবে উত্থাপন করেন।
সুপারিশসমূহ হলো- সোনাডাঙ্গা থানা এলাকার মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সের পরিবর্তে খুলনা জিলা স্কুল অথবা সরকারি মহিলা কলেজ অডিটোরিয়ামে ভোট গণনা এবং নির্বাচনী সরঞ্জাম সংরক্ষণের স্থান নির্ধারণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। ২০১৩ সালে কেসিসি নির্বাচনে খুলনা জিলা স্কুল অডিটোরিয়ামটি ব্যবহার করা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গঠিত সমন্বয় কমিটিতে বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি ও ডিজিএফআই-এর কর্নেল পদবিধারী কর্মকর্তাসহ রিটার্নিং অফিসারের চেয়েও অনেক উচ্চ স্তরের প্রভাবশালী কর্মকর্তা না রাখা। কারণ তাদের যেকোনো আদেশ-নির্দেশ এমনকি তা সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় হলেও রিটার্নিং অফিসারকে মেনে চলতে হবে। এছাড়া এ ধরনের সমন্বয় কমিটি নির্বাচন কমিশন ইতিপূর্বে কখনই গঠন করেনি। লেভেল প্লেইং ফিল্ড বাস্তবায়ন করা। ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তাবিত প্রিজাইডিং অফিসার ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের তালিকা ধরে পুলিশ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা তাদের নাম ও ঠিকানা, পরিবারের অন্যদের নানাবিধ স্পর্শকাতর তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের নামে হয়রানি করে ভীতি সৃষ্টি না করা। সরকারদলীয় মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের নির্বাচনী সভায় যেসব সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছেন সে সব কর্মকর্তাদের কোনো প্রিজাইডিং অফিসার এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকাণ্ডেই দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না। সকল ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন করতে হবে। পুলিশের প্রতি আমাদের বিন্দুমাত্র আস্থা নেই। এ অবস্থায় নির্বাচনী এলাকার সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা গত ২-৩ বছর যাবৎ খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত তাদেরকে পরিবর্তন/প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সময়ের আগে ও পরে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানানো হয়।

No comments

Powered by Blogger.