কোটার প্রজ্ঞাপন নিয়ে অগ্রগতি নেই

কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলন স্থগিতের সময়সীমা গতকাল শেষ হয়েছে। কিন্তু এ সময়ে কোটা বাতিল বা সংস্কারের প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম এ কথা জানান। তিনি বলেন , কোটার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে শিগগিরই কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। মন্ত্রিসভা বৈঠকে কোটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না বা কোটার প্রজ্ঞাপন জারির অগ্রগতি কতদূর? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কোটা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, কোনো অগ্রগতিও নেই। যে অবস্থায় ছিল, তাই। শিক্ষার্থীরা ৭ই মে’র মধ্যে কোটা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির সময় বেঁধে দিয়ে ওই পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের কাছে এখনও কমিটি গঠনের আদেশ পৌঁছে নাই। আনুষ্ঠানিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে বলেছি, এটার অগ্রগতি আমাদের জানানোর জন্য- আমাদের কী করণীয়। কোটা নিয়ে আপনারা কোনো বৈঠক করেছেন কি-না এ বিষয়ে তিনি বলেন, না, বৈঠক হয়নি। তবে কোটা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির প্রক্রিয়াটা কী হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জনপ্রশাসন থেকে একটা প্রজ্ঞাপন (কমিটি গঠনের) জারি হলে আমাদের কাছে আসবে, আমরা তখন কমিটি নিয়ে বসব। কত দিনের মধ্যে সেই কমিটি হবে তার কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা নেই। প্রজ্ঞাপন শিগগিরই জারি হবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের বাইরে ছিলেন। কাজেই ওই বিষয়ে খুব বেশি কাজ আগায়নি। আমরা এখনও প্রধানমন্ত্রীর কোনো অনুশাসন বা নির্দেশনা পাইনি। শফিউল আলম বলেন, কমিটি গঠন হবে, বসবে। আলোচনা করে যেটা ভালো হয় সেটা করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কমিটি নিশ্চিত করবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে কমিটি হবে। কমিটির বাকি সদস্য কারা হবে সেটা জনপ্রশাসন ঠিক করবে। বর্তমানে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত কোটার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ। চাকরিতে বাকি ৪৪ শতাংশ নেয়া হয় মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে। বিসিএসে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৩০, জেলা কোটায় ১০, নারী কোটায় ১০ ও উপজাতি কোটায় ৫ শতাংশ চাকরি সংরক্ষণ করা আছে। এই ৫৫ শতাংশ কোটায় পূরণযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেক্ষেত্রে ১ শতাংশ পদে প্রতিবন্ধী নিয়োগের বিধান রয়েছে। এই কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরেই আন্দোলন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ই এপ্রিল জাতীয় সংসদে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়ে যখন এত কিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনো কোটারই দরকার নেই। যারা প্রতিবন্ধী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেব।

No comments

Powered by Blogger.