ভারতে পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না বাংলাদেশী কিশোর-কিশোরীর

একজন কলেজে পড়ত, আরেকজন ক্লাস নাইনে। দুজনেই সিরাজগঞ্জের বাসিন্দা। প্রেমে পড়েছিল তারা। কিন্তু এলাকায় জানাজানি হতেই শুধু বাড়িই নয়, দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল তারা। ভেবেছিল ভারতে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে জীবন বাঁধবে নতুন করে। সেটা ২০১৬ সালের নভেম্বর মাস। পশ্চিমবঙ্গ আর বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে বাস ধরে শিলিগুড়ি যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওদের। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ তাদের বাসস্ট্যান্ডেই আটক করে। তারপরে শিশু-কিশোর বিচার বোর্ডের নির্দেশে দুজনের ঠাঁই হয় দুটি চাইল্ড কেয়ার হোমে। কিশোরীটিকে পাঠানো হয়েছিল মালদা জেলার হোমে, আর কিশোরটিকে রাখা হয়েছিল বালুরঘাটেরই শুভায়ন হোমে। এরমধ্যেই কাউন্সেলিং চলে দুজনের, যোগাযোগ হয় বাংলাদেশে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গেও।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে দিন পনেরো আগে কিশোরীটিকে তার বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আর রবিবার ওই কিশোরকে হিলি সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হল বাংলাদেশে। শিশু-কিশোরদের সহায়তার জন্য ‘চাইল্ড-লাইন’ নামে যে সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে। তারই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সমন্বয়ক সুরজ দাস জানিয়েছেন, ‘ভিন ধর্মের মধ্যে প্রেম, এই কারণে ছেলেমেয়ে দুটি দেশ ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিল। প্রায় সাত-আট মাস ধরে ওদের মধ্যে প্রেম ছিল। কিন্তু লোক জানাজানি হতেই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিল ভারতে এসে বিয়ে করে ঘর বাঁধবে।’ দুজনেই জেলা চাইল্ড-লাইনের হেফাজতে ছিল এতদিন। রোববার হিলি সীমান্তে ওই কিশোরকে ফেরত নিয়ে যেতে বিজিবি আধিকারিকদের সঙ্গেই হাজির ছিলেন তার বাবা মা-ও। তবে মি. দাস জানাচ্ছেন, ‘সিরাজগঞ্জে ছেলেটির নামে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। তাই দেশে ফেরত যাওয়ার পরে তাকে গ্রেফতার করার আশঙ্কা আছে।’ তার কিশোরী প্রেমিকা অবশ্য দিন পনেরো আগে ওই একই পথে নিজের দেশে, বাবা-মায়ের কাছে ফিরে গেছে। সিরাজগঞ্জ জেলার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: হেলাল উদ্দিন বিবিসিকে জানিয়েছেন, মামলা থাকায় কিশোরটিকে রোববারই থানায় আনা হয়েছে এবং আজ সোমবার তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.