রোহিঙ্গাদের জন্য সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বিশ্বব্যাংক

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন বলছেন, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা এবং শরণার্থীদের সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছে। শনিবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা জানান। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিক্সন বলেন, পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সংখ্যাটি বিশাল। বাংলাদেশের অবকাঠামো ও পরিবেশের ওপর বিশাল চাপ ফেলছে। বর্ষা এলে অসুখ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় ডিক্সন রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য কেন্দ্র, খাবার বিতরণ কেন্দ্র, শিশু কেন্দ্র, নারীদের উপযোগী জায়গা ইত্যাদি ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন, সরকার চাইলে রোহিঙ্গারা চলে যাওয়ার পরও স্থানীয় জনগণের পুনর্বাসনে সহযোগিতা করা হবে। এরপর বিশ্বব্যাংকের এ ভাইস প্রেসিডেন্ট কক্সবাজারে সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং ত্রাণ সহযোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরাম যোগ দিতে ঢাকা এসেছেন ডিক্সন। ৫ দিনের সফর শেষে তিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে বলেন, উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশে বিশ্বে একটি উদাহরণ। দেশটি এর দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকা জনগণের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে এবং অন্যদের জন্যেও সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করার আশ্বাস জানিয়ে ডিক্সন বলেন, ‘বাংলাদেশ আরেকটি রূপান্তরের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে, একটি মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার পথে বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় সব সাহায্য করতে বিশ্বব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
জাতিসংঘ দূতের রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন : টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং ঘি লি’র নেতৃত্বে বিশেষ প্রতিনিধি দল টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছেন। এ সময় রোহিঙ্গারা বিভিন্ন দাবি পেশ করেন। জানা যায়, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতিসংঘের বিশেষ দূত ইয়াং ঘি লি’র নেতৃত্বে অপর ৪ সদস্যসহ একটি প্রতিনিধি দল উপজেলার নেচার পার্ক সংলগ্ন রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রা ও মানবিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন। এরপর তিনি নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড শরণার্থী ক্যাম্প ও নব নির্মিত আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন নয়াপাড়া রোহিঙ্গা বস্তি পরিদর্শন করেন। এ সময় এক দল রোহিঙ্গা ব্যানার নিয়ে স্বদেশে ফিরে যেতে বিভিন্ন দাবি পেশ করেন। বিকালে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনছিপ্রাংয়ের রইক্ষ্যংস্থ পুঁটিবনিয়া ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এরপর সন্ধ্যায় তিনি কক্সবাজারের উদ্দেশে ক্যাম্প ত্যাগ করেন। এ সময় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং বিভিন্ন দাতা সংস্থার লোকসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.