প্রেসিডেন্টের কর্মফলে আম আদমির দুর্ভোগ

মার্কিন সরকারের বর্ধিত বাজেট বরাদ্দ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে উত্থাপিত একটি বিল পাস না হওয়ায় দেশটির সরকারি কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন অনেক দফতর বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে জাতীয় উদ্যান এবং স্মৃতিস্তম্ভগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ। ওবামার আমলে এর ফলে জনরোষ দেখা দিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন আর্থিক রেটিংস এজেন্সি ‘স্যান্ডহার্ট অ্যান্ড পুওর’র জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ বেথ আন বোভিনো। তিনি বলেন, এ ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব ফেলবে। প্রতি সপ্তাহে ৬০০ কোটি ডলার আর্থিক ক্ষতি হতে পারে। রয়টার্স জানায়, এর ফলে অতি প্রয়োজনীয় নয় কেন্দ্রীয় সরকারের এমন অনেক কর্মীকে অবৈতনিক সাময়িক ছুটিতে যেতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ অনেক দফতরও বন্ধ হয়ে যাবে।
তবে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজ চলবে। এর মধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা, ডাক, বিমান ওঠানামার কাজ, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সেবা, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে সেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কারাগার, কর বিভাগ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন অন্যতম। কর্মীদের মধ্যে কারা কারা ছুটিতে যাচ্ছেন তা শনিবারই জানা যায়। ২৬ জানুয়ারি থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যাওয়ার আগে এ সপ্তাহেই তারা শেষবারের মতো বেতন পাবেন। এর আগে ২০১৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে সিনেটরদের মতবিরোধে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের তহবিল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এবং ১৬ দিন পর্যন্ত ওই অচলাবস্থা চলেছিল। তখন আট লাখের বেশি কর্মীকে অবৈতনিক ছুটিতে যেতে হয়েছিল। ছুটিতে যাওয়া কর্মীদের সামান্য ২৪০০ কোটি ডলার ভর্তুকি দেয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছিল কংগ্রেস। ট্রাম্প প্রশাসনও একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে বলে শুক্রবার জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ দফা কতজনকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হবে এবং কোন কোন দফতরের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা জানা যায়নি। তবে ২০১৩-র সময়ে এ ধরনের অচলাবস্থায় কী ঘটেছিল তার একটি তুলনা টেনে ধারণা দিয়েছে রয়টার্স।
ন্যাশনাল পার্ক : রেঞ্জার্স এবং নিরাপত্তারক্ষীদের দায়িত্বে রেখেই অচলাবস্থার মধ্যেও ন্যাশনাল পার্কগুলো খোলা রাখার পরিকল্পনা আছে ট্রাম্প প্রশাসনের। ২০১৩ সালের অচলাবস্থায় পার্কগুলো প্রতিদিন সাড়ে সাত লাখ দর্শক হারিয়েছে বলে অলাভজনক ন্যাশনাল পার্ক কনজারভেশন অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ক্ষতি হয়েছে ৫০ কোটি ডলারের ওপর।
পর্যটন খাত : ওবামা আমলে হওয়া অচলাবস্থায় স্মিথসোনিয়ান জাদুঘরের মতো জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছিল লিংকন মেমোরিয়াল, লাইব্রেরি কংগ্রেস ও ন্যাশনাল আর্কাইভস। এ দফা এ ধরনের উন্মুক্ত কেন্দ্রগুলো বন্ধ না রাখার পরিকল্পনা আছে বলে ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
স্বাস্থ্যসেবা : ২০১৩ সালে বয়সী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবীমার কর্মকাণ্ডও কোনো বাধা ছাড়াই অব্যাহত ছিল। তবে কয়েকশ’ রোগী ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথের ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ভর্তি হতে ব্যর্থ হয়েছিল। সেবার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের কাজ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেলেও এবার তা হবে না বলে ধারণা প্রশাসনের।

No comments

Powered by Blogger.