সৌদি যুবরাজ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বাবা ক্ষমতায় বসার পর থেকেই তিনি আলোচনায় আসা শুরু করেন, আর এখন ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণার পর সিংহাসনের একধাপ পেছনে রয়েছেন বিন সালমান। ৩১ বছর বয়সী মোহাম্মদ বিন সালমান খুবই দ্রুতই রাজনীতিতে জায়গা করে নিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোও তার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে সালমান বিন আবদুল আজিজ সিংহাসনে আরোহণের পর বেশকিছু রদবদল করেন। তার ছেলেকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদেও দায়িত্ব দেন। ২৯ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে কমবয়সী প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তার দায়িত্ব গ্রহণের দুই মাস পরেই ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট সামরিক অভিযান শুরু করে। সৌদি আরবে অর্থনীতিতে তেল নির্ভরতা কমাতে চান মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি কাউন্সিল অব ইকোনমিক এন্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাফেয়ার্সের প্রধান মোহাম্মদ বিন সালমান ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। সৌদি আরবে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য প্রকাশিত তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, যা ভিশন ২০৩০ নামে পরিচিত। ওই পরিকল্পনা প্রকাশ করে তিনি এটাও বলেছেন যে "আমরা তেল ছাড়াই চলতে পারবো, ২০২০ সালের মধ্যেই এমনটা নিশ্চিত হবে"। নতুন এই যুবরাজ সৌদিদের কাছে অন্যতম একটি রোল মডেলও হয়ে উঠেছিলেন। অর্থনৈতিক সংস্কারের যে পরিকল্পনা মোহাম্মদ বিন সালমান ঘোষণা করেছেন সেটাক অবশ্য 'উচ্চাভিলাষী" বলে বর্ণনা করেছে আইএমএফ। একইসঙ্গে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোও একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মনিটারি ফান্ড বা আইএমএফ। ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে তিনি কোনো পরিবর্তন আনবেন সেই সম্ভাবনা নেই। প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনার সম্ভাবনা গত মাসেই বাতিল করে দেন প্রিন্স মোহাম্মদ। সিরিয়া ও ইয়েমেনে যে লড়াই চলছে তাতে দ’দেশ দুই পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সৌদি আরবে এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবার পর দুই দেশের সম্পর্কে আরও অবনতি হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় মাধ্যম ওই শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ডের ঘটনাকে 'এক অভ্যুত্থান' হিসেবে বর্ণনা করে বলেছিল সৌদি আরবকে এ ঘটনার জন্য কড়া মূল্য দিতে হবে। রাজপরিবারের ক্ষমতা আরো বেশি দৃঢ় করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। তার বাবা বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ সিংহাসনে বসার আগে থেকেই ছেলের সঙ্গে তার সম্পর্ক যথেষ্ঠ ঘনিষ্ঠ ছিল। ২০০৯ সালে তার বাবার বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান মোহাম্মদ বিন সালমান। সেই সময়ে রিয়াদের গর্ভনর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় এসে বাদশাহ সালমান তার ছেলেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব দেন এবং ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েফকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ঘোষণা করেন। মোহাম্মদ বিন সালমানের জন্ম ১৯৮৫ সালের ৩১শে আগস্ট। বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের তৃতীয় স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ বিন সুলতানের সন্তান মোহাম্মদ বিন সালমান। সৌদি রাজপরিবারের বেশিরভাগের মতোই তিনি সৌদি আরবেই তার পড়ালেখা শেষ করেছেন। কিং সৌদ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে পড়ালেখা শেষ করে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থায় কাজ করেছেন বিন সালমান। তাঁর একজন স্ত্রী রয়েছেন, দুই কন্যা ও দুই পুত্রের জনক সৌদি আরবের নতুন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

No comments

Powered by Blogger.