অপরাজেয় বাংলার ভাস্কর আবদুল্লাহ খালিদের ইন্তেকাল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে স্থাপিত বিখ্যাত ভাস্কর্য ‘অপারাজেয় বাংলা’র ভাস্কর ও একুশে পদকপ্রাপ্ত চিত্রশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ আর নেই। (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার দিনগত রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করেন তিনি। বেসরকারি যমুনা টিভি বারডেমের একজন কর্তব্য চিকিৎসকের বরাতে জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় অবস্থার গুরুতর অবনতি হতে শুরু করে রাতে মারা যান শিল্পী আবদুল্লাহ খালিদ। মরহুমের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে সিলেটে হাপানিসহ বার্ধক্যজনিত কারণে আবদুল্লাহ খালিদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাকে প্রথমে সিলেটের রয়েল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ২ মে তাকে রাজধানীর গ্রীনরোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ১০ মে তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউ) লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
এরমধ্যে শনিবার রাতে তিনি মারা যান। বাংলাদেশের স্বনামখ্যাত ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদ সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্টস (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) থেকে চিত্রাঙ্কন বিষয়ে স্নাতক এবং পরে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিত্রাঙ্কন ও ভাস্কর্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরভাস্কর্য বিভাগে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। চট্টগ্রামে শিক্ষকতাকালে তিনি ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) উদ্যোগে কলা ভবনের সামনে নির্মিতব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মারক 'অপরাজেয় বাংলা' নির্মাণের দায়িত্ব পান। ১৯৭৩ সালে অপরাজেয় বাংলার নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাঁচ বছর পর ১৯৭৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর এর উদ্বোধন করা হয়। আবদুল্লাহ খালিদ ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রের সামনে অবস্থিত ম্যুরাল আবহমান বাংলা এবং ১৯৯৫-১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে অবস্থিত টেরাকোটার ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে 'অঙ্কুর', 'অঙ্গীকার', 'ডলফিন', এবং 'মা ও শিশু'। আবদুল্লাহ খালিদ শিল্পকলা ও ভাস্কর্যে গৌরবজনক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৪ সালে শিল্পকলা পদক এবং ২০১৭ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। সূত্র: উইকিপিডিয়া

No comments

Powered by Blogger.