ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশও জিমির শাস্তির পক্ষে

যতই দিন যাচ্ছে রাসেল মাহমুদ জিমির শাস্তির সুপারিশ ততই জোরদার হচ্ছে। সমন্বয় কমিটির পর এবার তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধের সেই শাস্তির সুপারিশ বহাল রাখল ওয়ার্কিং কমিটিও। তিন সপ্তাহ আগে এমন সুপারিশ করেই হকি ফেডারেশনের গভর্নিং কমিটিকে (জিবি) সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য বলেছেন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা। আর যদি তিন বছরের জায়গায় ছয় মাসের জন্যও শাস্তির সুপারিশ জিবিতে পাস হয়, তাহলেও ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া কাপে খেলতে পারবেন না জিমি, যা অস্বস্তির কারণ হতে পারে বাকি সিনিয়র খেলোয়াড়দের জন্য। এ সপ্তাহে ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার দেশে ফিরলেই নাকি কাক্সিক্ষত সেই জিবির সভা অনুষ্ঠিত হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ। ঝামেলা যেন পেছন ছাড়ছে না রাসেল মাহমুদ জিমির। দেশসেরা এই স্ট্রাইকারের বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগ। মাঠে অশোভন আচরণের কারণে জিমির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এছাড়া বিভিন্ন সময় ফেডারেশন কর্তাদের বিরুদ্ধে বেফাঁস মন্তব্যের কারণে জিমিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ফেডারেশন। ২০১১ সালের ২৪ অক্টোবর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক খন্দকার জামিলের পদত্যাগের দাবিতে যুব হকি বন্ধের অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছিলেন জিমি। ২০১৪ সালে সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেবার মুচলেকা দিয়ে পার পেলেও এবারের অভিযোগ ছাড়িয়ে গেছে তার আগের সব কীর্তিকে।
এবার জিমির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল ওয়ার্ল্ড হকি লীগ দ্বিতীয় রাউন্ডে শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচের পর ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তাদের বাজে ভাষায় সমালোচনা করা। এছাড়া খেলার মাঠে তরুণদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, সেনাবাহিনীর খেলোয়াড়দের শাসানো কিংবা জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়া। এজন্য ফেডারেশন থেকে তাকে শোকজ নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তার জবাব নয়, উল্টো নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন জিমি। যার ফলে সমন্বয় কমিটিতেই যায় জিমির শাস্তির বিষয়টি। মামুনুর রশিদ, রফিকুল ইসলাম কামাল ও আবু জাফর তপন নির্বাচন কমিটির এই তিন সদস্যের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মাহবুব এহসান রানা। এ কমিটিই প্রমাণাদি জোগাড় করে জিমিকে তিন বছরের শাস্তির জন্য সুপরিশ করে কাগজপত্র পাঠায় ওয়ার্কিং কমিটিতে। দু’সপ্তাহ আগে সমন্বয় কমিটির সেই সুপরিশকেই সমর্থন করে সিদ্ধান্তের জন্য সরাসরি জিবি সভায় পাঠিয়ে দেয় ওয়ার্কিং কমিটি। ফেডারেশনের বড় কর্তারাই এ কমিটির সদস্য। তাই ধারণা করা হচ্ছে, জিবি সভাতেও সমন্বয় এবং ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশকে বহাল রেখে জিমির ওপর শাস্তি ধার্য করা হবে। অনেকের মতে, তবে সেই শাস্তির ঘোষণা শিথিলও হতে পারে। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক ফেডারেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অন্যায় করলে শাস্তি পেতেই হবে। সে যে কেউ হোক। তবে সেপ্টেম্বরেই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপ। আমাদের জন্য এ টুর্নামেন্ট অনেক বড়। তাই ওই টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে হয়তো জিমির শাস্তি কমাতেও পারেন জিবির কর্মকর্তারা। তবে শঙ্কার কথা হচ্ছে ছয় মাসের জন্য নিষিদ্ধ করা হলেও এশিয়া কাপে খেলতে পারবে না জিমি। যদিও অনেকেই মনে করছেন, বড় অঙ্কের আর্থিক দণ্ড দিয়েই এবারের মতো ক্ষমা করে দেয়া হতে পারে জিমিকে। এখন দেখা যাক কি হয় জিবি সভায়।’

No comments

Powered by Blogger.