আসামি শহীদুলের ফাঁসি বহাল

প্রায় দুই দশক আগে গুলশানের নিজ বাড়িতে শাজনীন তাসনিম রহমানকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় আসামি শহীদুল ইসলামের (শহীদ) মৃত্যুদণ্ড বহাল আছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে এই আসামির করা আবেদন (রিভিউ) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ গতকাল রোববার এ আদেশ দেন। যার মধ্য দিয়ে আইনি লড়াইয়ের ধাপ শেষ হলো। ঘটনার সময় শাজনীনদের বাড়ির গৃহভৃত্য ছিল শহীদ। আদালতে বাদীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী, এ এম আমিন উদ্দিন, এ এস এম আবদুল মবিন ও সরোয়ার আহমেদ। আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নিখিল কুমার সাহা, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
১৯৯৮ সালের ২৩ এপ্রিল রাতে গুলশানে নিজ বাড়িতে খুন হন শাজনীন তাসনিম রহমান। শাজনীনের বাবা লতিফুর রহমান ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান। ঘটনার সময় শাজনীন ঢাকার স্কলাস্টিকা স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। ওই ঘটনায় করা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার বিচার হয় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে। ২০০৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালত শাজনীনকে ধর্ষণ ও খুনের পরিকল্পনা এবং সহযোগিতার দায়ে ছয় আসামিকে ফাঁসির আদেশ দেন। তাঁরা হলেন শাজনীনদের বাড়ির গৃহভৃত্য শহীদ, বাড়ির সংস্কারকাজের দায়িত্ব পালনকারী ঠিকাদার সৈয়দ সাজ্জাদ মইনুদ্দিন হাসান ও তাঁর সহকারী বাদল, বাড়ির গৃহপরিচারিকা দুই বোন এস্তেমা খাতুন (মিনু) ও পারভীন এবং কাঠমিস্ত্রি শনিরাম মণ্ডল। বিচারিক আদালতের রায়ের পর এই মামলার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য হাইকোর্টে যায়। একই সঙ্গে আসামিরাও আপিল করেন। ২০০৬ সালের ১০ জুলাই হাইকোর্ট শনিরামকে খালাস দেন। বাকি পাঁচ আসামির ফাঁসির আদেশ বহাল রাখা হয়। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন চার আসামি হাসান, বাদল, মিনু ও পারভীন। ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি শহীদ জেল আপিল করেন। আপিল বিভাগ চার আসামির আপিল মঞ্জুর ও শহীদের জেল আপিল খারিজ করে গত ২ আগস্ট রায় দেন। আপিলের পূর্নাঙ্গ রায় প্রকাশের পর তা পুর্নবিবেচনা চেয়ে গত বছর আবেদন (রিভিউ) করেন শহীদ। গতকাল তা খারিজ হয়।

No comments

Powered by Blogger.