পাকা সড়কে মাটির স্তূপ, বৃষ্টিতে কাদায় একাকার

পাকা সড়কে ফেলা হয়েছে এঁটেল মাটি। বৃষ্টিতে সেই মাটি ভিজে সড়ক কাদায় একাকার। বেহাল সড়কে পথ চলতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে পথচারীরা। কাদায় গাড়ির চাকা আটকে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন চালকেরা। গতকাল রোববার বৃষ্টির পর বগুড়া শহরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এ অবস্থা দেখা যায়। সড়ক দুটি হলো রেলস্টেশন থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত এবং আবদুল জোব্বার সড়কের জাহাজ বিল্ডিং মোড় থেকে কালীবাড়ি মোড়। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্টেশন সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, রেলস্টেশন থেকে প্রেসক্লাব পর্যন্ত স্টেশন সড়কে কাদায় একাকার। পথচারীরা খালি পায়েও সড়কে চলাচল করতে পারছে না। চাকায় কাদা লেগে যাওয়ায় চালকেরা যাত্রী নিয়ে রিকশা টানতে পারছেন না। একই অবস্থা অটোরিকশা ও ইজিবাইকের। রিকশাচালক লজিমুদ্দন মিয়া বলেন, ‘পাকা সড়কত ইংকা করে কেউ মাটি ফালায়? গাদত মাটিত রিকশার চাকা আটকে যাচ্চে। ঠেলতে গেলে পা আটকে যাচ্চে।’ পথচারী শাহিদুল কবির বলেন, পাকা সড়কে এভাবে মাটি ফেলা কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ। কাদায় একাকার এই সড়ক দিয়ে হেঁটেও চলাচল করা যায় না। স্থানীয় চারজন ব্যবসায়ী বলেন, স্টেশন সড়কের পাশে রেলওয়ে ফল মার্কেটের পেছনে রেলওয়ে কলোনি ভরাট করে সেখানে রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট বিপণি কেন্দ্র নির্মাণ করছে।
প্রায় দেড় মাস ধরে কলোনির মাঠে মাটি ভরাট চলছে। অন্য জায়গা থেকে ট্রাকে করে মাটি এনে ফেলা হচ্ছে এখানে। আর এই মাটি আনার সময় ট্রাক থেকে মাটি পড়ে যাচ্ছে সড়কের ওপর। দেড় মাস ধরে সড়কের ওপর এঁটেল মাটির আস্তরণ পড়ছে। রেলওয়ে বগুড়ার সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সোবহান বলেন, রেলওয়ের জায়গা ভরাট করা হলেও বিপণি কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। কল্যাণ ট্রাস্টের সংশ্লিষ্টদের মাটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। এদিকে শহরের ব্যস্ততম শহীদ আবদুল জোব্বার সড়কের জাহাজ বিল্ডিং মোড় থেকে কালীবাড়ি মোড় পর্যন্ত সড়কেরও একই দশা। স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কের জলেশ্বরীতলায় একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। এই ভবন নির্মাণে প্রায় মাস খানেক ধরে খোঁড়া মাটি ট্রাকে করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছে। এ মাটি সড়কের ওপর পড়ে বেহাল অবস্থা। স্থানীয় আবুল মোনেম বলেন, জমা মাটি বৃষ্টির পানিতে কাদা হয়ে গেছে। চলাফেরা করা দায়। পৌর মেয়রের বাসার পাশে এমন দুরবস্থা হলেও পৌরসভা নীরব রয়েছে। তবে ওই রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান বলেন, পাকা সড়কে মাটি ফেলার বিষয়টি পৌরসভার নজরে এসেছে। দ্রুত সড়ক থেকে মাটি-কাদা অপসারণের জন্য পৌরসভার প্রকৌশল শাখা থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.