মালিবাগ-মৌচাক সড়কে অচলাবস্থা

মালিবাগ থেকে মৌচাক পর্যন্ত যানবাহন চলাচলে একরকম অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান সড়কের পশ্চিম দিকের রাস্তা বন্ধ। পূর্ব দিকের রাস্তা একমুখী চলাচলের আওতায় আনা হয়েছে। দুই দিকেই টানাভাবে বিশাল রাস্তা খোঁড়া এবং নর্দমা করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। একমুখী ভাঙাচোরা রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে রিকশা আরোহীরা আতঙ্কে থাকছেন সার্বক্ষণিকভাবে। অনেক যানবাহন বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছে। এ কারণে চৌধুরীপাড়া, রামপুরা ও হাতিরঝিলে প্রচণ্ড যানজট হচ্ছে। গত দুই দিন এলাকায় গিয়ে এ অবস্থা দেখা যায়। মালিবাগ থেকে মৌচাক প্রধান সড়কের পূর্ব দিকে ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ লাইন আর পশ্চিম দিকে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কেব্ল লাইনের জন্য রাস্তার দুরবস্থা। মাঝখানে উড়ালসড়ক ও এর নির্মাণসামগ্রী। খিলগাঁও তিলপাপাড়া এলাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে কারওয়ান বাজারে আসতে গিয়ে মহাদুর্ভোগে পড়েন বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বাবু আহমেদ। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আগে তাঁর গাড়িতে করে খিলগাঁও উড়ালসড়কে (ফ্লাইওভার) উঠে শাজাহানপুর, মালিবাগ চৌরাস্তা হয়ে মগবাজার পথে অফিসে আসতেন। মৌচাক-মগবাজার উড়ালসড়কের কাজে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে এই যাত্রার পরিবর্তন হয়েছে। গত কয়েক মাস মালিবাগ রেলগেট হয়ে অলিগলি পথে অফিসে আসছেন তিনি। কিন্তু এখন মালিবাগ থেকে মৌচাক পর্যন্ত রাস্তায় মোটরযান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁকে বিকল্প পথ ধরতে হয়েছে। বিকল্প পথটি হচ্ছে, চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেলের পাশ দিয়ে রামপুরা হয়ে। গত রোববার হাতিরঝিল পথে আসতে গিয়ে আটকা পড়ে তাঁর গাড়ি। শুধু হাতিরঝিল পেরোতেই ঘণ্টা পার হয়ে যায়। এরপর এফডিসির রাস্তায় আরেক দফায় যানজট। শুধু বাবু আহমেদ নন, লাখ লাখ মানুষ ভুক্তভোগী মৌচাক-মালিবাগ সড়কে অচলাবস্থার কারণে।
গত শুক্রবার সকালে চৌধুরীপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খিলগাঁও উড়ালসড়ক দিয়ে গাড়ি এসে মালিবাগ বাজার বা রেলগেটের দিকে না গিয়ে ঢুকে পড়ছে চৌধুরীপাড়ায়। পল্লীমা সংসদ হয়ে সাউথ পয়েন্ট স্কুলে যাওয়ার পুরো পথ যানবাহনে ঠাসা। যেসব গাড়ি আবুল হোটেলের পাশ দিয়ে রামপুরা হয়ে হাতিরঝিল বা বাড্ডার দিকে যাচ্ছে, সেগুলোকেও পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। সেখানে ঢাকা ওয়াসা ড্রেনেজ লাইনের জন্য রাস্তা খুঁড়েছে। বড় বড় পাইপ রাখায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। ইউলুপের ওপর দাঁড়িয়ে হাতিরঝিলে তাকিয়ে দেখা যায়, শুধু যানবাহনের সারি। কিছু সময়ের জন্য একরকম স্থবির হয়ে আছে। চলছে, আবার থেমে যাচ্ছে। রামপুরার দিক থেকে মৌচাকে যেতে ভোগান্তি আরও চরমে। ওয়াপদা রোডের বাসিন্দা নূরজাহান বেগম তাঁর মেয়েকে নিয়ে নিয়মিত সিদ্ধেশ্বরী কোচিং সেন্টারে যান। যাতায়াতের বিড়ম্বনার কথা তুলে ধরে গতকাল এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আগে মৌচাক পর্যন্ত যেতে রিকশা ভাড়া লাগত ২৫ টাকা। এখন মৌচাক মার্কেটের দক্ষিণে কোচিং সেন্টারে যেতে লাগে ৬০-৭০ টাকা। আরেক মেয়েকে ভিকারুননিসায় নিয়ে যেতে রিকশা ভাড়া দিতে হয় প্রায় ১০০ টাকা। ভাঙাচোরা রাস্তায় চলতে গিয়ে সার্বক্ষণিক আতঙ্কে থাকতে হয়। এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় গর্ত আর বিধ্বস্ত হওয়ায় চলাচলকারী বাসগুলো চলছে লাফিয়ে লাফিয়ে। বাসের ফাঁকে রিকশা, অটোরিকশা—এই বুঝি বাস গড়িয়ে পড়বে আরোহীদের গায়ে।

No comments

Powered by Blogger.