বার্নাব্যুতে ঘুম ভাঙার অপেক্ষা

পায়ে নিজের ব্র্যান্ডের জুতা, কানে হেডফোন—ইতিহাদে পরশু রোনালদো ছিলেন
বেশ আমুদে মেজাজে। সময়টাও খারাপ কাটেনি—কখনো মুঠোফোনে নিজেরই
ভিডিও দেখেছেন, সতীর্থ বোর্হা মায়োরালের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন আবার
সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সাবেক সতীর্থ ওয়েইন হারগ্রিভসকে
চ্যাম্পিয়নস লিগের থিম সংয়ের বদলে পরশু ম্যাচের আগে ইতিহাদে কেউ কি ঘুমপাড়ানি গান চালিয়ে দিয়েছিলেন? না হলে ম্যাচটা অমন ম্যাড়মেড়ে হওয়ার কারণ কী? শেষ দিকে খানিক ব্যতিক্রম, এ ছাড়া প্রায় ঘুমপাড়ানি একটা ম্যাচই তো হলো। যার প্রতিফলন রইল ম্যাচের ফলেও—গোলশূন্য ড্র। আগামী বুধবার বার্নাব্যুর দ্বিতীয় লেগেই এখন দুই দলের জেগে ওঠার অপেক্ষা। চ্যাম্পিয়নস লিগের রেকর্ড ১০ শিরোপাজয়ী রিয়াল মাদ্রিদের মুখোমুখি প্রথম সেমিফাইনালে ওঠা ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু ম্যাচে না কথা বলল রিয়ালের কৌলীন্য, না সিটির একটি প্রথমের উত্তেজনা। ম্যাচের আকর্ষণ অবশ্য ম্যাচ শুরুর আগেই কিছুটা মিইয়ে গেছে। ঊরুর চোট শেষ পর্যন্ত নামতে দেয়নি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে। এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে যিনি সর্বোচ্চ ১৬টি গোল করেছেন, রিয়ালের ২৬ গোলের ৭৭ শতাংশতেই যাঁর অবদান (গোল করে ও করিয়ে), তাঁর অনুপস্থিতির প্রভাব তো পড়ারই কথা। কিন্তু তাই বলে এমন হবে! শুধু রিয়াল নয়, প্রথমার্ধে সিটিও ছিল ‘ঘুমন্ত’। পোস্টে কোনো দলেরই শট নেই! প্রথমার্ধে বলার মতো ঘটনা চোট পেয়ে রিয়াল স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা ও সিটি মিডফিল্ডার ডেভিড সিলভার মাঠ ছেড়ে যাওয়া। বেনজেমার খেলা নিয়ে একটু সংশয় আছে, কিন্তু সিলভার আর খেলা হচ্ছে না বার্নাব্যুতে। ঘুমপাড়ানি প্রথমার্ধ শেষে দ্বিতীয়ার্ধ কিছুটা ‘ক্যাফেইনে’র স্বাদ দিয়েছে। আক্রমণ কিছু বাড়ে, রিয়ালেরই বেশি। ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দলের ভাগ্য ভালো, গোলপোস্টে জো হার্ট ছিলেন। শেষ দিকে রিয়াল ডিফেন্ডার পেপের একটি শট ঠেকিয়েছেন। আগে-পরে আরও কয়েকটি সেভ করে সিটির হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক রেখেছেন। ইংলিশ গোলরক্ষক এখন দ্বিতীয় লেগের অপেক্ষায়, ‘বার্নাব্যুতে ধুন্ধুমার, পুরোনো দিনের মতো একটা লড়াইয়ের মঞ্চ তৈরি হয়ে গেছে।’ সেই মঞ্চে কার জয়ের সুযোগ বেশি? রিয়ালকে জিততেই হবে, গোলশূন্য ড্র হলে খেলা গড়াবে অতিরিক্ত সময়ে, আর অন্য যেকোনো স্কোরে ড্র হলেই ফাইনালে চলে যাবে সিটি। ইংলিশ দলটির অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানির চোখে এই সমীকরণটা রিয়ালেরই অস্বস্তির কারণ, ‘গোলশূন্য ড্র, এটা আমাদের অ্যাওয়ে ম্যাচ হলে আমি স্বস্তিতে থাকতে পারতাম না।’ জিনেদিন জিদানের অবশ্য অস্বস্তিতে থাকার কথা নয়। রিয়ালের কোচ দুই দলেরই সমান সম্ভাবনা দেখেন, ‘ম্যাচ নিয়ে আমি খুশি। দ্বিতীয়ার্ধে ভালোই খেলেছি, কিছু সুযোগও পেয়েছি। তবে এই ম্যাচের আগে যেমন ৫০-৫০ ছিল, আমার মনে হয় এখনো তেমনই, ৫০-৫০।’ তবে এটি নিশ্চিত, ভারসাম্যটা যেকোনো একদিকেই ঝুঁকে পড়তে যাচ্ছে বার্নাব্যুতে!

No comments

Powered by Blogger.