শেয়ারবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা নিষ্ক্রিয়

শেয়ারবাজারে নিষ্ক্রিয় রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। নতুন করে শেয়ার কিনছে না তারা। আবার শেয়ার বিক্রি করছে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান। ফলে কমছে মূল্যসূচক ও বাজার মূলধন। গত দুই দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্যসূচক ৭৫ পয়েন্ট কমেছে। ফলে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার কোটি টাকা। এদিকে সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে দুটি বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে দর কষাকষি করছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন। এগুলো ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগসীমা সমন্বয়, পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউস এবং মার্চেন্ট ব্যাংকের নেগেটিভ ইক্যুইটি কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে স্বল্প সুদে তহবিল। সূত্র বলছে, মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউসগুলোর নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকের ২ হাজার ২শ’ কোটি টাকা এবং ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ৩ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মূলধনের চেয়ে নেতিবাচক ইক্যুইটি বেশি। ফলে শেয়ার বিক্রি করলেই এসব প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে যাবে। এছাড়াও আগামী বাজেটে মার্চেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চাওয়া হবে। এসব বিষয়ে দর কষাকষির কারণেই পরিকল্পিতভাবে বাজারে ধারাবাহিকভাবে পতন হচ্ছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে,
ডিএসইতে বুধবার ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের ১০ কোটি ৪৩ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ৩৫৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের দিনের চেয়ে যা ১২ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের, কমেছে ২২৪টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টি কোম্পানির শেয়ার। ডিএসইর ব্রড সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪২ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ২৩৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসই-৩০ মূল্যসূচক ১৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৩২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসই শরিয়া সূচক ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইর বাজার মূলধন আগের দিনের চেয়ে ৩ হাজার কোটি টাকা কমে ৩ লাখ ২ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। শীর্ষ দশ কোম্পানি : ডিএসইতে বুধবার যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হল যমুনা অয়েল, বিএসআরএম লিমিটেড, মবিল যুমনা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ইউনাইটেড পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মা, ডরিন পাওয়ার, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, পাওয়ার গ্রিড এবং ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস। বুধবার ডিএসইতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হল আইসিবি প্রথম এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, সপ্তম আইসিবি মিউচুয়াল ফান্ড, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, কেডিএস এক্সেসরিজ, প্রভাতি ইন্স্যুরেন্স, বার্জার পেইন্ট এবং হাক্কানি পাল্প। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হল সাফকো স্পিনিং, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন কেবলস, ন্যাশনাল টিউবস, বিচ হ্যাচারি, আইসিবি, জিএসপি ফাইন্যান্স, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, জাহিন টেক্সটাইল এবং নদার্ন জুটেক্স। জানতে চাইলে শেয়ারবাজার বিশেষজ্ঞ ইয়াওয়্যার সায়ীদ যুগান্তরকে বলেন, বাজারের কাঠামো ঠিক নেই। যে কারণে নতুন করে বিনিয়োগকারীরা বাজারে আসছে না। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এ সংকট কাটিয়ে বাজারে নতুন তহবিল আনতে হবে। ইয়াওয়্যার সায়ীদ বলেন, বাজার নিয়ে সবাই নিষ্ক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিনিয়োগযোগ্য অনেক শেয়ার রয়েছে। কিন্তু কেউ কিনছে না।

No comments

Powered by Blogger.