আস্থা নষ্ট করে এমন বক্তব্য না দিতে আহ্বান

পল্টন থানার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আরও ১৫ দিন জামিন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ গতকাল এ আদেশ দেয়। জামিনের এ মেয়াদ শেষে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে মির্জা ফখরুলকে। আপিল বিভাগে তার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা। হাইকোর্ট তিন মামলায় রুল নিষ্পত্তি করে মির্জা ফখরুলকে তিন মাসের জামিন দিয়েছিল। যার মেয়াদ শেষ হয় ২৪শে ফেব্রুয়ারি। তিন মাসের সংক্ষিপ্ত জামিন আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মির্জা ফখরুল গত ৭ই জানুয়ারি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। এ আবেদনের ব্যাপারে গতকাল আদেশ দেয় আপিল বিভাগ। এদিকে, বিচার বিভাগ নিয়ে দেয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আদালতে এ ব্যাখ্যা জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জনগণের মধ্যে বিচার বিভাগ নিয়ে আস্থার সঙ্কট তৈরি করে এমন কোনো বক্তব্য দেয়া বা কাজ করা থেকে রাজনীতিবিদ, সরকারের মন্ত্রীসহ সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি। ফখরুলের আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনারা রাজনীতিবিদরা বিচার বিভাগকে সরকারের অংশ বলে থাকেন। এটি ঠিক না। বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ। সংবিধান মানতে হলে বিচার বিভাগকে মানতে হবে। বিচার বিভাগের ওপর আস্থা হারায় এমন কিছু করবেন না। আইনজীবীরা বলেন, সরকারের মন্ত্রীও বলেন, আপনারা বলেন- তাহলে বিচার বিভাগ যাবে কোথায়?
আদালত নিয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আপিল বিভাগ সতর্ক করেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
রাষ্ট্রধর্ম: হাইকোর্টে শুনানি ২৭শে মার্চ
সংবিধানে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে অন্তর্ভুক্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের ওপর আগামী ২৭শে মার্চ চূড়ান্ত শুনানি শুরু হচ্ছে। বিচারপতি নাঈমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের তিন বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে এ নিয়ে শুনানি হতে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার হাইকোর্ট রুল শুনানির দিন ঠিক করে দেয়ার পাশাপাশি ১৪ জন আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে আদালতের আগের দেয়া আদেশও প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ১৯৮৮ সালের ৫ই জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীতে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সাবেক প্রধান বিচারপতি কামাল উদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন। তার ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ই জুন রিট আবেদনকারীর পক্ষ হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে। পঞ্চদশ সংশোধনীতে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখার বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করা হলে রুলে তাও অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে প্রধান বিচারপতি রুল শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করে দেন। একইসঙ্গে হাইকোর্ট ১৪ জন অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। যাদের মধ্যে এম জহির এবং মাহমুদুল ইসলাম মারা গেছেন। অন্যদিকে, রিট আবেদনকারীদের মধ্যে পাঁচ জন জীবিত আছেন।

No comments

Powered by Blogger.