ঢাকা প্রদর্শনীতে তিব্বত নিয়ে ভারতীয় শিল্পীদের কাজ নিয়ে বিতর্ক

ভারতের দু’জন শিল্পী অভিযোগ করেছেন, ঢাকায় একটি শিল্প প্রদর্শনীর উদ্যোক্তারা সে দেশে চীনা রাষ্ট্রদূতের হুমকির মুখে তাদের প্রদর্শিত শিল্পকলা ঢেকে দিতে বাধ্য হয়েছেন। শিল্পী রিতু সারিন ও তেনজিং সোনম রিতু সারিন ও তেনজিং সোনম বিবিসিকে জানিয়েছেন, যে তিব্বতিরা গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাদের নিয়ে ঢাকা আর্ট সামিটে তারা তাদের একটি কাজ তুলে ধরেছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত তা দেখে ভীষণ রেগে যান এবং উদ্যোক্তারা সেটি তখন ঢেকে দিতে বাধ্য হন। এই অভিযোগ নিয়ে ঢাকা আর্ট সিামিটের আয়োজকদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কথা বলেন নি। এ মাসের ৫ থেকে ৮ তারিখে ঢাকায় সামদানি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় যে ঢাকা আর্ট সামিট অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ধরমশালার এই শিল্পী দম্পতিকে। মিস সারিন বলেছেন, ওই প্রদর্শনীতে তারা নিয়ে গিয়েছিলেন ‘দ্য লাস্ট ওয়ার্ড’ নামে একটি কাজ – যেটি সাজানো হয়েছিল আত্মাহুতি দেওয়া তিব্বতি যুবকদের মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া শেষ কথাগুলো দিয়ে। তাতে ছিল মোট পাঁচটি চিঠি ও তার অনুবাদ। ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তারা ছিলেন এবং প্রথম দুদিন নির্বিঘ্নেই সেটি প্রদর্শিত হয়েছিল। ওই শিল্পী দম্পতির বক্তব্য অনুযায়ী, গণ্ডগোল বাঁধে শনিবার সন্ধ্যায় যখন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত মা মিংশিয়াং ওই প্রদর্শনীটি দেখতে আসেন। রিতু সারিন বলছেন, ‘‘উদ্যোক্তারা আমাদের জানান ওই কাজটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। কারণ চীনা রাষ্ট্রদূত সেটি দেখে খুবই ক্ষুব্ধ হয়েছেন।’’ উদ্যোক্তারা অবশ্য কাজটি একেবারে সরিয়ে দেননি, তখন দেওয়ালে সেটি রেখেই সাদা কাগজ দিয়ে তা ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। গোটা ঘটনায় ভীষণই হতাশ হয়েছেন সহশিল্পী তেনজিং সোনমও, যিনি নিজে একজন তিব্বতি শরণার্থীর সন্তান। তিনি বলেছেন, ‘‘চীনা দূতাবাসের আচরণে একজন তিব্বতি হিসেবে আমি হতাশ, ক্রুদ্ধ। তবে আমি অবাক নই, কারণ তিব্বত নিয়ে সারা দুনিয়ায় চীনারা এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানায়।” শিল্পীদের এই অভিযোগ নিয়ে সামদানি ফাউন্ডেশনের প্রশাসনিক প্রধান মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দিয়েছেন। আর ঢাকা আর্ট ফোরামের জনসংযোগের দিকটি দেখছে যে পিকলস পি আর নামে সংস্থা, তারা জানান এই বিষয়টি নিয়ে তারা অবহিত – এবং ই-মেইলে তারা এর জবাব দেবেন। কিন্তু এর পর ওই জনসংযোগ সংস্থাকে ই-মেইল করার পরও তারা তার কোনো জবাব দেননি।

No comments

Powered by Blogger.