দক্ষিণে মার্কিন যুদ্ধবিমানের মহড়া

উত্তর কোরিয়ার হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার ঘোষণার পর তাদের শক্তি দেখাতে দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে বি-৫২ যুদ্ধবিমান উড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দূরপাল্লার সাবসনিক ও জেটচালিত কৌশলগত এ বোমারু বিমান রোববার উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তের একটি মার্কিন ঘাঁটির কাছাকাছি চক্কর দেয়। উত্তর কোরিয়া হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষা করেছে এই ঘোষণার তিন দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিল। দক্ষিণ কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে দক্ষিণ কোরীয় সংবাদ সংস্থা ইয়োনহ্যাপ জানায়, রোববার গুয়ামের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্ডারসন বিমানঘাঁটি থেকে বি-৫২ বোমারু বিমানটি উড্ডয়ন করে। স্থানীয় সময় দুপুরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়েনেজি প্রদেশের আকাশসীমায় পৌঁছায়।
এই শক্তিশালী বিমানের সঙ্গে দুটি দক্ষিণ কোরিয়ার এফ-১৫ কে ও দুটি যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশ পরিভ্রমণ করছে। ওই ঘটনার পর থেকে সীমান্তে উত্তর কোরিয়াবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। পাল্টা প্রচারণা চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়াও। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছালে এ ধরনের প্রচারণায় নামে পিয়ংইয়ং ও সিউল। এই প্রচারণা চলার মধ্যে সিউল ও ওয়াশিংটন সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে মার্কিন বোমারু বিমান বি-৫২ চক্কর দেয়ার খবর দিল। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, বি-৫২ চক্কর দেয়ার বিষয়টি উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক উস্কানির জবাব। মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল টেরেন্স ও’শাউগনেসি বলেন, বন্ধু রাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার নিরাপত্তা সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র তার অঙ্গীকারের ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়। এমনকি উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে পেন্টাগন এ অঞ্চলে একটি রণতরী পাঠানোরও চিন্তা করছে বলে জানাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু যুদ্ধের হুমকি থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন।
রোববার তিনি দেশটির হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধে আত্মরক্ষার জন্য এ বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। উত্তর কোরিয়া গত বুধবার প্রথমবারের মতো সফলভাবে হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার দাবি জানায়। পিয়ংইয়ংয়ের এ পরীক্ষা নিশ্চিত হলে এটা হবে দেশটির চতুর্থ পারমাণবিক ও প্রথম হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা। এতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ক্ষুব্ধ হয়েছে এবং প্রতিবেশী দ. কোরিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা বেড়েছে। আণবিক বোমার চেয়েও আরও শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা। তবে তাদের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে সন্দেহ থাকলেও এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছে। কিম বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি রক্ষা ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পারমাণবিক যুদ্ধের বিপদ থেকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিধানে আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে এই হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, একটি সার্বভৌম দেশের এটা বৈধ অধিকার এবং এ ধরনের বৈধ কর্মকাণ্ডের কেউ সমালোচনা করতে পারে না। দ. কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)’র খবরে এ কথা বলা হয়েছে। কেসিএনএ জানায়, সফল পরীক্ষার জন্য পিপলস আর্মড ফোর্সেস মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানাতে ওই মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের পর কিম এ মন্তব্য করেন।

No comments

Powered by Blogger.