মাশরাফির কাছে মুখ্য জয়

সাকিব আল হাসান বলেছিলেন, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দাপুটে জয় চায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাশরাফি মুর্তজা চলতে চান ভিন্নপথে। তার কাছে দাপট দেখানোর চেয়ে জয়টাই জরুরি। বড় দলগুলোর বিপক্ষে টানা তিন সিরিজ জেতার পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজও তার কাছে চ্যালেঞ্জ-
প্রশ্ন : প্রস্তুতি ম্যাচে হেরে যাওয়াটাকে কিভাবে দেখছেন?
মাশরাফি : অবশ্যই হারতে ভালো লাগে না। সে জায়গা থেকে খুব খারাপ লেগেছে। ম্যাচ খেলার যে উদ্দেশ্য ছিল সে দিক থেকে বলতে গেলে- মুশফিক পুরোটা সময় ব্যাটিং করতে পেরেছে। লিটন কিছুটা পেরেছে, ইমরুল ছিল, সেও ফিফটি করেছে। আমি ৭ ওভার বোলিং করেছি। সব মিলিয়ে অনুশীলনের দরকার ছিল- সেটা হয়েছে।
প্রশ্ন : সাম্প্রতিক ভালো পারফরম্যান্স এই সিরিজে কী আপনাদের চাপে রাখবে ?
মাশরাফি : প্রতিটি সিরিজই চাপের এবং চ্যালেঞ্জের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তো সব সময়ই চ্যালেঞ্জ ছিল। গুরুত্বপূর্ণ হল যে, আমরা পরস্পরের সঙ্গ যেভাবে উপভোগ করে থাকি, সেভাবে করতে পারলে ভালো কিছু না হওয়ার কারণ নেই।
প্রশ্ন : আপনার অবস্থা এখন কেমন?
মাশরাফি : প্রস্তুতি ম্যাচে ৩৫ ওভার ফিল্ডিং করেছি। ৫০ ওভার করতে পারলে ভালো হতো। আসলে প্রথম ম্যাচ থেকে চাপ নেয়া কঠিন। বলতে পারি, একটা ম্যাচের আগে যেভাবে স্বাভাবিক থাকি, সেভাবে এখন নেই। তবে আমি আÍবিশ্বাসী। আরেকটু অনুশীলন করতে পারলে ভালো হতো। আসলে এটা বাংলাদেশ দলের খেলা। আর যখন মনে করি যে, আমি পারব তখন ঝুঁকিটা নিই।
প্রশ্ন : নিজেদের শক্তি, না প্রতিপক্ষের দুর্বলতা বিবেচনা করে একাদশ সাজানো হবে?
মাশরাফি : দুটো জিনিসই বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের দুর্বলতা এই মুহূর্তে আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর অন্যতম কারণ অবশ্যই উইকেট। একই সঙ্গে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, তারা কোন বোলার এবং কোন ধরনের আক্রমণে বেশি দুর্বল।
প্রশ্ন : জয়ের মানসিকতা...?
মাশরাফি : প্রস্তুতি ম্যাচ হেরেছি সেটা নিয়ে অবশ্যই ভাবছি। বাংলাদেশ দলের হয়ে আপনি যার বিপক্ষেই হারেন না কেন, ২০০৭ এর পর থেকে আমরা এই বিশ্বাস অর্জন করেছি যে, যে কাউকে হারাতে পারি। এখন ভালো খেলাটা জরুরি। প্রস্তুতি ম্যাচে হেরেছি। এ নিয়ে আমি চিন্তিত। তারা প্রায় ২৮০ রান তাড়া করেছে। অবশ্যই ভালো ব্যাটিং করেছে। তাদের হালকাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রশ্ন : তিনটি ম্যাচ জিতলে মাত্র এক পয়েন্ট পাবেন...?
মাশরাফি : এসব নিয়ে একেবারেই ভাবিনি। খেলতে যাওয়ার আগে এসব নিয়ে আলোচনা করা নেতিবাচক হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : হোয়াইটওয়াশ করার চিন্তাটা নিশ্চয় আছে?
মাশরাফি : সবাই প্রত্যাশা করছে। আমাদের পক্ষ থেকে এখনই এই বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। একটা সিরিজের জন্য প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচে খানিকটা চাপ থাকে। এই মুহূর্তে প্রথম ম্যাচ নিয়ে চিন্তা করছি।
প্রশ্ন : জিম্বাবুয়ের এই দলে অনেক পুরনো খেলোয়াড় নেই...?
মাশরাফি : আগের দলে ছিল মাসাকাদজা-টেলর। মাসাকাদজা জিম্বাবুয়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। উইলিয়ামসন ছিল না। আরভিন ছিল, কিন্তু একটা ম্যাচও খেলেনি। এরাও কিন্তু জিম্বাবুয়ের সেরা ক্রিকেটার। প্রস্তুতি ম্যাচ দেখে মনে হল, ওদের ব্যাটিং ভারসাম্যপূর্ণ। আফগানিস্তানের সঙ্গে ওরা হেরেছে। এখানে অবশ্যই ভালো কিছু করার লক্ষ্য থাকবে। আমার কাছে জয়টাই মুখ্য। হারাটাই লেখা হয়। শেষ পর্যন্ত জয়টাই থাকে। আমরা জিততে চাই।
প্রশ্ন : প্রস্তুতি ম্যাচে হারের পর সাকিবের ওপর কী দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল?
মাশরাফি : সাকিব বাংলাদেশ দলে সব সময় নির্ভরতার প্রতীক। শেষ কয়েকটি সিরিজে অন্যরা পারফর্ম করায় ওর ওপর চাপ কিছুটা কমেছে। সাকিবের দিকে পুরো বাংলাদেশই তাকিয়ে থাকে যে, ও কিছু একটা করবে। প্রস্তুতি ম্যাচের কম্বিনেশন থেকে জাতীয় দলে আমাদের কম্বিনেশন অনেক ভালো। বাংলাদেশ দলে আরও অপশন আছে ওদেরকে আটকানোর।
প্রশ্ন : সৌম্যকে মিস করবেন?
মাশরাফি : সৌম্যকে পুরো দল মিস করবে। শুধু ভালো ক্রিকেটারই নয়, দারুণ টিমমেটও। খুবই রোমাঞ্চকর ক্রিকেটার। শেষ ম্যাচেও ৮০-র বেশি রান করেছে। তবে এটা একটা ভালো সুযোগ অন্যদের জন্য। লিটন খেলেছে আগে, ইমরুল ফিরেছে। ওদের জন্য সুযোগ নিজেদের মেলে ধরার। যারা আছে তারাও ভালো করবে।
প্রশ্ন : জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং নিয়ে কী বলবেন?
মাশরাফি : বিশ্বের সবচেয়ে ভালো ক্লিন হিটারদের একজন চিগুম্বুরা। চিবাবা আছে টপ অর্ডারে, সেও রানে আছে। যতটা সহজ ভাবা হচ্ছে, ততটা সহজ হবে না। ৬০০ বলে আমাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। শেষ সিরিজে দক্ষিণ আফ্র্রিকার বিপক্ষে যেভাবে খেলেছি, সেভাবে খেলতে পারলে আশা করি সমস্যা হবে না। ক্রিকেট এমনই খেলা যে, একহাতে চেঞ্জ হয়ে যায়।
প্রশ্ন : সাকিব বলেছেন, দাপট দেখিয়ে জিততে চাই। আপনি কী বলবেন ?
মাশরাফি : একেকজনের বলার ধরন একেক রকম। মাঠে নেমে অবশ্যই আমি দাপট দেখাতে চাইব। তবে আগে জয়টা জরুরি। পরিকল্পনা করব আগে ম্যাচটা কিভাবে জিততে পারি। আসলে ভালো খেললে দাপট দেখানো হয়ে যায়।
পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে ওডিআই
দল সময় ম্যাচ জয় হার সাফল্য
বাংলাদেশ ১৯৯৭-২০১৪ ৬৪ ৩৬ ২৮ ৫৬.২৫%
জিম্বাবুয়ে ১৯৯৭-২০১৪ ৬৪ ২৮ ৩৬ ৪৩.৭৫%

No comments

Powered by Blogger.