৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি এনজিওকর্মী রেজাউলের by ওয়েছ খছরু

সিলেটে এনজিওকর্মী রেজাউল করিমের খোঁজ মিলছে না। কিস্তির টাকা তুলতে গিয়ে তিনি নিখোঁজ হয়েছিলেন। এরপর থেকে তার কোন খবর মিলছে না। এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানায় জিডি করা হয়েছে। র‌্যাবের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কিংবা র‌্যাব ৮ দিনেও তাকে খুঁজে বের করতে পারেনি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এলাকার মানুষ। নেমেছেন আন্দোলনে। রেজাউলের সন্ধান দাবিতে শহরতলির সাহেববাজারে বিক্ষোভ হয়েছে। এ বিক্ষোভের পর পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। এ কারণে রেজাউলের সন্ধান দাবিতে তারা ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে। বলেছে, এই সময়ের মধ্যে রেজাউল উদ্ধার না হলে সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। রেজাউল নিখোঁজের ঘটনায় প্রভাবশালী মহলের জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দিচ্ছে না এলাকাবাসী। রেজাউল করিমের বয়স ৩১ বছর। বাড়ি সিলেট শহরতলির সাহেববাজারে। পিতা তারা মিয়া। রেজাউল কাজ করতো এফআইভিডিবিতে। সালুটিকর অফিসের মাঠকর্মী ছিলেন তিনি। এ কারণে তাকে চষে বেড়াতে হতো গোয়াইনঘাটের গ্রামে গ্রামে। ঋণের কিস্তি তুলতে তিনি ছুটে যেতেন গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি। এরপর টাকা তুলে বিকালে ফিরতেন এফআইভিডিবির সালুটিকর কার্যালয়ে। সিলেটের গোয়াইনঘাট থানায় দায়ের করা জিডিতে অফিসের সহকর্মী ফরিদ আহমদ জানিয়েছেন, ৬ই সেপ্টেম্বর প্রতিদিনের মতো কিস্তির টাকা তুলতে গোয়াইনঘাটের পাইকরাজ গ্রামে যান তিনি। সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর সিলেট র‌্যাব-৯-এর কমান্ডিং অফিসারের কাছেও এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়। এদিকে, ৮ দিন ধরে নিখোঁজ এনজিও কর্মী রেজাউল করিমের সন্ধানের দাবিতে রোবববার বিকেলে সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে স্থানীয় সাহেববাজারে এক প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম তারা মিয়ার সভাপতিত্বে ও ডা. আমির আলীর পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ৩নং খাদিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসাইন। সভায় বক্তারা বলেন, ৬ই সেপ্টেম্বর এনজিও কর্মী রেজাউল করিম নিখোঁজ হওয়ার পর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। কিন্তু পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও সাত দিনে এর কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। ফলে জনমনে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। বিরাজ করছে সর্বমহলে আতঙ্ক। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। পুলিশ প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে রেজাউলের উদ্ধারের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন ইউনিয়নবাসী। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৬ই সেপ্টেম্বর নগরীর শারদা হলের সামনে মানববন্ধন ও ১৭ তারিখ ডিআইজি বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান। কিন্তু এরপরও কোন ফল না হলে বিমানবন্দর বাইপাস সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। প্রতিবাদ সমাবেশে নিখোঁজ রেজাউলের বাবা তালেব আলী ছেলের সন্ধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফআইবিডি এসিসটেন্ট ডাইরেক্টর মো. সমিক শহীদ জাহান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দিন ইমরান, শ্রমিক নেতা এম এ নুরুল ইসলাম, ইয়াংস্টার সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মো. আতাউর রহমান, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আনছার আলী, আব্দুল বাছিত, যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান, জাহিদ আহমদ প্রমুখ। এদিকে, রেজাউলকে খুঁজে বের করতে গতকালও গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। এর আগে পুলিশ একাধিকবারও অভিযান পরিচালনা করেন। কিন্তু এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

No comments

Powered by Blogger.