র‌্যাব–পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ছাত্রলীগের নিহত ২

আরজু মিয়া, মেহেদী হাসান (আজিবর)
এটা মানা যায় না: ছাত্রলীগ
অ্যাকশন শুরু: ওবায়দুল কাদের
মাত্র ছয় ঘণ্টার ব্যবধানে রাজধানী ও মাগুরায় ছাত্রলীগের বর্তমান এবং সাবেক দুই নেতা পুলিশ ও র‌্যা বের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। দুজনেরই স্বজনেরা বলেছেন, তাঁদের ধরে নিয়ে হত্যা করে ‘বন্দুকযুদ্ধে’র নাটক সাজানো হয়েছে। এরপর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, তাঁরা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড মেনে নেবেন না। তবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে।
রাজধানীর হাজারীবাগে গতকাল মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে র‌্যা বের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান হাজারীবাগ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া (২৮)। রাজা মিয়া (১৬) নামে এক কিশোরকে চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার প্রধান আসামি ছিলেন আরজু মিয়া। আরজুর মাথার ডানে-বাঁয়ে তিনটি ও বুকের বাঁ থেকে ডান পর্যন্ত সারি ধরে আরও তিনটি গুলির ছিদ্র পাওয়া গেছে। স্বজনদের দাবি, সন্ধ্যায় তাঁকে ধরে নিয়ে ভোরে হত্যা করেছে র‌্যা ব।
আর মাগুরায় ছাত্রলীগের গোলাগুলিতে মায়ের জঠরে শিশু গুলিবিদ্ধ ও একজন বৃদ্ধ নিহত হওয়ার মামলার তিন নম্বর আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আজিবর শেখ (৩৪) সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মাগুরার পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। আজিবর মাগুরা পৌর ছাত্রলীগের আগের কমিটির নেতা ছিলেন, এরপরে আর কোনো পদ পাননি। নিহতের স্বজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সোমবার বিকেলে আজিবরকে শালিখা থানা এলাকা থেকে ধরে এনে সদর থানা এলাকায় হত্যা করা হয়েছে।
কিছুদিন ধরে সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টায় একাধিক খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। বাড্ডায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের তিন নেতা হত্যা, জাতীয় শোক দিবসের দিন কুষ্টিয়ায় এক যুবলীগ নেতা হত্যা, চাঁদপুরের কচুয়ায় চাঁদার দাবিতে স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রীদের ওপর যুবলীগের হামলা, হাজারীবাগে ছাত্রলীগ নেতার এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এর আগে মাগুরায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে মায়ের পেটে শিশু গুলিবিদ্ধ হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের এ ধরনের অপরাধ প্রবণতায় ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছে দলের শীর্ষ পর্যায়। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে এক অনির্ধারিত আলোচনায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধী দলের হলেও ন্যূনতম কোনো সহানুভূতি দেখানো হবে না বলে জানিয়ে দেন। এরপরেই দুটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটল। এর আগে এই সরকারের আমলে অনেকগুলো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটলেও দলের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কিন্তু নিজ দলের দুই নেতা-কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তারা প্রকাশ্যে এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছে।
হাজারীবাগ থানা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে এই ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়েছে। এর সভাপতি ইলিয়াসুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক হামিদ গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, আরজু মিয়াকে সামান্য অজুহাতে র‌্যা বের কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করা হয়েছে। তাঁরা আরও বলেছেন, মেধাবী ছাত্রলীগ নেতা আরজু মিয়ার নামে কোনো থানায় কোনো মামলা ছিল না। ফলে এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাঁরা এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চেয়েছেন।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অকালমৃত্যু কারও কাম্য নয়। শিশুহত্যার ঘটনায় আমরা শোকাহত। কিন্তু আগে-পরে আমরা যেটা দেখেছি, সে গণপিটুনির শিকার। চুরির অপরাধে সাধারণ আমজনতা তাকে গণপিটুনি দিয়েছে। দোষ পড়েছে ছাত্রলীগ নেতার ওপর। তারপরও সে যদি দোষী হয়ে থাকে, তবে তদন্তের মাধ্যমে যথাযোগ্য শাস্তি হওয়া উচিত। আমরাও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতাম। কিন্তু বিচারবহির্ভূত এই হত্যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
তবে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা র‌্যা বের অতি বাড়াবাড়ি। রাজা গণধোলাইতে নিহত হয়েছে। এর বাইরে কিছু বলব না।’
আর ছাত্রলীগসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও অপরাধে জড়িয়ে পড়াসহ সামগ্রিক বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে। খুব দ্রুত এই প্রবণতা কমে যাবে। ইতিমধ্যেই তারা বার্তা পেয়ে গেছে।’ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগকে নেতা নয়, কর্মী উৎপাদনের কারখানা হতে হবে। কেউ খারাপ কাজ করলে দল তাকে ছাড় দেবে না।’
এদিকে, আরজু মিয়ার নিহত হওয়ার খবর শুনে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে নিহতের বড় ভাই মাসুদ রানাসহ এক থেকে দেড় শ নেতা-কর্মী মর্গে আসেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য সংগ্রহে গেলে কয়েকজন খেপে ওঠেন। তাঁরা সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোদের কারণেই আমাদের ভাইকে মরতে হলো।’
নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করেছে, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটার সময় সিকদার মেডিকেল কলেজের পেছনে বড়াইখালী এলাকায় র‌্যা ব-২ সাতমসজিদ ক্যাম্পের একটি দলের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান আরজু। তাঁর মাথায়, বুকে-পিঠে সাতটি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
পরে নিহতের ভাই মাসুদ রানা বলেন, সোমবার সন্ধ্যার দিকে হাজারীবাগ পার্কের সামনে থেকে আরজুকে ধরে নিয়ে যায় র‌্যা ব। আবার রাত ১১টার পর তাঁর মা জয়তুন্নেসা (৬৫) ও বোন রেহানা আক্তারকে (৩৫) ধরে নিয়ে থানায় বসিয়ে রাখে হাজারীবাগ থানার পুলিশ। পুলিশ আরজুকে হাজির করার জন্য চাপ দেয়। পরে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা কাগজে সই নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। বাসায় ফিরেই তাঁরা আরজুর নিহত হওয়ার খবর পান।
নিহতের বোন রেহানা বলেন, তিনি ও তাঁর মা থানার পার্কিংয়ে আরজুর মোটরসাইকেলটি দেখতে পান। থানায় আরজু ছিলেন না। পুলিশ উল্টো তাঁদের কাছে আরজুর খোঁজ জানতে চায়।
তবে র‌্যা বের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খানের দাবি, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আরজুকে গ্রেপ্তার করে র‌্যা ব। এরপর তাঁকে নিয়ে র‌্যা ব-২-এর একটি টহল দল অভিযানে যাচ্ছিল। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত আরজু মিয়াকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। র‌্যা বের সঙ্গে তাদের গোলাগুলি হয়। একপর‌্যায়ে আরজু মিয়াকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতের ভাই মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার ভাই চোর না। তার বিরুদ্ধে আগের কোনো মামলা নেই, জিডিও নেই। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আরজু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার।’ তিনি দাবি করেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিরোধী পক্ষ তখন থেকে তাঁর ক্ষতি করার জন্য লেগে ছিল। এ ছাড়া ২০ দিন আগে হাজারীবাগ থানার পুলিশ নিরীহ কয়েকজন চায়ের দোকানদারকে ধরে নিয়ে যেতে চাইলে আরজু বাধা দেন। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গেও তাঁর দ্বন্দ্ব হয়। এসব নিয়ে কোনো পক্ষ আরজুকে হত্যা করিয়েছে বলে সন্দেহ মাসুদের।
মাসুদ রানা দাবি করেন, কিশোর রাজাকে মারেননি আরজু। উল্টো রাজার স্বজনেরাই তাঁকে ‘পরিবারের সুনাম নষ্ট করার’ অভিযোগে মারধর করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের চারটা মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে গেছে। আর আমার ভাই যদি রাজাকে মেরেই থাকে, তাহলে পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে যেত। জিজ্ঞাসাবাদ করত। তাঁকে এভাবে মরতে হলো কেন?’
দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে আরজু সবার ছোট। আড়াই মাস আগে তাঁর বাবা মারা গেছেন। আরজু কবি নজরুল কলেজের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাঈনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, রাজা হত্যার ঘটনায় তাঁর বোন রেশমা বেগম বাদী হয়ে ১৩ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তিনজন আসামি সোমবারই গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মাগুরায় বন্দুকযুদ্ধ: মাগুরার ঘটনা নিয়ে পুলিশ অন্যান্য ‘বন্দুকযুদ্ধ’র মতোই একই ধরনের ঘটনার বিবরণ দিয়েছে বলে আমাদের মাগুরা প্রতিনিধি জানান। মাগুরার সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) সুদর্শন রায় বলেন, গত সোমবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে শহরের দোয়ারপাড়ে আল আমিন এতিমখানা সড়কে কয়েকজন সন্ত্রাসী অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। অভিযান চালাতে সেখানে পুলিশ গেলে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করলে পুলিশও পাল্টা গুলি করে। এ গুলিবিনিময়ের একপর‌্যায়ে আজিবর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুটি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সময় ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন।
তবে পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, মাগুরার শালিখা উপজেলার সীমাখালী বাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে গত সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে আজিবরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একদল পুলিশ লোকজনের জটলার মধ্য থেকে আজিবরকে টেনেহিঁচড়ে তাঁদের গাড়িতে তুলে শালিখা থানার দিকে নিয়ে যায়। জেলা পুলিশের একাধিক সূত্রও বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে বিকেলে গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করেছেন মাগুরার পুলিশ সুপার এ কে এম এহসান উল্লাহ।
পলাতক আসামি আজিবর শেখের পক্ষে ১৪ আগস্ট মাগুরা শহরে পোস্টার লাগানো হয়। ওই পোস্টারগুলো এক পক্ষ ছিঁড়ে তুলে ফেলে। পোস্টারের বাঁ পাশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ছবি এবং ডান পাশে প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব সাইফুজ্জামান শিখরের ছবি ছিল। পোস্টারে সবচেয়ে বড় ছবিটি ছিল আজিবর শেখের। পোস্টারের নিচের দিকে আজিবর ওই ঘটনা সম্পর্কে তাঁর কিছু বক্তব্য তুলে ধরেন। আজিবর দাবি করেন, তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। পোস্টারটি শহরের মানুষের মাঝে বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছিল। এর তিন দিনের মাথাতেই আজিবর নিহত হলেন।
আজিবরের লাশ মাগুরা সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল দুপুরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। নিহতের ছোট ভাই মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাই একজন ঠিকাদার ছিল। আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত। কেউ বলতে পারবে না সে চাঁদাবাজি বা সন্ত্রাসী কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার নামে আগে কোনো মামলাও নেই। ওই ঘটনার এক নম্বর আসামি সেন সুমন গ্রেপ্তার হইছে। আমার ভাই তো তিন নম্বর আসামি ছিল।’
আজিবরের বাবা আবদুল মালেক পক্ষাঘাতগ্রস্ত মুক্তিযোদ্ধা। আজিবরের বৃদ্ধ মা রূপবান বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্বামী দেশ স্বাধীন করে কী করল? ওই রাজনীতি করতি যাইয়েই তো আমার ছেলেডার জীবন গেল।’
আজিবরের স্ত্রী হুসনে আরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনীতি আমাদের সব শেষ করে দেছে। আমি এখন নাবালক বাচ্চাদের নিয়ে কোথায় যাব।’ চার বছর ও আড়াই বছর বয়সী দুটি ছেলে রয়েছে এই দম্পতির।
তবে মাগুরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু প্রথম আলোকে বলেন, সন্ত্রাসী কোনো দলের না। ওই ঘটনায় জড়িত কোনো সন্ত্রাসীর দায়ভার আওয়ামী লীগ নেবে না।
গত ২৩ জুলাই মাগুরা শহরের দোয়ারপাড় কারিগরপাড়ায় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের গোলাগুলির সময় আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাজমা খাতুন (৩৫) তলপেটে গুলিবিদ্ধ হন। মাগুরা সদর হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ কন্যাশিশুর জন্ম দেন। গুলি পেটের শিশুকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফেলে। মা ও শিশু এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই ঘটনায় নাজমার চাচাশ্বশুর মমিন ভুঁইয়া (৬৫) মারা যান। নিহত মমিন ভুঁইয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাকি ইমামের চাচা।
আজিবর শেখের কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনায় সুরাইয়ার বাবা বাচ্চু ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন আর কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস পাবে না।’

No comments

Powered by Blogger.