অনৈতিক ঘটনা ফাঁস করার হুমকি দেওয়ায় কিশোর খুন -তিন আসামির জবানবন্দি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অনৈতিক কাজের কথা ফাঁস করার হুমকি দেওয়ায় আশিক দেওয়ান নামের এক কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তিনজন জড়িত ছিলেন। তাঁরা সবাই ওই কিশোরের সহকর্মী।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলার তিন আসামি গত বুধ ও বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন। নিহত আশিক (১৫) উপজেলার আজগানা বেলতৈল গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে। গত ১৪ জুলাই পুলিশ উপজেলার চিতেশ্বরী কাঠবাগান থেকে আশিকের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তার বাবা ১৬ জুলাই মির্জাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আশিকদের বাড়িতে থেকে তাঁর চাচা ট্রাকচালক খাজা দেওয়ানের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার আবুডাঙ্গা গ্রামের মজিবর মোল্লার ছেলে সুজন (১৯)। কিছুদিন আগে সুজন তাঁর তিন সহযোগী মির্জাপুরের বেলতৈল গ্রামের শুকুর মিয়া (১৯), শরিফ সিকদার (১৯) ও সিরামিক এলাকার আলমগীর হোসেনকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে চিতেশ্বরীর কাঠবাগানে এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হন। শুকুর মিয়া মুঠোফোনে ওই ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করেন। ওই ভিডিও চিত্রটি দেখে ফেলে আশিক। এ ঘটনা সে তার চাচার কাছে প্রকাশ করবে বলে শুকুরকে হুমকি দেয়।
গত বুধবার ভোরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পুলিশ সুজনকে তাঁর গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তিনি টাঙ্গাইলের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তাঁর দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ শরিফ ও আলমগীরকে গত বুধবারই গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার তাঁরাও আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মির্জাপুরের বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন জানান, সুজন, শরীফ ও আলমগীর জবানবন্দিতে বলেন, চিতেশ্বরীর কাঠবাগানে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হওয়ার ঘটনার ভিডিও চিত্র ধারণ করা হয়। আশিক ওই ভিডিও চিত্র ফাঁস করার হুমকি দেওয়ায় ১৩ জুলাই সন্ধ্যার পর জরুরি কথা আছে বলে তাঁকে চিতেশ্বরী কাঠবাগান এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাঁরা হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে তাকে হত্যা করেন। হত্যার পর আশিকের লাশ জঙ্গলের পাশে একটি পুকুরে ফেলে তাঁরা চলে আসেন।
এসআই জাকির হোসেন আরও জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে গত বুধবার সুজনকে ও বৃহস্পতিবার অপর দুজনকে আদালতের মাধ্যমে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। শুকুরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.