সীমান্ত নিরাপত্তায় ঝুঁকি মানব না

চীনা সীমান্তে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি সহ্য করবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। দক্ষিণ চীন সাগর, পূর্বাঞ্চলীয় এলাকাসহ বিতর্কিত জলসীমায় অন্য দেশের আধিপত্য বিস্তারের বিরুদ্ধে সাবধান বাণী দিয়েছে তারা। শনিবার চীনের সেনাবাহিনী দিবস উপলক্ষে এমন ঘোষণা দেয় তারা। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনী চীনের। ১৯২৭ সালের ১ আগস্ট দেশটির পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, সেনাবাহিনী দিবস উদযাপনে দক্ষিণ ও পূর্ব চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমাসহ সীমান্ত লাগোয়া দেশগুলোকে হুশিয়ার করে দিয়েছে পিএলএ। গত কয়েক বছর ধরেই আধুনিকীকরণের ওপর জোর দিয়েছে তারা। প্রতিরক্ষা খাতে খরচও বাড়ানো হয়েছে একইসঙ্গে তাদের সাফাই, কাউকে আতঙ্কিত করা তাদের লক্ষ্য নয়। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে মজবুত করতেই অস্ত্রশস্ত্রের আধুনিকীরণের ওপর জোর দেয়া হয়েছে বলে এর মধ্যেই সাফাই দিয়েছে চীনা প্রশাসন।
চীনের সেনাবাহিনীর মুখপত্র পিপলস লিবারেশন আর্মি ডেইলিতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের দেশের আশপাশের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও যুদ্ধের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে গেছে।’ পূর্ব চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমা নিয়ে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত জলসীমা নিয়েও বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের রেষারেষি। প্রশান্ত মহাসাগরের প্রান্তিক অংশের ৩৫ লাখ বর্গকিমি. এলাকাই দক্ষিণ চীন সাগর নামে পরিচিত। সিঙ্গাপুর থেকে মানাক্কা প্রণালী ঘুরে তাইওয়ান প্রণালী পর্যন্ত বিশাল এলাকাজুড়ে এর বিস্তৃতি। এর চারপাশ ঘিরে রয়েছে চীন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ব্র“নাই ও ফিলিপিন্স। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বাণিজ্যিক জাহাজ এ সাগরের ওপর দিয়ে চলাচল করে। চীন এ সাগরের মালিকানা দাবি করে ঐতিহাসিক রেকর্ডের শি ও হান রাজবংশের কর্তৃত্ব অনুযায়ী। ১৯৪৭ সালে নাইন ড্যাশ লাইন হয়ে চিয়াং কাই শেক যতদূর অগ্রসর হয়েছিলেন। চীনা প্রজাতান্ত্রিক আমলে বেইজং দক্ষিণ চীন সাগরের জরিপ পরিচালনা ও মানচিত্র ঠিক করে। তখন ২৯১ দ্বীপপুঞ্জ ও প্রবাল দ্বীপ নিজেদের দাবি করে নামকরণ করে। দক্ষিণ চীন সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ ও বিদ্যমান দ্বীপপুঞ্জে সামরিক বেসামরিক অবকাঠামো তৈরি কয়েক দশক ধরেই চলে আসছে। প্রথম এ কাজ শুরু করেছে ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্স। বর্তমানে তারা যথাক্রমে ২১টি ও ৮টি দ্বীপে নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স ও তাইওয়ান প্রত্যেকেই তাদের কয়েকটি দ্বীপে সামরিক শক্তি মোতায়েন করেছে। দ্বীপ নির্মাণের খেলায় চীন এসেছে অনেক পরে। কিন্তু গত ১৮ মাসে দেশটি একা যা করেছে, তা ইতিহাসে অন্যরা সবাই মিলেও করতে পারেনি।
একনজরে চীনা সেনাবাহিনী
পিপলস লিবারেশন আর্মি
মিলিটারি কমিশনের প্রধান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
জাতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী
জেনারেল চাং ওয়ানকুয়ান
সেনাবাহিনী প্রধান
জেনারেল ফান ফেংঘুই
সক্রিয় সেনাসদস্য
২২ লাখ ৮৫ হাজার
রিজার্ভ সেনাসদস্য
৫ লাখ ১০ হাজার
প্রতিরক্ষা বাজেট
১৪ হাজার ১০০ কোটি ডলার

No comments

Powered by Blogger.