এক সৌদি যুবরাজের বিস্ময়কর উত্থান by কাজী আরিফ আহমেদ

সৌদি রাজতন্ত্রের পূর্বাকাশে নব-অরুণোদয় ঘটেছে। রাজপরিবারের ইতিহাসে এমনটা এর আগে ঘটেনি কখনও। বাহুবলে নয়; সততায়, নিষ্ঠায়, চারিত্রক বৈশিষ্ট্য, মেধায়, দক্ষতায়, রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় তিনি চিরাচরিত প্রথা ভেঙেছেন। মাত্র ২৯ বছর বয়সেই প্রতিভা আর যোগ্যতার বলে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতায় ঢের এগিয়ে থাকা যুবরাজদের পেছনে ফেলে সামনের কাতারে চলে এসেছেন। তিনি মোহাম্মদ বিন সালমান। এ বয়সেই দেশটির সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আসীন হয়েছেন তিনি। পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা পর্যন্ত তার প্রতিভায় মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন। তার মেধার পরিচয়ে বিমোহিত হয়েছেন তিনিও। তবে যেভাবে তিনি অন্য যুবরাজদের ডিঙিয়ে সামনে এলেন, তাতে ভবিষ্যতে রাজপরিবারে বিরোধের সুর বাজবে কিনা এবং সৌদি রাজতন্ত্রের চিরাচরিত ব্যবস্থায় চিড় ধরবে কিনা, তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। পক্ষে এবং বিপক্ষে রয়েছে বহু মত। তবে যুবরাজ মোহাম্মদকে সৌদি রাজতন্ত্রের আকাশের ‘উদীয়মান তারকা’ হিসেবেই ভাবা হচ্ছে। সম্প্রতি অনলাইন নিউ ইয়র্ক টাইমসে ‘সারপ্রাইজিং সাউদি রাইজেজ অ্যাজ আ প্রিন্স অ্যামং প্রিন্সেস’ শিরোনামে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি লিখেছেন ডেভিড ডি. কার্কপ্যাট্রিক। সে প্রতিবেদনটিই এখানে প্রকাশ করা হলো।
বড় ৩ সৎ ভাইয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার কাছে বড়ই অনুজ্জ্বল ছিলেন তিনি। এক ভাই সৌদি আরবের প্রথম মহাকাশচারী, অপর ভাই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়া রাষ্ট্র বিজ্ঞানী ও জর্জ টাউনের সাবেক রিসার্চ ফেলো, যিনি সৌদি আরবের শীর্ষ বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর একটির প্রতিষ্ঠাতা এবং অপরজন সৌদি আরবের জনপ্রিয় তেল বিষয়ক উপমন্ত্রী। কিন্তু, বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ (৭৯) রাজসিংহাসনে আরোহণের পর রাজনৈতিক পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার বিবেচনায় যুবরাজ মোহাম্মদই এখন ‘উদীয়মান তারকা’। তাকে ঘিরে একদিকে যেমন তৈরি হয়েছে আকাশচুম্বী প্রত্যাশা, বিপরীতে আশঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে কারও কারও মনে। বড় ৩ ভাইয়ের যোগ্যতার কাছে বেশ ম্লান যুবরাজ মোহাম্মদের শিক্ষাগত যোগ্যতা। পড়াশোনার জন্য সৌদি আরবের বাইরে কখনও পা রাখেননি তিনি। রাজধানী রিয়াদের কিং সউদ ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে  স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন তিনি।
দ্রুতই তিনি অন্য যে কোন সময়ের যুবরাজদের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠেছেন। রাজপরিবারে পদমর্যাদা বিন্যাস ও বন্টনে দীর্ঘদিনের প্রচলিত রীতিকে উল্টে দিয়েই তিনি অগ্রগণ্য হয়ে উঠেছেন। রাজপরিবারের ঐক্য সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে সচেষ্ট তিনি। সম্প্রতি সৌদি আরব আঞ্চলিকভাবে নিজের যে কর্তৃত্বপূর্ণ ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করেছে, ক্রমেই প্রভাবশালী হয়ে ওঠার সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মুখ্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। ইয়েমেনে সৌদি আরবের সামরিক মধ্যস্থতাও তার মধ্যে একটি। অনেকেই আশা করছেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রাষ্ট্রের নানাবিধ সঙ্কট মোকাবিলায় ও বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সৌদি আরব নব-চেহারা নিয়ে উদ্ভাসিত হবে, আর সেটা হবে ভবিষ্যত এ উত্তরাধিকারীর হাত ধরেই।
যুবরাজ মোহাম্মদের বড় ৩ সৎ ভাই তার পিতার প্রথম স্ত্রী সুলতানা বিনতে তুর্কি আল সুদাইরির সন্তান। ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তিন ভাই বেশ যোগ্যতাসম্পন্ন হওয়ায় তাদের সরকারি শীর্ষ পদগুলোর ভূমিকায় দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছিল। যুবরাজ সুলতান বিন সালমান আল সৌদ (৫৮) সৌদি বিমান বাহিনীর সাবেক কর্নেল। সাবেক এ মহাকাশচারী ১৯৮৫ সালে ‘স্পেস শাটল ডিসকভারি’ নভোযানের মহাকাশ যাত্রায় ছিলেন। বর্তমানে তিনি পর্যটন ও পুরাতত্ত্ব কমিশনের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। যুবরাজ আবদুল আজিজ বিন সালমান (৫৫) ডেপুটি তেলমন্ত্রী। জ্বালানি খাতের আধুনিকায়নে তিনি পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছেন। যুবরাজ ফয়সাল বিন সালমান (৪৪) অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রিধারী। জর্জটাউনে রিসার্ট ফেলো ছিলেন তিনি। সৌদি আরবের বৃহত্তম বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘জাদওয়া’ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি এবং মদিনার গভর্নরের দায়িত্বে রয়েছেন।
অথচ, রাজনীতিতে তাদেরকে ছাপিয়ে গেছেন ছোট ভাই মোহাম্মদ। সৌদি রাজসিংহাসনে আরোহণের ৪ মাসে বাদশাহ সালমান যোগ্যতার নিরীখে যুবরাজ মোহাম্মদকে রাষ্ট্রের তেল বাণিজ্য, সরকারি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান, অর্থনীতি বা শিল্প-বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পরিচালনার দায়িত্বে নিযুক্ত করেছেন। মিডল ইস্ট পলিসি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি আরবের সাবেক রাষ্ট্রদূত ফোর্ড এম. ফ্রেকার বলেছেন, স্পষ্টতই, বাদশাহ তার পুত্রকে নতুন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জনে অবিশ্বাস্যভাবে শিক্ষালাভের খাড়া একটি গ্রাফে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বলেন, বাদশাহ অবশ্যই উপলব্ধি করেছেন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত যুবরাজ।
ইয়েমেনে দুই মাসব্যাপী যে যুদ্ধ পরিচালিত হচ্ছে, সেখানে সৌদি আরবের সবচেয়ে দৃশ্যমান নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মোহাম্মদ এবং তার পিতা তাকে ‘ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স’ বা উপ-যুবরাজের উপাধিতে ভূষিত করেছেন। সিংহাসনে আরোহণের ক্ষেত্রে ডজনেরও বেশি উত্তরাধি যুবরাজকে পেছনে ঠেলে সামনের কাতারে জায়গা করে নিয়েছেন মোহাম্মদ। সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিতীয় সারির যুবরাজের মর্যাদা দেয়া হয়েছে তাকে। এদিকে বাদশাহ সালমান তার কনিষ্ঠ সৎ ভাই যুবরাজ মুকরিন বিন আবদুল আজিজকে (৬৯) সিংহাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে দেশটিতে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছেন। জনপ্রিয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উপ-যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফ (৫৫) তার স্থলে নতুন যুবরাজ হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন। সিংহাসনে আরোহণের ক্ষেত্রে বাদশাহ সালমানের ভাইয়ের পুত্র যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের কোন পুরুষ উত্তরাধিকারী নেই। আর তাই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানই সিংহাসনের পরবর্তী উত্তরাধিকারী।  
কিন্তু, পশ্চিমা কয়েক কূটনীতিক আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। যুবরাজের ক্রমেই বেড়ে চলা প্রভাব তাদের উদ্বেগের কারণ। একজন তো যুবরাজকে ‘অপরিণামদর্শী’ ও ‘আবেগতাড়িত’ বলেও আখ্যায়িত করেছেন। কয়েকটি সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের মুখ্য সারিতে থাকা কমপক্ষে দুই যুবরাজ জানিয়েছেন, রাজবংশের প্রবীণ কয়েক সদস্যের মনেও সংশয় ও সন্দেহ রয়েছে। যুবরাজ মোহাম্মদ ইয়েমেন হামলায় সামনে থেকে যে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সে হামলা সংক্রান্ত ব্যয় ও সুফল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
গত মাসে ক্যাম্প ডেভিডে ভূমধ্যসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর সম্মেলনে উভয় যুবরাজের সঙ্গে সাক্ষাতের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, প্রিন্স মোহাম্মদ ‘অত্যন্ত জ্ঞানসম্পন্ন এবং বেশ চটপটে’। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আল-অ্যারাবিয়া নেটওয়ার্ককে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেছেন, আমার মনে হয় তিনি তার বয়সের তুলনায় বিচক্ষণ। কিন্তু, বোদ্ধারা বলছেন, রাজপরিবারের একটি শাখার হাতে এতো দায়িত্ব হস্তানন্তর পরিবারের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা বন্টন বা ভাগাভাগির প্রচলিত ব্যবস্থার লঙ্ঘন। ৮ দশক আগে  আধুনিক সৌদি রাষ্ট্রব্যবস্থা  ক্ষমতা বন্টনের এ ব্যবস্থা কায়েম করেছিলেন। নতুন এ ব্যবস্থা প্রবর্তনের পর রাজপরিবারে দশকের পর দশক ধরে চলতে থাকা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সহিংসতার অবসান হয় এবং এরপর থেকেই রাজপরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঐক্য সুসংহত হয়।
যুবরাজরা আগে নিজেদের রাজসভা পরিচালনা করতেন। সামরিক, ন্যাশনাল গার্ড ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব যুবরাজদের ওপর ন্যস্ত থাকলেও, গুরুত্বপূর্ণ তেল ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তারা পেতেন না। তার দায়িত্ব থাকতো রাজপরিবারের বাইরে টেকনোক্র্যাটদের হাতে।
কিন্তু, বাদশাহ সালমান সে প্রথাকে উল্টে দিলেন। যুবরাজ মোহাম্মদকেই তিনি তার রাজসভার প্রথম প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করলেন। তিনিই রাজতন্ত্রের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তেল মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রীয় তেল প্রতিষ্ঠানকে সরিয়ে দিয়ে তা মোহাম্মদের অধীনে করে দিলেন। সদ্য প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক নীতি সংক্রান্ত কাউন্সিল ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণও ন্যস্ত করলেন তার হাতেই। এর আগে বাদশাহ সালমান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন। চাচাতো ভাই যুবরাজ মুতালিব বিন আবদুল্লাহর কাছ থেকে ন্যাশনাল গার্ডের দায়িত্বও বুঝে নেবেন যুবরাজ মোহাম্মদ, এমনটা আশা করা হচ্ছে।
বাদশাহ সালমানের তৃতীয় ও সর্বশেষ স্ত্রী ফাহদা বিনতে ফালাহ বিন সুলতানের প্রথম সন্তান মোহাম্মদ। পশ্চিমা কূটনীতিক যারা রাজপরিবার, পরিবারের কয়েক সদস্য ও সহযোগীদের সম্পর্কে ধারণা রাখেন, তাদের মতে স্বামীর সুযোগ্য উত্তরাধিকারী হিসেবে সন্তানকে গড়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তিনি।
অল্প বয়স থেকেই সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনের পরিকল্পনা এবং সে অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলেছেন যুবরাজ মোহাম্মদ। তার প্রজন্মের অন্য যুবরাজদের মতো যুবরাজ মোহাম্মদ কখনও ধূমপান করেননি, মদ্যপান করেননি বা রাত জাগেননি। একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলেছেন। নিজের ভাবমূর্তির বিষয়ে অল্প বয়স থেকেই বেশ সজাগ ছিলেন তিনি। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও সহযোগীদের মতে, পিতার পাশে সার্বক্ষণিক উপস্থিতি ছিল যুবরাজ মোহাম্মদের। পিতার কাছ থেকে রাজনীতির বহু কিছু শেখার সুযোগ পেয়েছেন। অবশেষে, আনুষ্ঠানিকভাবে পিতার উপদেষ্টা হিসেবে নিযুক্ত হন যুবরাজ মোহাম্মদ। সে সময় তিনি রাজধানী রিয়াদের গভর্নর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ সৌদি আরবের বর্তমান এবং সাবেক কূটনীতিকরা বলছেন, যুবরাজ মোহাম্মদকে তারা প্রায় চেনেনই না। কদাচিৎ হয়তো সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি, এমনকি রাজপরিবারের একনিষ্ঠ সমর্থক গণমাধ্যমের কাছেও।
যুবরাজ মোহাম্মদের জীবন-বৃত্তান্তে লেখা তিনি ‘আত্মকর্মসংস্থান’ করেছেন এবং বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতা হিসেবে কয়েকটি ব্যবসা ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার বিষয় উল্লেখ করেছেন। ব্যস! আইফোন ও অ্যাপলের অন্যান্য গ্যাজেটের দারুণ ভক্ত তিনি। প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ফাউন্ডেশন পরিচালনায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন তিনি। মূলত, সৌদি আরবের তরুণ প্রজন্মকে গড়ে তুলতে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে টুইটার ও ইউটিউবের ব্যবহার নিয়ে এবং আরবের সংস্কৃতি তুলে ধরতে জাপানের ‘ম্যাঙ্গা’ ধাঁচের কার্টুন তৈরির ব্যাপারে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
জাপান যুবরাজ মোহাম্মদের পছন্দের দেশ। বেশ আগে থেকেই জাপানের প্রতি টান রয়েছে তার। যুবরাজ প্রথম বিয়ে করার পর স্ত্রীকে নিয়ে জাপান ও মালদ্বীপে ২ মাসের জন্য মধুচন্দ্রিমা উদযাপন করতে গিয়েছিলেন।
এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিফলন দেখা গেলো জনমত জরিপেও। সম্প্রতি রাজধানী রিয়াদের রাস্তাঘাটে এ ধরনের একটি জরিপ পরিচালিত হয়। রাজবংশের প্রতিনিধি হিসেবে যুবরাজ মোহাম্মদকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন সৌদি আরবের ৩০ বছরের কম বয়সী জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশই।
সৌদিরা সাধারণভাবে ভিন্নমত পোষণে আগ্রহী নন। তবে কয়েকজন যুবরাজ মোহাম্মদের এ উত্থানে তাদের উদ্বেগ চাপা রাখলেন না। তারা সরকার পরিচালনায় যুবরাজের অসামান্য প্রতিভা, দক্ষতা ও পারদর্শিতা থাকার পরও তার বয়স নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। খেসারত হিসেবে নানা সমস্যায় পড়তে হবে বলে তাদের আশঙ্কা। আবু সালাহ এক মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি বললেন, আমরা ভবিষ্যত নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। এক ব্যবসায়ী আবু ফাহাদ বিলাসবহুল একটি হোটেলে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বলছিলেন, যুবরাজ মোহাম্মদ হয়ে উঠেছেন ‘সবজান্তা’। কিন্তু, তার বয়স মাত্র ২৯ বছর- তিনি কিইবা জানেন? তবে স্বীয় মেধা, যোগ্যতা, সততা, পরিশ্রম ও প্রজ্ঞার বলেই যে তিনি এতোদূর অগ্রসর হয়েছেন, তা নিয়ে দ্বিমত নেই কারও।

No comments

Powered by Blogger.