মিয়ানমার এখনও কোন আশ্বাস দেয়নি by মিজানুর রহমান

অপহরণের ৫দিন অতিবাহিত হলেও সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবি’র নায়েক আবদুর রাজ্জাককে এখনও ফেরত দেয়নি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। তাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে দেশটি কোন সুনির্দিষ্ট আশ্বাসও দেয়নি। গতকাল মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নেপিডোতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে নায়েক আবদুর রাজ্জাককে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে কোন সাড়া মিলেনি। ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক গতরাতে মানবজমিনকে ওই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু তাকে ফেরতের সুনির্দিষ্ট আশ্বাস এখনও পাইনি। তবে আমরা আশাবাদী যে ফেরত পাবো।
এদিকে, মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ বিজিপি’র জিম্মায় থাকা নায়েক আবদুর রাজ্জাককে ছাড়িয়ে আনার কূটনৈতিক তৎপরতার মধ্যেই তার আপত্তিকর তিনটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যায়, আবদুর রাজ্জাককে হাতকড়া পরানো। মুখে আঘাতের চিহ্ন। তার নাকের কাছে ক্ষত এবং শুকিয়ে কালচে হয়ে যাওয়া রক্তের দাগ। তার পরনে লুঙ্গি, গায়ে বিজিবি’র ইউনিফর্ম। সামনে কিছু অস্ত্র রাখা। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ ছবিগুলো প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা। প্রতিষ্ঠানটির বার্মিজ সার্ভিসের সাংবাদিক কো কো আং জানিয়েছেন দেশটির সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট সংবাদপত্র মায়াওয়াদিতেও ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যের ছবি  ফেসবুকে প্রকাশের পর বাংলাদেশব্যাপী ক্ষোভ ও  নিন্দার ঝড় ওঠেছে। অনেকেই ছবিগুলো ফেসবুকে  শেয়ার করছেন। তারা আটক সীমান্তরক্ষীর সঙ্গে অবমাননাকর আচরণের অভিযোগ তুলছেন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে।
এদিকে বাহিনী পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে দেশটির সাড়া না পেয়ে ঢাকার তরফে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। ঢাকাস্থ মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ঘটনার কড়া প্রতিবাদ এবং আটক বিজিবি সদস্যকে দ্রুত মুক্তির তাগিদ দেয়া হয়েছে প্রায় ৬০ ঘণ্টা আগে। কিন্তু কোন ফল হয়নি। রাষ্ট্রদূত মিও মিন্ট থান নেপিড’র সাড়া না পাওয়ার বিষয়টি এরইমধ্যে ঢাকাকে জানিয়েছেন। সর্বশেষ দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান মিয়ানমার পররাষ্ট্র দপ্তরের পার্মানেন্ট সেক্রেটারির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। একাধিক কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, গতকাল বিকালে বৈঠকটি হয়েছে। সেখানে বিজিপির হাতে আটক নায়েক রাজ্জাকের দ্রুত ফেরতের ব্যবস্থা নেয়ার জোর তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ দূত। ফেসবুকে প্রকাশিত আপত্তিকর ছবি নিয়েও কথা বলেছেন। অবশ্য মিয়ানমারের তরফে ভিন্ন বক্তব্য এসেছে। বলা হয়েছে, ওই সদস্য অবৈধভাবে দেশটির সীমান্তে ঢুকে গিয়েছিলেন। তার গায়ে বিজিবি’র পোশাক থাকলেও পরনে লুঙ্গি ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। আটক নায়েকের বিরুদ্ধে ইমিগ্রেশন আইনে ব্যবস্থা নেয়ার হতে পারে এমন আভাসও দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলাপে সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা গতকাল রাতে মানবজমিনকে বলেন, আটক বিজিবি সদস্যের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা এবং আইনি প্রক্রিয়ায় বিষয়টি নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়া মানেই তাকে এখনই তারা ফেরত দিতে চায় না সেটি স্পষ্ট। অন্তত আজকাল তো নয়ই। তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার আন্তর্জাতিক চাপে রয়েছে। ওই ইস্যু থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্যই তারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
উল্লেখ্য, এক বছরের মাথায় বিজিবি সদস্যদের ওপর মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ বা বিজিপি’র আক্রমণ এবং নায়েক পদমর্যাদার কোন কর্মকর্তাকে অপহরণের দ্বিতীয় ঘটনা এটি। গত বছরের ২৮শে মে বান্দরবানের পানছড়ি সীমান্তে কোন রকম  উস্‌কানি ছাড়াই বিজিবির সদস্যদের ওপর গুলি চালায় বিজেপি। সে সময় নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমানকে ধরে নিয়ে যায় তারা। পরে তাকে হত্যা করা হয়। অবশ্য ওই ঘটনায় দু’দিন সীমান্তে ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে নায়েক মিজানুর রহমানের লাশ হস্তান্তর করে বিজিপি। এবারের ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার রাতে। বিজিবি সূত্র জানায়, নায়েক রাজ্জাকের নেতৃত্বে বিজিবির ছয় সদস্যের একটি দল সেদিন মধ্যরাতে নাফ নদীতে টহল দেয়াকালে মিয়ানমারের রইগ্যাদং ক্যামেপর বিজিপির একটি দল ট্রলারে করে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করে। একপর্যায়ে টহল দলটি বিজিবির নৌযানের কাছে গিয়ে থামে।  বিজিপির ট্রলারটিকে বাংলাদেশের জলসীমা ছেড়ে যেতে বলা হলে তারা নায়েক রাজ্জাককে জোর করে ট্রলারে তুলে নেয়। এ সময় বিজিবির অন্য সদস্যরা বাধা দিলে দুইপক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। এতে বিজিবির সিপাহি বিপ্লব কুমার গুলিবিদ্ধ হন। এরপর বিজিপির ট্রলারটি রাজ্জাককে নিয়ে মিয়ানমারের দিকে চলে যায়। বিপ্লবকে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিজিবি বলছে, আটক রাজ্জাককে ফেরত চেয়ে কয়েক দিন ধরেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে বৃহসপতিবার সকালে টেকনাফ স্থলবন্দরের ডাকবাংলোতে পতাকা বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমার বলছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় বৈঠক হয়নি।
‘অবমাননাকর’ প্রচারণায় বিস্ময়
স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার থেকে জানান, বিজিবির বিরুদ্ধে মিয়ানমারের ‘অবমাননাকর’ প্রচারণায় বিস্মিত বিজিবির কর্মকর্তারা। এ ঘটনাকে অমানবিক উল্লেখ করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শুক্রবার ই-মেইল ও ফ্যাক্সযোগে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ পাঠানো হয় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে। এতে বলা হয়, বিজিবির একজন সদস্যকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন ও হাতকড়া পরিয়ে রাখা আন্তর্জাতিক কোনো আইনের মধ্যেই পড়ে না। এ ঘটনাকে মানবতাবিরোধী কাজ বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, এর মাধ্যমে শুধু বিজিবিকেই নয়, বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে অপমান করা হয়েছে। বিজিবি সূত্র জানায়, রাজ্জাককে ফেরত না দিয়ে বৃহসপতিবার রাত ১২টা ৪০ মিনিটে বিজিপির ফেসবুকে তিনটি ছবি প্রকাশ করা হয়। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাজ্জাকের সামনে তার অস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী রেখে তাকে আসামির মতো করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। আরেকটি ছবিতে তাকে হাতকড়া পরা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। বিজিবির কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল আনিসুর রহমান জানান, মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশের কাছে পতাকা বৈঠকে বসার জন্য দফায় দফায় চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে এখনও সাড়া মেলেনি। তাই কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমেও নায়েক রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকায় মানুষের ক্ষোভ
ওদিকে আমাদের টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি জানান, অপহৃত বিজিবি জওয়ানের ছবি ফেসবুকে প্রকাশের পর সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাকে একটি সীমান্ত ক্যামেপ হাতকড়া পড়ে আটকে রাখা হয়েছে। তার মুখমণ্ডলে রক্তের দাগ রয়েছে। ছবিটি যারা দেখছেন তারা হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। টেকনাফ ৪২ অধিনায়ক লে. মো. আবুজার আল জাহিদ জানান, মিয়ানমার সঙ্গে শনিবার  যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা এখনও কোন সাড়া দেয়নি। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেলে বৈঠকে আসবে বলে বিজিবিকে জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমার পক্ষ সাড়া দিলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নায়েক রাজ্জাককে ফেরত আনা হবে।
বিজিবি সদস্য অপহরণ জাতির জন্য লজ্জার: বিএনপি
স্টাফ রিপোর্টার জানান, বিজিবির নায়েক আবদুর রাজ্জাককে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা গোটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। একইসঙ্গে তাকে উদ্ধারে সরকারকে দ্রুত জোরদার তৎপরতা চালানোর পাশাপাশি মিয়ানমারকে সতর্ক করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে দলটি। গতকাল নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বিজিবি নায়েক রাজ্জাককে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী। তার প্যান্ট খুলে লুঙ্গি পরিয়ে হাতকড়া পরা একটি ছবি আমরা ফেসবুকে দেখলাম, যা মিয়ানমারের পত্রিকায় ছেপেছে। এ ঘটনা আমাদের গোটা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার। এই ছবি দেখে লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট হয়ে গেছে। বিজিবি মহাপরিচালকের সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিরোধী দলের আন্দোলন দমনের সময় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ গর্ব করে বলেছিলেন, আমাদেরকে অস্ত্র দেয়া হয় ব্যবহার করার জন্য। আমরাও বিশ্বাস করি বিজিবির অস্ত্র আইন সম্মতভাবে ব্যবহার করার জন্যই। কিন্তু সীমান্ত রক্ষায় দায়িত্ব পালনের সময় অস্ত্র থাকার পরও বিজিবি সদস্য অপহৃত হয়ে যায়। আমি প্রশ্ন করতে চাই- তখন তারা অস্ত্র দিয়ে কি করেন। বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করেন, বিজিবির দায়িত্ব বিরোধী দলের আন্দোলন দমানোর জন্য নয়, তাদের দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা। সরকার যথাযথভাবে বিজিবিকে ব্যবহার করছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, আবদুর রাজ্জাককে ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে  ভবিষ্যতে এমন অপমানজনকভাবে কোন বিদেশী রাষ্ট্র বিজিবি সদস্যদের যাতে তুলে নিতে না পারে সেজন্য সরকারকে সক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দলের নেতাদের মুক্তির দাবি জানিয়ে রিপন বলেন, এখন মাঠে কোন আন্দোলন নেই, রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। তা সত্ত্বেও আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদসহ অনেক নেতৃবৃন্দ কারাগারেই রয়েছেন। এটা দুঃখজনক। রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি বাংলাদেশে অতীতে দেখা গেলেও এবার সরকারের আচরণে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আর হানাহানি নয়, বিভেদ নয়। রাজনৈতিক কারণে আমরা একে অপরের বিরোধিতা করবো, সমালোচনা করবো। তবে তা যেন প্রতিহিংসামূলক না হয়, অন্য কোন রাজনীতি দলকে ধ্বংস করার জন্য না হয়। রমজান মাসের কথা বিবেচনা করে সরকার বিরোধী নেতাদের মুক্তি দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন- রমজানের আগে দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। কিন্তু বাণিজ্যমন্ত্রী তার কথা রাখতে পারেননি। বরাবরের মতো এবারও রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। তিনি বলেন, এখনও সময় আছে, তিনি ভেজাল বিরোধী অভিযান জোরদার করেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসেন তাহলে রোজাদার জন্য রোজা অনেকটা প্রতিপালন সহজ হতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি বিএনপির যুববিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ-দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.