লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড

লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে নতুন করে চারটি অভিযোগ উঠেছে সরকারি এক প্রতবেদনে। অভিযোগগুলো নির্বাচনে জালিয়াতির। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পুনরায় তদন্ত করতে যাচ্ছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। তারা নিশ্চিত করেছে যে, গত সপ্তাহে লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে কিছু নতুন বিষয় ছিল, যা আগে তাদের কাছে উল্লেখ করা হয়নি। এর ফলে বৃটেনের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র লুৎফর রহমান ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত পুনরায় করা হতে পারে। এর আগে তদন্তের সমাপ্তি ঘোষণা করেছিল লন্ডন মেট্রোপলিটান পুলিশ। তারা কেন এ অভিযোগগুলো প্রকাশ করে নি বা এড়িয়ে গেছে তা নিয়ে পুলিশের তখনকার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ। এদিকে পুলিশ স্বীকার করেছে, নতুন অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার ব্যাপারে তাদের ক্ষমতা ছিল না। কেননা, নির্বাচনী আইনে যেকোন অভিযোগ তদন্তের ওপর ১২ মাসের একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে।  এ সময় এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী তারা এ তদন্তের বিষয়ে ক্ষমতাহীন। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম রয়েছে। পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ বিষয়টি ব্যতিক্রমী। এ জন্য পুলিশকে তদন্তের জন্য অতিরিক্ত সময় মঞ্জুর করা হয়েছে। পুলিশ মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে নতুন চারটি অভিযোগ নিরীক্ষা করা হবে। এর পরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পূর্ণ ফৌজদারি তদন্ত শুরু হবে কিনা। গত সপ্তাহে ইলেকশন কমিশনার রিচার্ড মরি হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে এক শুনানিতে লুৎফর রহমানকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে পরবর্তী নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা দেন। তাকে সরিয়ে দিয়ে অবিলম্বে নতুন নির্বাচন দেয়ার আদেশ দেন বিচারক। লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ চর্চার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ আদেশ দেন রিচার্ড মরি। প্রায় আড়াই লাখ জনসংখ্যার টাওয়ার হ্যামলেটের সাবেক মেয়র লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী দুর্নীতির অভিযোগসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। পদত্যাগে বাধ্য করা ও পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নিষেধাজ্ঞার বাইরেও লুৎফর রহমানকে আড়াই লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। এ অর্থ পরিশোধে বৃহসপতিবার সন্ধ্যায় এক সমাবেশে নিজের সমর্থকদের কাছ থেকে ৫ হাজার পাউন্ড করে চাঁদা দেয়ার আবেদন জানান তিনি। সেখানে রাবিনা খান নামের আরেক বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কাউন্সিলরকে নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন তিনি। এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণাও দেন লুৎফর রহমান। প্রসঙ্গত, গত বছর এক বিতর্কিত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী লুৎফর রহমান ৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন।

No comments

Powered by Blogger.