কাছির গাউ দ্য কাউ!

ভারতীয় সমাজে আদরনীয় গরু নিয়ে ফ্যাশন
আলোকচিত্রী টনি মেনেগুজ্জোর বিশেষ
আলোকচিত্রমালার একটি ছবি। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
‘দ্য কাউ ইজ আ ডমিস্টিক অ্যানিমেল, ইট হ্যাজ ফোর লেগস।’ স্কুলে থাকতে এই বাক্য আমাদের অনেককেই পড়তে-লিখতে হয়েছে। কিন্তু চারপেয়ে গরুই যদি খোদ দুপেয়েদের স্কুল-কলেজে লেখাপড়া শুরু করে দেয়! বাস্তবে সেটা সম্ভব হোক বা না হোক, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পলিটেকনিকের ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশপত্র পেয়েছে ‘কাছির গাউ’ নামের একটি গরু!
রোববার গরুর ছবিসহ ওই প্রবেশপত্রের ছবি টুইটার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে। সরকারি দলের সমালোচনায় নেমে এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক জোট, সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও।
দ্য জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর বোর্ড অব প্রফেশনাল এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন-এর ইস্যু করা ওই প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর নাম ‘কাছির গাউ’, কাশ্মীরি ভাষায় এর অর্থ বাদামি গরু। পিতার নাম ‘গুর ডান্ড’ যার অর্থ ষাঁড়। চলতি মাসের ১০ তারিখে ওই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
জম্মু-কাশ্মীরের বিরোধী রাজনৈতিক জোট ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র জুনাইদ আহমেদ মাট্টু প্রবেশপত্রটির ছবি টুইট করলে এ নিয়ে হাস্যকৌতুক শুরু হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে তুমুল হাস্যরসের পাশাপাশি এ নিয়ে গরম হয়ে উঠছে রাজনীতির মাঠও। ক্ষমতাসীন পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির কাছ থেকে বিব্রতকর এই ঘটনার ব্যাখ্যা দাবি করেছে ন্যাশনাল কনফারেন্স নামের এই বিরোধী জোট।
এই শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ফারুক আহমেদ মীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, প্রবেশপত্র দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটিই একটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পরিচালিত। কেউ একজন ভুল তথ্য-উপাত্ত দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কর্তৃপক্ষ অবশ্যই সেই ‘প্রাঙ্কস্টার’-কে খুঁজে বের করবে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন,‘ফরম পূরণ করা থেকে শুরু করে প্রবেশপত্র ইস্যু করা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটিই কম্পিউটারে সম্পন্ন। এতে একটি ছবি শনাক্তকরণ সফটওয়্যারও আছে, যা মানুষ আর প্রাণীর চেহারা আলাদা করতে পারেনি। কেউ একজন এই রসিকতা করেছে। আমরা তাঁর আইপি ঠিকানা খুঁজে বের করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
বিরোধী জোটের মুখপাত্র মাট্টু এ নিয়ে করা বেশ কয়েকটি টুইটের একটিতে লেখেন,‘বোর্ড এই ভর্তি পরীক্ষার জন্য যাচাই-বাছাইয়ের পর কাছির গাউকে একটা রোল নম্বর দিয়েছে। আমার কাছে কাছির গাউয়ের আবেদনপত্রের সাময়িক প্রবেশপত্রের সঙ্গে বোর্ডকে দেওয়া পরীক্ষা ফির পেজের ছবিও আছে।’ তিনি আরও লিখেছেন,‘শিক্ষামন্ত্রীর নিশ্চয়ই এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার আছে।’
জম্মু ও কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী জোট ন্যাশনাল কনফারেন্সের সভাপতি ওমর আবদুল্লাহ টুইট করেছেন,‘ব্রিলিয়ান্ট। আমি চাই কাছির গাউ ওই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারুক।’
এ ঘটনার পর এক অনানুষ্ঠানিক নির্দেশে বোর্ডকে ওয়েবসাইট থেকে কাছির গাউয়ের আবেদন ও প্রবেশপত্র সংক্রান্ত রেকর্ড মুছে দিতে বলেছে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য সরকার।

No comments

Powered by Blogger.