ভুয়া কাবিননামায় বিয়ে, অতঃপর...

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম গ্রামের তহির উদ্দিনের সুন্দরী কন্যা তহুজা বেগম (২৩) এক দারোগার খপ্পরে পড়ে প্রতারণার  শিকার হয়েছেন। তার স্বামী-সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশ কর্মকর্তার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তহুজা। তিনি জানান, সুন্দরী হয়ে জন্ম নেয়াটাই তার আজন্ম পাপ। তহুজা বেগম বলেন, ২০০৫ সালে ঘটা করে তার বিয়ে হয় গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া থানার শাহিন মিয়ার ছেলে আবু সায়েমের সাথে। ২০০৬ সালে স্বামী-স্ত্রী সৌদি আরবে যান চাকরি করার জন্য। ২০১১ সালে সৌদি আরব থেকে ফিরে আসেন গ্রামের বাড়িতে। সুখে শান্তিতে বসবাস করার একপর্যায়ে তহুজা বেগম বাবার বাড়ী কিশোরগঞ্জের পশ্চিম দলিরাম গ্রামে বেড়াতে আসেন। একপর্যায়ে পরিচয় হয় কিশোরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পুষনা গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে ডেসটিনির এজেন্ট আহাদুল ইসলামের সাথে। আহাদুল ইসলাম তহুজাকে ডেসটিনির সদস্য হতে বলেন। সহজ সরল তহুজা তার কথায় রাজি হয়ে ২০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্য হন। পরে আহাদুল ২ টাকার জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্পে ২০ হাজার টাকা ফেরত না দেয়ার জন্য কৌশলে তহুজার স্বাক্ষর নেন। তহুজা আহাদুলের চালাকি ধরতে পেরে এবং ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার জন্য আহাদুলের বিরুদ্ধে জিডি করতে কিশোরগঞ্জ থানার ওই ডিউটি অফিসার এএসআই আবদুর রউফের কাছে যান। জিডি করার সূত্র ধরে পরিচয় হয় প্রতারক পুলিশ অফিসারের সাথে। পুলিশ অফিসার আবদুর রউফ তহুজার রূপ ও সরলতার সুযোগ নিয়ে তার বাড়িতে যাওয়া-আসা শুরু করেন। তহুজা স্বামী-সন্তান নিয়ে যেখানে থাকেন তার ঠিকানা নেন পুলিশ অফিসার আবদুর রউফ। একপর্যায়ে এএসআই আবদুর রউফ কিশোরগঞ্জ থানা থেকে ট্রান্সফার হয়ে ঢাকায় র‌্যাবে যোগদান করেন এবং তহুজার বাসা হেমায়েত পুরের মোল্লাবাড়ীতে যাওয়া-আসা শুরু করেন। একদিন তহুজার স্বামীর অবর্তমানে বাসায় গিয়ে তাকে বিয়ে করার কথা বলে ধর্ষণ করে এবং তহুজার স্বামী আবু সায়েমকে তালাক দিতে বাধ্য করে। মেয়েটিকে আবদুর রউফের ভাড়া বাসায় নিয়ে গিয়ে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর করে বিয়ের নামে কাবিননামায় স্বাক্ষর নেন। তহুজার সাথে সেখানে সাত মাস ঘর-সংসার করেন আবদুর রউফ। নারীলোভী দারোগা একদিন হুট করে তাকে না জানিয়ে ট্রান্সফার হয়ে চলে আসেন নীলফামারীর ডোমার থানায়। এএসআই আবদুর রউফ বিয়ে অস্বীকার করে আসছেন। তহুজা স্বামীর দাবি নিয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ধরনা দিচ্ছেন বিচারের আশায়। ডোমার থানায় কর্মরত এএসআই আবদুর রউফের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তহুজাকে দুই মাস আগে তালাক দিয়েছেন বলে দাবি করেন। কি কারণে তালাক দিলেন এর কোন সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।

No comments

Powered by Blogger.