ফের গুম আতঙ্ক

ফের গুম আতঙ্কে ভুগছেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের  নেতাকর্মীরা। গত এক সপ্তাহে ছাত্রদলের দুই নেতাসহ কয়েকজনকে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে অস্বীকারের পর এ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে শুক্রবার রাজধানীর শুক্রাবাদ এলাকা থেকে ছাত্রদলের জুয়েল-হাবিব কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। কিন্তু পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। এর আগে ২৬শে ফেব্রুয়ারি দুপুর সোয়া দুইটার দিকে যমুনা ফিউচার পার্কের দ্বিতীয়তলা থেকে ছাত্রদল তিতুমীর কলেজ শাখার কর্মী মেহেদী হাসান রুয়েলকে আটক করে সাদা পোশাকধারী পুলিশ। এ সময় তার সঙ্গে একই কলেজের শুভ নামে আরেক ছাত্রকেও আটক করে পুলিশ। কিন্তু শুভকে এয়ারপোর্ট এলাকায় ছেড়ে দেয়া হলেও তারপর থেকে খোঁজ মেলেনি মেহেদী হাসানের। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফে মেহেদীকে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। ওদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের ব্যক্তিগত সহকারী ও দুই গাড়িচালককে সাদা পোশাকের পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের স্বজনরা। তবে তাদের আটকের বিষয়টি অস্বীকার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। শনিবার রাতে মিরপুর থেকে ব্যক্তিগত সহকারী ওসমান গণিকে এবং সালাহউদ্দিনের গুলশানের বাসার সামনে থেকে তার গাড়িচালক শফিক ও খোকনকে ধরে নিয়ে যায় সাদা পোশাকের পুলিশ। সালাহউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এদিকে ওসমান গণির স্ত্রী শিখা বলেন, শনিবার রাত সাড়ে তিনটা-চারটার দিকে আট-দশজন সাদা পোশাকধারী লোক তাদের বাসায় প্রবেশ করে। বাইরে দুজন র‌্যাবের পোশাকে ছিল। তারা ওসমান গণিকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বলেছে, ঠিক ঠিক তথ্য দিলে তাকে ছেড়ে দেবে। এরপর থেকে ওই তিনজনের খোঁজ নেই বলে স্বজনরা জানান। শিখা আরও জানান, র‌্যাব সদর দপ্তরে ওসমানের খোঁজ নিতে গেলে তারা আটকের কথা অস্বীকার করে। এদিকে ছাত্রনেতা খোকনকে অবিলম্বে আদালতে উপস্থাপন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনকে আটক এবং পরে তা অস্বীকার করায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমাদের আশঙ্কা- খোকনকে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার করায় যে কোন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কারণ দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদেরকে গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার ও পরে বন্দুকযুদ্ধের মিথ্যা গল্প ফেঁদে হত্যা করার যে রেওয়াজ চালু হয়েছে তাতে এখন রাষ্ট্রের কোন নাগরিকেরই জানমালের নিরাপত্তা নেই। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, ছাত্রনেতা আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হোক। অন্যথায় আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের কোন ক্ষতি হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারকে এর দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে। আমরা অবিলম্বে আনিসুর রহমান তালুকদার খোকনের অবস্থান তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া বা তাকে আদালতে উপস্থাপনের জোর দাবি জানাচ্ছি।

No comments

Powered by Blogger.