‘বান কি-মুন নির্বাচন নিয়ে কথা বলেননি’

জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৌজন্য বৈঠকে ৫ই জানুয়ারি নির্বাচন নিয়ে  কোন কথা হয়নি বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি জানিয়েছেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক যাওয়ার আগে জাতিসংঘ মহাসচিব এক বাণীতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। রাজনৈতিক বিরোধ নিষ্পত্তিতে বৃহৎ আঙ্গিকে সমঝোতার তাগিদ দিয়েছিলেন। হাসিনা-মুন বৈঠকে রাজনৈতিক সংলাপ বা সমঝোতা নিয়ে কোন কথা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই বার্তায় তিনি যা বলেছেন, যেভাবে সংলাপ ও সমঝোতার তাগিদ দিয়েছেন, বৈঠকে তার বিন্দুমাত্রও বলেননি। বরং জাতিসংঘ মহাসচিব নির্বাচন-পরবর্তী দেশে যে স্থিতিশীলতা এসেছে, শেখ হাসিনা এটি যেভাবে ধরে রেখেছেন তার প্রশংসা করেছেন। ওই বৈঠকের বিষয়ে একাধিক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষেপে গিয়ে বলেন, আমি বলছি নির্বাচন নিয়ে তিনি (মহাসচিব) কোন কথা বলেননি। বিশ্বাস না হলে বান কি-মুন সাহেবকে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রী। নিউ ইয়র্ক সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র  মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠক প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উভয় নেতার  বৈঠক অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে। তিস্তা ও সীমান্ত সমস্যাসহ অন্যান্য অমীমাংসিত ইস্যু সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন মোদি। তিনি জানিয়েছেন, আগের সরকারের কাজের ধারাবাহিকতায় দ্বিপক্ষীয় ইস্যুগুলোর সমাধানে তিনি একটি পথ বের করার চেষ্টা করছেন। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নেপাল ও ভুটানকে নিয়ে ট্রানজিটের বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চান। তবে ভারতের তরফে কি জবাব মিলছে তা জানাননি মন্ত্রী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সার্ক স্যাটেলাইট স্থাপনের বিষয়ে তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি প্রতিবেশীদের নিয়ে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। শেখ হাসিনাও একই অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন বলে জানান মন্ত্রী। শেখ হাসিনা মোদিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে উনি তা গ্রহণ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দিন-তারিখ ঠিক হবে। নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর রেকর্ড সংখ্যক সফরসঙ্গী নিয়ে যাওয়া, জাতিসংঘ কার্যক্রমে তাদের সম্পৃক্ততা এবং বিশাল ওই বহরের ব্যয় নিয়ে একাধিক প্রশ্ন আসে সংবাদ সম্মেলনে। মন্ত্রী জবাব এড়িয়ে যান। সচিবকে জবাব দেয়ার জন্য মাইক্রোফোন দিয়ে দেন। মূল অধিবেশনের সাইড লাইনে প্রায় ৫০টি ইভেন্ট হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, এসব ইভেন্টে সফরসঙ্গীরা অংশ নিয়েছেন। সফরসঙ্গীর মধ্যে সরকারি দল ও জোটের জেলা পর্যায়ের নেতা সুনির্দিষ্টভাবে কোন ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন, দেশের জন্য কি বয়ে এনেছেন অব্যাহতভাবে এমন প্রশ্ন আসার প্রেক্ষিতে ফের মাইক্রোফোন টেনে নেন মন্ত্রী। বলেন, এখানে কে গেছেন, কত খরচ হয়েছে তার চেয়ে বড় প্রশ্ন সার্বিকভাবে আমরা কি অর্জন করতে পেয়েছি? এ নিয়ে বেশি বেশি প্রশ্ন প্রত্যাশা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

No comments

Powered by Blogger.