ভারতে সরকারি কর্মীদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে

ভারতের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অবশ্যই প্রতিবছর তাঁদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করতে হবে। দেশটিতে গত ডিসেম্বরে কার্যকর হওয়া দুর্নীতিবিরোধী লোকপাল আইনের অধীনে এ তথ্য প্রকাশ করতে হবে বলে সরকারি এক আদেশে বলা হয়েছে। খবর এনডিটিভির। গতকাল বুধবার প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ওই আদেশের ফলে অফিস সহকারীরা (পিয়ন) ছাড়া সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদসম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রতিবছর জুলাইয়ের মধ্যে জমা দিতে হবে। তবে এ বছরের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। ভারতে সরকারি কর্মীর সংখ্যা প্রায় ২৩ লাখ। সম্পদের তথ্য প্রকাশের নতুন ফরমে কলামগুলোর একটি ‘মোটরযান, উড়োজাহাজ, প্রমোদতরি বা জাহাজ, স্বর্ণ ও রুপার অলংকার এবং এর বাঁট’ সম্পর্কে। যেসব সরকারি কর্মী বা তাঁদের পরিবারের সদস্য এ রকম সম্পদের মালিক হবেন, তাঁদের এ কলামটি পূরণ করতে হবে। ফরমে আরও যেসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে সেগুলোর মধ্যে আছে নগদ অর্থ, ব্যাংকে রাখা অর্থ, ঋণপত্র, ডিবেঞ্চার, শেয়ার মালিকানা ও কোম্পানি বা মিউচুয়াল ফান্ডের অংশীদারত্ব, বিমা পলিসি, প্রভিডেন্ট ফান্ড ও ব্যক্তিগত ঋণ ইত্যাদি। আদেশ অনুযায়ী সরকারি কর্মীরা এ তথ্য প্রকাশ করা থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন, যদি তাঁদের সম্পদের পরিমাণ চার মাসের মূল বেতন বা দুই লাখ রুপির বেশি না হয়। গত নির্বাচনে ভারতীয় জনতা দলের (বিজেপি)
বিপুল বিজয়ের পর দলটির নেতা ও গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মে মাসে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পরপরই তাঁর সরকার মন্ত্রীদের সম্পদের বিবরণী প্রকাশ করতে বলে। এ পদক্ষেপ ছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সাবেক সংযুক্ত প্রগতিশীল মোর্চা (ইউপিএ) সরকারের গৃহীত ব্যবস্থারই ধারাবাহিকতা মাত্র। মোদি সরকার নতুন মন্ত্রীদের তাঁদের সমুদয় সম্পদের বিস্তারিত তথ্য দুই মাসের মধ্যে দাখিল এবং সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক বা অন্যান্য স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও বলেছিল। মন্ত্রীদের জন্য আরোপিত কঠোর বিধিমালায় ন্যায়বিচারের সঙ্গে নিজেদের কাজ সম্পাদনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বা তাঁদের বিব্রত করে এমন উপহার, অন্যায্য সুবিধা বা ঋণ গ্রহণকেও এড়ানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে চার দশকের পুরোনো সরকারি চাকরিসংক্রান্ত বিধিমালায় ১৯টি নির্দেশনা সংযোজন করে মোদি সরকার। এগুলোতে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ হতে হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত হতে হবে যোগ্যতা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে এবং পক্ষপাতহীন। কর্মীদের কেবলই জনস্বার্থে কাজ করতেও বলা হয় এ বিধিমালায়।

No comments

Powered by Blogger.