থাইল্যান্ডে সিনেটও বিলুপ্ত, অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গতকাল অভ্যুত্থানবিরোধী
বিক্ষোভে বাধা দেন সেনাসদস্যরা। ছবি: রয়টার্স
থাইল্যান্ডে অভ্যুত্থান-পরবর্তী ধরপাকড় অব্যাহত রয়েছে৷ সেনাবাহিনী গতকাল শনিবার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেট বিলুপ্ত করেছে৷ সেনা কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রখ্যাত শিক্ষাবিদসহ আরও ৩৫ জনকে৷ এই অবস্থার মধ্যেও রাজধানী ব্যাংককে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে৷ এএফপি, রয়টার্স ও বিবিসির৷ থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার সেনা অভ্যুত্থান ঘটার পর শুক্রবার ইংলাকসহ শতাধিক রাজনীতিককে সমন করা হয়৷ ওই দিনই আটক করা হয় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে৷ তাঁকে কোথায় রাখা হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি৷ তাঁকে ব্যাংককের উত্তরে সারাবুরি প্রদেশের সেনা ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যম জানালেও তা নাকচ করে দিয়েছেন তাঁর একজন সহযোগী৷ নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে তিনি একটি নিরাপদ স্থানে রয়েছেন... তিনি কোনো সেনা-শিবিরে আটক নেই৷’ এর আগে শুক্রবার রাজনীতিকসহ ১৫৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সেনা কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেছিল সেনাবাহিনী৷
তাঁদের বেশির ভাগকে হাজিরা দেওয়ার পর আটক করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমগুলো ধারণা করছে৷ সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র জানান, শুক্রবার সেনা কার্যালয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ পাওয়া শতাধিক রাজনীতিকের মধ্যে যাঁরা এখনো হাজির হননি, তাঁদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ সেনা অভ্যুত্থান ঘটার পর ব্যাংককে প্রথমবারের মতো গতকাল বিক্ষিপ্তভাবে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে৷ অবশ্য, কোনো সংঘাতের খবর পাওয়া যায়নি৷ প্রথমে একটি সেনা স্থাপনার কাছে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করেন কিছু লোক৷ সেনারা আটকে দিলে একপর্যায়ে তাঁরা ব্যাংককের ঐতিহাসিক ভিক্টরি মনুমেন্টের দিকে রওনা হন৷ ৪৫ বছর বয়সী একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা রেড শার্ট (ইংলাকের সমর্থক গোষ্ঠীর সংগঠন) নই৷ আমরা কেবল গণতন্ত্র চাই৷ আমরা সেনাবাহিনীকে পছন্দ করি না৷’ আরেকজন বয়স্ক ব্যক্তির হাতে থাকা প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘বীর সেনারা, ব্যারাকে ফিরে যাও৷ আমরা ভোট চাই৷’ সেনাবাহিনীর একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, সেনাপ্রধান প্রাইউথ শান-ওশা অভ্যুত্থানের বিষয়ে অবগত করতে রাজা ভূমিবলকে চিঠি দিয়েছেন৷ অতীতেও বিভিন্ন সময় সেনা অভ্যুত্থানের পর রাজার আশীর্বাদ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে৷ যুক্তরাষ্ট্র থাইল্যান্ডকে বার্ষিক সাড়ে ১০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিয়ে থাকে৷ এর মধ্যে সাড়ে তিন মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে পররাষ্ট্র দপ্তর৷

No comments

Powered by Blogger.