এসব দেখি কানার হাটবাজার

বরিশালের রসুলপুর চরে চকবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠ দখল করে 'মার্কেট' নির্মাণের যে আয়োজন চলছে তা কতটা অবিমৃষ্যকারী, মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত সচিত্র প্রতিবেদনেই তা স্পষ্ট। দেখা যাচ্ছে, বিদ্যালয় ভবনের কয়েক ফুট সামনে চলছে তথাকথিত মার্কেটের দেয়াল নির্মাণের কাজ। এই অপতৎপরতা আমাদের যেমন বিস্মিত তেমনই ক্ষুব্ধ করেছে। আধুনিক সমাজেও এভাবে স্কুলমাঠ দখল চলতে পারে_ না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। এতে স্কুলের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার সুযোগই কেবল বন্ধ হয়ে যাবে না, বাজারের হট্টগোলে পড়াশোনার স্বাভাবিক পরিবেশও বিঘি্নত হতে বাধ্য। সমকালের প্রতিবেদনসূত্রে জানা যাচ্ছে, এই অপকর্মের নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় ভূমি দফতর সংশ্লিষ্ট কিছু ব্যক্তি এবং তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা। মাঠ দখলের যৌক্তিকতা হিসেবে তারা খাস জমি ইজারা নেওয়ার নথিপত্র প্রদর্শন করেছে। তারা যে কেবল লোভী দখলদার তা নয়, কাণ্ডজ্ঞানও খুইয়েছে দেখা যাচ্ছে। আমরা মনে করি, খাস জমি তো নয়ই, স্কুল সংলগ্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমিতেও এভাবে বাজার বসানোর নৈতিক অধিকার কারও নেই। স্থানীয় ভূমি অফিসও স্পষ্টতই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিদ্যালয় মাঠে বাজার বসানোর সম্পূর্ণ আয়োজন এক বিকট সামাজিক অপরাধ ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। আমরা চাই, কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। খাস জমিটি যদি বরাদ্দ হয়েও থাকে, যে কোনো মূল্যেই তা বাতিল করার বিকল্প নেই। কয়েক বছর আগে বিদ্যালয়টি যখন বর্তমান অবস্থানে স্থানান্তর হয়, তখন এর সঙ্গে ৩৩ শতাংশ ভূমি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তা কেন প্রতিপালিত হয়নি_ খতিয়ে দেখতে হবে সেটাও। যত দ্রুত সম্ভব মাঠের জায়গাটি স্কুলের নামে বরাদ্দ দিয়ে বিলম্বে হলেও সেই ভুল শোধরানো হবে বলে প্রত্যাশা। একই সঙ্গে বাজারটি বসানোর সঙ্গে যারা জড়িত_ ভূমি অফিসের উচ্ছিষ্টভোগী বা স্থানীয় প্রভাবশালী, তাদের একত্র হওয়ার পেছনে কী পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়েছে, তা উদ্ঘাটন করা জরুরি। জরুরি অবিমৃষ্যকারিতার দণ্ডও। অন্যথায় এ ধরনের অঘটন আরও দেখার আশঙ্কা রয়েই যাবে।

No comments

Powered by Blogger.